Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনে যে ১১২ কম্পানি কাজ করছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:৪৪ পিএম

ইসরাইল অধিৃকত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইহুদি বসতি স্থাপনে জড়িত ১১২টি কম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও ইসরায়েল এটাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের ভয়, এই তালিকা ‘কম্পানি বয়কটে’ ব্যবহার করা হতে পারে। জাতিসংঘ বলছে, এই তালিকা কোনো বিচারিক বা আধাবিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ নয়।
তালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি জায়ান্ট কম্পানি মটরোলা, ট্রাভেল কম্পানি এক্সপেডিয়া ও ট্রিপ অ্যাডভাইজার, পর্যটনবিষয়ক হোম শেয়ারিং কম্পানি এয়ারবিএনবি এবং ফুডমেকার জেনারেল মিলের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১১২টি কম্পানির মধ্যে বেশির ভাগই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের। এতে নির্মাণ ও অবকাঠামো কম্পানি ফ্যান্সের ইগিস রেইল ও ব্রিটিশ কম্পানি জেসি ব্যামফোর্ড এক্সকাভেটরও রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত বুধবার এক বিবৃতিতে এই ১২টি দেশের তালিকা প্রকাশ। এতে বলা হয়, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের সঙ্গে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জড়িত থাকার যুক্তসংগত ভিত্তি খুঁজে পাওয়া গেছে। কম্পানিগুলোর মধ্য ৯৪টি ইসরায়েলের এবং ১৮টি যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ, থাইল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের। এতে আরো বলা হয়, বসতি নির্মাণে এসব কম্পানির তৎপরতা মানবাধিকার লঙ্ঘনে সুনির্দিষ্ট উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে মানবাধিকারবিষয়ক জাতিসংঘ হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেট বলেন, ‘আমি সতর্ক আছি যে এই ইস্যু মারাত্মক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।’ তিনি তবে অনুসন্ধানগুলোর ফলাফল একটি ‘বিস্তৃত ও সূক্ষ্ম পর্যালোচনা’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পাওয়া গেছে। এই রিপোর্টে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার প্রতিফলন ঘটেছে, যাতে ও নজিরবিহীন এবং অত্যন্ত জটিল ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।’
বিবৃতিতে এই তালিকা কোনো বিচারিক প্রক্রিয়ার অংশ নয় উল্লেখ করে বলা হয়, এই প্রতিবেদন কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা তুলে ধরছে না। বরং মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে তা করা হয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ২০১৬ সালের একটি প্রস্তাবের (রেজল্যুশন) প্রতিপালন করতে গিয়ে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রস্তাবে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনে জড়িত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর ডাটাবেইস তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
তালিকা প্রকাশের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে প্রতিশোধের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যারাই আমাদের বয়কট করবে, তারাই বয়কটের শিকার হবে। আমরা তীব্রভাবে এই ঘৃণ্য চেষ্টা প্রত্যাখ্যান করছি।’ ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাত্জ বলেন, ‘এটা হচ্ছে ইসরায়েলের ক্ষতি চায় এমন সংগঠন ও দেশগুলোর প্রতি লজ্জাজনক আত্মসমর্পণ।’
তবে এ ব্যাপারে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটা আন্তর্জাতিক আইনের বিজয়। তিনি জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলো এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলকে এসব কম্পানির বিষয়ে সুপারিশ ও নির্দেশনা প্রদানের আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনিদের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতেয়াহ কম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি অ্যাডভোকেসি প্রধান ব্রুনো স্তাগনো এই তাালিকা প্রকাশকে স্বাগত জানিয়েছেন। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ