নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
পাকিস্তানে যখন রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে লজ্জার ইনিংস হারের ক্ষণ গুণছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল, ঠিক তখনই সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে ইতিহাস গড়লেন তাদেরই অনুজরা। ভারতকে হারিয়ে বিশ্বসেরার মুকুট পড়েছে টাইগার যুবারা। মিশ্র এক অনুভ‚তি হচ্ছে মুমিনুলদের। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট হেরেছেন ইনিংস ও ৪৪ রানে। বাজেভাবে টেস্ট হারের কষ্টের মধ্যে তাঁদের আবার অভিনন্দনবার্তা জানাচ্ছে পাকিস্তানিরা। পরশু ভারতকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপ জিতেছে বাংলাদেশ। কাষ্ঠ হাসিতে মুমিনুলদের পাকিস্তানিদের বলতে হচ্ছে ‘ধন্যবাদ’।
অনেকটা অনুমিতই ছিল। দেখার ছিল আগের দিনের শেষ বেলার নাটকীয় ধসে যে শঙ্কা জেগেছিল, সেটিই সত্যিই হলো। রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন সকালে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংস টিকেছে দেড় ঘণ্টারও কম সময়। গতকালের ইনিংস ও ৪৪ রানের এই জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রান করা সফরকারীরা দ্বিতীয় ইনিংসে থেমেছে ১৬৮ রানে। একমাত্র ইনিংসে পাকিস্তান করে ৪৪৫ রান।
ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে যার ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করেছিল বাংলাদেশ, তিনিই ফিরেছেন সবার আগে। সোমবার ৬ উইকেটে ১২৬ রানে দিন শুরু করা সফরকারীরা প্রথম ওভারেই হারায় মুমিনুল হককে। শাহিন শাহ আফ্রিদির স্টাম্পের বল ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে রিভিউ নেন। তৃতীয় আম্পায়ার অনেকবার দেখেও নিশ্চিত হতে পারেননি ব্যাট ছুঁয়েছে কি না। টিকে যায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
রিভিউ নিয়ে একবার বেঁচে যাওয়া রুবেল হোসেন ফিরেন এলবিডবিøউ হয়ে। দ্রæত রান তোলার চেষ্টায় থাকা লিটন দাসকে এলবিডব্লিউ করে থামান ইয়াসির শাহ। এটি ছিল পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলির ইনিংসে দ্বিতীয় ও ম্যাচে পঞ্চম সফল রিভিউ। পরে আবু জায়েদকে ফিরিয়ে দেন ইয়াসির। দেশের বাইরে বাংলাদেশ টানা পাঁচ টেস্ট হারল ইনিংস ব্যবধানে।
২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার নাসিম শাহ। সবচেয়ে কম বয়সে হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়া গতিময় এই পেসার জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ৫৮ রানে ৪ উইকেট নেন ইয়াসির। আগামী এপ্রিলে করাচিতে হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
বাংলাদেশ এক বছর টানা হেরে চলেছে টেস্ট। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের পর ক্রিকেটের বড় সংস্করণে কীভাবে ভালো করতে হয়, সেটিই যেন ভুলে গেছে তারা। গত বছর টানা পাঁচ টেস্টে হার, এ বছরও শুরু হলো হার দিয়ে- সাদা পোশাকে মুমিনুলরা যেন হারতে হারতে হাঁপিয়েই উঠেছেন।
যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে আকবর আলীরা কী নখ কামড়ানো উত্তেজনার মধ্যে ম্যাচটা নিজেদের করে নিলেন, কীভাবে ধৈর্য দেখালেন, কীভাবে পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকতা দেখিয়ে বাংলাদেশ যুবারা শিরোপা জিতলেন- এ থেকে অনেক কিছু শেখার দেখছেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, ‘জুনিয়র, সিনিয়র দল নয়, সব জায়গা থেকেই শিখতে পারেন। তারা আমাদের এটা বুঝিয়েছে, কীভাবে বড় সাফল্য পেতে হয়।’
আকবররা শিরোপা জিতে পুরো বাংলাদেশকে আনন্দে ভাসিয়েছেন। দেশের ক্রীড়া ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য এনে দিয়েছেন। এই সাফল্যের পর তাঁদের অভীষ্ট লক্ষ্যই এখন জাতীয় দলে খেলা। বাংলাদেশ দলে আসার আগেই যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাংলাদেশ অন‚র্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা, তাতে ভীষণ আশাবাদী হয়ে উঠছেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল, ‘যারা এই দলে খেলেছে, তারা সাফল্য পেতে ভীষণক্ষুধার্ত ছিল। দুই বছর ধরে দলের সবাই একসঙ্গে ছিল। একজন আরেকজনকে জানা, ভালো যোগাযোগ, একে অপরের ওপর আস্থা রাখা, কাল যেভাবে একজন আরেকজনকে উৎসাহ দিচ্ছিল, প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিল, এসব ভালো ভালো দিক ছিল। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় অর্জন। এটির চেয়ে বড় অর্জন এই মুহ‚র্তে হতে পারে না। ওদের অভিনন্দন জানাতেই হয়। আশা করি এই বিশ্বকাপে খেলা ছয়-সাতজন খেলোয়াড় পাব আমরা, যারা বাংলাদেশ দলকে এগিয়ে নেবে ভবিষ্যতে।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ২৩৩
পাকিস্তান ১ম ইনিংস : ১২২.৫ ওভারে ৪৪৫
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : (আগের দিন ১২৬/৬) ৬২.২ ওভারে ১৬৮ (মুমিনুল ৪১, লিটন ২৯, রুবেল ৫, আবু জায়েদ ৩, ইবাদত ০*; আফ্রিদি ১৬-৬-৩৯-১, আব্বাস ১৭.৪-৬-৩৩-১, নাসিম ৮.২-২-২৬-৪, ইয়াসির ১৭.২-৩-৫৮-৪, শফিক ৩-০-১২-০)।
ফল : পাকিস্তান ইনিংস ও ৪৪ রানে জয়ী।
সিরিজ : ২ ম্যাচে ১-০তে এগিয়ে পাকিস্তান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।