Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

৪২ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে সউদীর তাগিদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৩:৩১ পিএম

সউদী আরবে অবৈধভাবে অবস্থান করা প্রায় ৪২ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে একটি তালিকা দিয়েছে দেশটির সরকার। সউদী কর্তৃপক্ষের দাবি এই পরিমাণ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করে সউদী আরবে গেছে এবং বর্তমানে সেখানে অবৈধভাবে অবস্থান করছে। এ কারণে তাদের ফেরত পাঠাতে চায় সউদী আরব। তবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক না হওয়ায় তাদের ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি সরকার।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আগে সউদী সরকার ২০০, ৩০০ বা ৫০০ রোহিঙ্গার তালিকা দিতো ফেরত নেওয়ার জন্য এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে তাদেরকে ফেরত নিয়ে আসা হতো। কিন্তু গত বছরের শেষ দিকে তারা আমাদেরকে ৪২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা দেয়।’
এত লম্বা তালিকা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা এবং বর্তমান নীতির কারণে এখন কম সংখ্যক বিদেশিকে সউদী আরবে গ্রহণ করতে চাইছে। সেজন্য তারা এই তালিকা বানিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, শুধু তাই নয়, দেশটিতে অবস্থানরত আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকেও সউদী সরকার ফেরত পাঠাতে চায়। এই তালিকা সেটির প্রথম ধাপ। আমরা এখন তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ রাখছি।
মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা জানান, ‘২০০৭ সালে অবৈধ রোহিঙ্গাদের বিষয়টি প্রথম উত্থাপন করে সউদী কর্তৃপক্ষ। এরপর বিভিন্ন সময়ে তারা বিভিন্ন রকম তালিকা দিয়েছে আমাদের।’
এসব রোহিঙ্গাদকে ফেরত পাঠানোর জন্য মিয়ানমারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল সউদী সরকার কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি তাদের নিতে অস্বীকার করেছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, আগামী ১২ই ফেব্রæয়ারি বুধবার থেকে ঢাকায় দুই দেশের যৌথ কমিশনের দু’দিনব্যাপী বৈঠকে সউদী আরবের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে আলোচনায় আনা হতে পারে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অন্য কোনো দেশ যদি তাদের দেশে থাকা রোহিঙ্গাদের কাউকে ফেরত পাঠাতে চায়, তাহলে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো উচিত বলে তিনি মনে করেন। অবশ্য একইসাথে মোমেন বলেছেন, এ নিয়ে সউদী সরকার বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।
তবে কূটনৈতিক সুত্রগুলো বলছে, সউদী সরকার বাংলাদেশের পার্সপোর্টধারী ৪২ হাজার রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করে তাদের ফেরত নেয়ার তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশকে চিঠিও দিয়েছে। এমন তাগিদ দেয়ার ক্ষেত্রে সউদী সরকার এই রোহিঙ্গাদের ‘বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহারের বিষয়টি’ উল্লেখ করেছে বলে সূত্রগুলো জানাচ্ছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৯০-এর দশকের শেষে তিন লাখের মতো রোহিঙ্গা সউদী আরবে গিয়েছিল। তাদের একটি বড় অংশকে সউদী সরকার শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।
কিন্তু ২০১৪ সালে এবং তার পরে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে যে রোহিঙ্গারা সেখানে গেছে এবং সেখানে কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অনিয়মিত হয়ে পড়েছে, তাদের নিয়েই তোলা হয়েছে প্রশ্ন । সউদী আরব থেকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ বলছিলেন, দুই দেশের যৌথ কমিশনের বৈঠকে সউদী আরব যদি বিষয়টা উত্থাপন করে, তখনই বিস্তারিত জেনে বাংলাদেশ তাদের অবস্থান তুলে ধরবে।
কূটনেতিক অন্য সূত্রগুলো বলছে, সউদী আরবের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় ভাল অবস্থায় রয়েছে এবং বাংলাদেশ তা ধরে রাখতে চাইছে।
তা ছাড়া সউদী আরবে এখন ২০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। এই দু’টো বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সউদী আরবের সাথে কঠোর কোনো অবস্থান নিতে চাইছে না।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করেন শিউলী শর্মা। তিনি বলছিলেন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক বলেই তারা মনে করেন। “রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিতে না পারে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর হওয়া উচিত।” সূত্র-বিবিসি।



 

Show all comments
  • jack ali ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:১১ পিএম says : 0
    Muslim is like a one body----Saudi Arabia must not sent Rohyinga muslim rather they should give them citizenship.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ