পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকাল প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভিকে সেনাপ্রধান হিসাবে ‘বারবার তার শপথ’ লঙ্ঘনের জন্য অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার বিরুদ্ধে ‘অবিলম্বে তদন্ত শুরু করতে’ বলেছেন।
গত ১৪ ফেব্রæয়ারির একটি চিঠিতে ইমরান চারটি উপায় তালিকাভুক্ত করেছেন যেখানে সাবেক সেনাপ্রধান সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন, পাশাপাশি জেনারেল বাজওয়ার কথিত মন্তব্যের উল্লেখ করেছেন - জাভেদ চৌধুরীর একটি কলামে ৯ ফেব্রæয়ারি প্রকাশিত - তার দাবির প্রমাণ হিসাবে। পিটিআই নেতা শিরীন মাজারিও তার টুইটার অ্যাকাউন্টে উল্লিখিত চিঠির ছবি শেয়ার করে তার দলের প্রধানের পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন।
চৌধুরীর কলামের উদ্ধৃতি দিয়ে ইমরান লিখেছেন যে, জেনারেল বাজওয়া ‘সাংবাদিক জাভেদ চৌধুরীর কাছে স্বীকার করেছেন যে, ‘আমরা’ ইমরান খানকে [দেশের জন্য] বিপজ্জনক বলে মনে করি, যদি তিনি ক্ষমতায় থাকেন’।
তিনি যোগ করেছেন যে, জেনারেল বাজওয়া কাকে ‘আমরা’ বলে উল্লেখ করেছেন তার কাছ থেকে ‘নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ’ হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘(জেনারেল বাজওয়া) একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী (ইমরান) ক্ষমতায় থাকলে ‘দেশের জন্য বিপদ’ বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাকে কে দিয়েছে’?
পিটিআই প্রধান দৃঢ়তার সাথে বলেছেন: ‘শুধুমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণই সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে, তারা কাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করতে চায়। নিজের ওপর এমন অধিকার নেয়া সংবিধানের তৃতীয় তফসিল অনুচ্ছেদ ২৪৪-এ দেয়া তার শপথের স্পষ্ট লঙ্ঘন’।
ইমরান তারপরে জেনারেল বাজওয়ার কথিত স্বীকারোক্তি তালিকাভুক্ত করেন যে, তিনি ‘শওকত তারিনের বিরুদ্ধে এনএবি (ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো) মামলা খারিজ করতে সক্ষম হয়েছেন’।
তিনি দাবি করেন যে, এনএবি সাবেক সেনাপ্রধানের ‘নিয়ন্ত্রণ’-এর অধীনে ছিল, যা ‘আবারও সাংবিধানিক শপথের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন কারণ সেনাবাহিনী নিজেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বিভাগ এবং বেসামরিক সরকারি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাগুলো (এনএবি) করে না।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী এরপর সাংবাদিক আফতাব ইকবালের তৈরি একটি ইউটিউব বøগের উল্লেখ করেন। তিনি ইকবালের মতে বলেছেন, ‘জেনারেল বাজওয়া তাকে (ইকবাল) কথোপকথনে বলেছিলেন যে, তার সাথে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কথোপকথনের টেপ রয়েছে’।
পিটিআই চেয়ারম্যান এটিকে সাবেক সেনাপ্রধানের শপথের পাশাপাশি তার নিজের মৌলিক মানবাধিকারের একটি ‘গুরুতর লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন। ‘প্রশ্ন হল কেন এবং কোন অনুমোদনের অধীনে জেনারেল বাজওয়া গোপন কথোপকথন রেকর্ড করছিলেন’? -তিনি জিজ্ঞাসা করেন।
সবশেষে, ইমরান গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে তার রাশিয়া সফরের কথা উল্লেখ করেন, যেটিকে ‘বিতর্কিত’ করা হয়েছিল কারণ এটি রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের সময় নির্ধারিত হয়েছিল।
তিনি বলেন যে, জেনারেল বাজওয়া আবারও ‘তার শপথের গুরুতর লঙ্ঘন’ করেছেন যখন তিনি ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য তৎকালীন সরকারের নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে গিয়েছিলেন’।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ‘তিনি (জেনারেল বাজওয়া) ২০২২ সালের ২ এপ্রিল ইসলামাবাদে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এটি করেছিলেন - ইসলামাবাদ নিরাপত্তা সম্মেলন’।
ইমরান জোর দিয়ে বলেন, ‘সরকারি নীতিটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অবসরপ্রাপ্ত ক‚টনীতিকদেরসহ সকল স্টেকহোল্ডারদের মতৈক্যের বিকাশের পরে এসেছে, যাদের প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা ছিল এবং এলাকা বিশেষজ্ঞ ছিলেন’।
সংবিধানের দ্বিতীয় অধ্যায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে, যা ‘সশস্ত্র বাহিনীর ম্যান্ডেট বর্ণনা করে এবং বিশেষভাবে অনুচ্ছেদ ২৪৩ এবং ২৪৪ উল্লেখ করে’, ইমরান আলভিকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, এটি তার ‘প্রেসিডেন্ট হিসাবে এবং সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার হিসাবে অবিলম্বে সাংবিধানিক দায়িত্ব ছিল’ ব্যবস্থা নিন এবং একটি তদন্ত ইনস্টিটিউট করুন।’
তিনি দাবি করেন যে, ‘সংবিধানের এ ধরনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং সংবিধানের অধীনে পদের শপথ সঙ্ঘটিত হয়েছে কিনা’ তা নিশ্চিত করার জন্য একটি তদন্ত শুরু করা হোক।
ইমরান এবং জেনারেল বাজওয়ার মধ্যে দীর্ঘকালের দ্ব›েদ্বর সর্বশেষ হিসাবে এ ঘটনাটি এসেছে, যিনি একবার দাবি করেছিলেন যে. তারা ‘একই পৃষ্ঠায়’ ছিলেন। গত বছরের এপ্রিলে পিটিআই সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধানের সম্পর্কের ফাটল সামনে আসে।
ইমরান ভয়েস অফ আমেরিকা উর্দুতে একটি সাক্ষাৎকারে জেনারেল বাজওয়ার বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ সামরিক তদন্তের দাবিও তুলেছিলেন, যা ১০ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত হয়েছিল।
নভেম্বরে সেনাপ্রধান হিসাবে তার শেষ জনসাধারণের ভাষণে জেনারেল বাজওয়া স্বীকার করেছিলেন যে, সাত দশক ধরে সেনাবাহিনী ‘রাজনীতিতে অসাংবিধানিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছে’। তিনি বলেন যে, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপ ২০২১ সালের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল যার পরে সামরিক বাহিনী এ বিষয়ে পুক্সক্ষানুপুক্সক্ষভাবে আলোচনা করে এবং রাজনীতি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। সূত্র : ডন অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।