ছেলেবেলার ঈদের স্মৃতি
এমাজউদ্দীন আহমদঅতীতের স্মৃতি সব সময় অত্যন্ত মধুর। হাজারো অনিশ্চয়তায় ভরা বর্তমানের জন্য অনেক সময় মনটা
শ্যামলকান্তি দাশ
কোথাও হুড়ুদ্দুম বাজ পড়ল।
শহর না মফস্সল বোঝা গেল না।
দরজার বাইরে ছিটকে পড়ল
মন্দ মেয়ের উপাখ্যান।
প্রকা- একটা আছাড় খেল মানুষ।
কাদা হয়ে গেল ঝড়ের রাত্রি, আর
তোমার ঢলঢলে চেক শার্ট!
এখন তোমার পরিপূর্ণতা দেখবার মতো।
বিদ্যুৎ ধাবিত সরু রাস্তায়
তুমি নেমে এলে।
ছটফট করতে করতে মরে যাচ্ছে দু’টো গাছ,
এই সময় তুমি চুপি চুপি
বাড়ি থেকে কাকে ডেকে নিয়ে গেলে,
অনেক অনেক রাস্তা, ঘরের ভেতর?
তোমার অধিকারে
জাঙ্গীর ফিরোজ
যেটুকু আকাশ ছিলো বুকে
তার সবটুকু জুড়ে লিখেছি তোমার নাম
যেটুকু বাতাস ধরে বুকে
তার সবটুকু জুড়ে নিয়েছি তোমার ঘ্রাণ
যা কিছু দেখেছে দুই চোখ
তার তিনভাগ জুড়ে মুগ্ধ তোমার ছবি
যা কিছু শ্রবণ করি
তার সবটুকু মুছে ফেলে
তোমার মধুর স্বর কানে শুধু বাজে
যা কিছু ভাবতে চাই
তার সবটুকু অধিকার করে না তুমি
তোমার আকাশে আর কারো নাম লেখা থাকে যদি
তবে আমি বৈশাখের মেঘ
তোমার আকাশ যদি হু হু নীল হয়-
শরতের মেঘমালা আমি
যেটুকু আকাশ ছিলো বুকে
তার সবটুকু অধিকার ক’রে নিলে তুমি
তোমার আকাশটুকু একবার দেখা যেতো যদি
যুবক
শাশ্বত হাসান
খোঁচা খোঁচা দাড়ি সরল বিস্তৃত অরণ্যের মতোন এক অহঙ্কারী যুবক ফুলের সুঘ্রাণ আমোদিত। মাধবী প্রজাপতির তুলতুলে ¯িœগ্ধতাও আছে
কৈশোরের উদ্দামতা থৈ থৈ
দ্বারে এসেছে যুবক।
তরুণ্যের উচ্ছ্বাসে তার চোখের কার্নিশ
ঝলঝল করে হাসছে চোখে কোনো বিস্ময় নেই।
আর কতদিন হানকিতে ভাত খাব?
তরল অমৃত বসন্ত বৈকাল কি আর বিকশিত হবে না
সবুজ বনানীর মতোন। পেটপুরে খেতে চায় যুবক এখন
বাবা-মা কিশোরী বোন ঘরে...।
হাওয়ায় উড়ছে যুবকের মেধাবী শার্ট।
সান্ত¡না
অলেক বন্দ্যোপাধ্যায়
যা আসে আসুক
যতক্ষণ তুমি আছ, এটি দিন
এবং যদি আমাকে বেরিয়ে পড়তে হয় পৃথিবীতে
যেখানে তুমি আছ সেটি-ই আমার ঘর
আমি দেখি তোমার প্রিয় মুখটি, ভবিষ্যতের ছায়া নয়
তোমার প্রিয় হাত দিয়ে আমার দুচোখ ঢেকে দাও
কারণ আমার যাবতীয় যন্ত্রণা তোমার হাতের আশ্রয়ে বিশ্রাম নেয়
এবং যে সমস্ত কষ্ট, ঢেউ-এর গায়ে ঢেউ-এর দোলায়
ক্রমশ শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে
আর যেমন শেষ তরঙ্গটি বেপথু হাওয়ায় ওঠে কেঁপে
তুমি ভরিয়ে দাও আমার সমস্ত হৃদয়।
পরিচয়
সায়ীদ আবুবকর
আমার কোথাও যাওয়ার নেই। আমি এইখানে পড়ে আছি
বট-পাকুড়ের নিচে, হিজলছায়ায়, বঙ্গ-উপসাগরের পাড়ে
কত কাল মহাকাল। নুহের নগর থেকে আমি আসিয়াছি;
আমার শরীরে হ্যামের শোণিতধারা। আমার অস্থিতে-হাড়ে
তাঁর পুত্র হিন্দের উজ্জ্বল উপস্থিতি, যাঁহার ঔরসে ছিল বঙ।
পিতা বঙ থেকে আমি এই বঙ্গে, বয়ে যাই তাঁরই উত্তরাধিকার।
আমার কোথাও যাওয়ার নেই। পাখি আর আকাশের নানা রঙ
দেখে দেখে আমার দিবস কাটে। কিভাবে হরিণ বাঘের শিকার
হয় বনেÑ আমি তাও দেখি। কখনো আনন্দে হাসি, কখনো বা
কষ্টে শ্রাবণের মতো আমি কাঁদি। জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতে
তাজিং ডনের মতো থাকি আমি অবিচলÑ যেন জন্ম বোবা;
হঠাৎ দু’ঠোঁটে ফোটে খই, একতারা বেজে ওঠে বাউল এর হাতে।
কোথাও আমার যাওয়ার নেই। আমি এইখানে পড়ে আছি
বঙ্গ-উপসাগরের পাড়ে, সভ্যতার প্রায় সমান বয়সী,
প্রথম মানুষ এ দ্বীপের; নুহের নগর থেকে আমি আসিয়াছি।
সকালের সূর্য আমার কুশল পুছে, জানায় শুভেচ্ছা আমাকে রাতের শশী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।