পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধর্মীয় বিভিন্ন মেরুকরণের মোড়কে কট্টর হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে মানুষের মন জয়ের চেষ্টা অব্যহত রেখেছে বিজেপি। এর জেরে আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) ধাক্কা শেষ না হতেই এবার সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদরাসাগুলো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যটির শাসক দল বিজেপি। বুধবার এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানিয়েছেন আসামের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
জনগণের অর্থে কোনও ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হবে না বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে আসামের অতি প্রভাবশালী এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই সব সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদরাসা বন্ধ করে দিয়ে সেগুলিকে হাইস্কুলে পরিণত করা হবে। কেউ যদি ব্যক্তিগত অর্থ খরচ করে ধর্মীয় শিক্ষা দিতে চান, তাহলে বলার কিছু নেই। কিন্তু সরকারি অর্থে সেটা চলতে পারে না। যদি আরবি শিক্ষা দিতে হয়, তাহলে গীতা বা বাইবেল শিক্ষারও ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।’ তিনি জানান, মাদরাসা বা টোলগুলিতে যারা ধর্মশিক্ষা দেন, তাদের যতদিন চাকরী বাকি আছে, ততদিনই মাসে মাসে বেতন পেয়ে যাবেন, আর যারা অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষক রয়েছেন, তাদের স্কুলে পড়াতে হবে। এই সিদ্ধান্ত কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে নেয়া হয় নি বলে দাবি করেছেন তিনি বলেন, ‘শুধু মাদরাসা নয়, সংস্কৃত টোলও তো বন্ধ করা হচ্ছে!’
তার এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আসাম সংখ্যালঘু ছাত্র ইউনিয়ন বা আমসুর প্রধান রেজাউল করিম সরকার বলেন, ‘তিনি মুখে যতই বলুন না কেন যে কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নি, তবে বিশ্বশর্মার টার্গেট হচ্ছে মুসলমানরা।’ তিনি বলেন, ‘আসামে কীভাবে মুসলমানদের কোণঠাসা করে দেয়া যায়, সেই কাজই তিনি করে চলেছেন একের পর এক। এনআরসি’র পরে মাদরাসা বন্ধের সিদ্ধান্তই তার প্রমাণ। তিনি আরও বলেন, ‘টোল বা মাদরাসাগুলি বন্ধ না করে সেগুলিকে উন্নত করার কথা কেন ভাবা হল না? যে ধর্মীয় শিক্ষা তো টোল বা মাদরাসাতে দেয়া হয়, তা তো আসলে সুস্থ সমাজ গড়ার জন্য, যেখানে কোনও হিংসা বা বিদ্বেষ থাকবে না। সেগুলো বন্ধ করে দিয়ে সরকার চাইছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা বিদ্বেষ ছড়াক আর তা থেকে আগামী বছরের নির্বাচনে ধর্মীয় মেরুকরণ হোক।’
আসামে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল ১৭৮০ সালে। সেখানে এখন ৬১৪টি স্বীকৃত মাদরাসা রয়েছে, যেগুলি পরিচালনা করে রাজ্য মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। অন্যদিকে, সংস্কৃত টোল বা বিদ্যালয় রয়েছে এক হাজারেরও বেশি, কিন্তু সরকারি সাহায্য পায় মাত্র ৯৭টি টোল। সেগুলিতেও ছাত্র সংখ্যা হাতে গোনা, কারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সংস্কৃত পড়ার আগ্রহ খুবই কম।
আসামের রাজ্য মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে লেখা হয়েছে, আসামের মাদরাসা শিক্ষা আন্তর্জাতিক স্তরেও স্বীকৃতি পেয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতীক হিসাবে। এমনকি পাকিস্তানে মাদরাসাগুলিতে যেভাবে কট্টর ইসলামি শিক্ষা দেয়া হয়, তাদেরও আসামের মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শেখা উচিত। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড আরও লিখেছে, ২০০৯ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে শিক্ষার উঁচু মানের কারণে অ-মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা বড় সংখ্যায় মাদরাসায় পড়তে আসছে। সূত্র : বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।