পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
আগামী মার্চ মাসের শুরুর দিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে একটি গোপন বৈঠকে বসানোর চেষ্টা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ লক্ষ্যে দেশটি মিশরের রাজধানী কায়রোয় একটি সম্মেলন আয়োজনের চেষ্টা করছে। আর ওই সম্মেলনের ফাঁকেই নেতানিয়াহু ও বিন সালমানের কথিত ঐতিহাসিক বৈঠকের পাঁয়তারা চলছে। ‘ইসরাইল হায়োম’-এ প্রকাশিত এক সংবাদের বরাত দিয়ে গত শুক্রবার এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট আই ও জেরুজালেম পোস্ট। তাতে বলা হয়, আরব ক‚টনীতিকরা ইসরাইল হায়োমকে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও’র মধ্যস্থতায় বছরব্যাপী প্রচেষ্টায় ইসরাইল ও সউদী আরবের মধ্যে ‘নিবিড় আলোচনা’ চলছে। দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে সরকার গঠন নিয়ে বিপাকে রয়েছেন নেতানিয়াহু। এর মধ্যেই দেশটিতে আগামী ৩ মার্চ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই আরবদের সঙ্গে মিশর সম্মেলনে নামে নিজের সাফল্যের জানান দিয়ে ভোটে সুবিধা নিতে চাইছেন নেতানিয়াহু। এককভাবে কোনো জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ইসরাইলে সরকার গঠন আটকে আছে। এ কারণে এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ফের তৃতীয় নির্বাচন দিতে হচ্ছে নেতানিয়াহু সরকারকে। অতীত দেখা গেছে, নির্বাচনের সময় ভোটারদের টানতে হয় ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা, নয়তো ইরান বা হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনো ইস্যু তৈরি করেছেন তিনি। ক‚টনীতিকরা বলছেন, এ সম্মেলনে সউদী ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুদান, বাহরাইন ও ওমানের অংশ নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।এ ছাড়া জর্ডান ও ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকেও সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনি শহর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দেয়ার পর দেশটির দখলদারিত্বকে বৈধতা দিতে সম্প্রতি ‘শতাব্দীর সেরা চুক্তি’ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনার নামে এ প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিন, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও আরব লীগসহ কয়েকটি মুসলিম দেশ। খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও রিয়াদের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। সিনিয়র আরব ক‚টনীতিক বলেন, স¤প্রতি ওয়াশিংটন, ইসরাইল, মিসর ও সউদী আরবের মধ্যে কায়রোতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজনের জন্য জোরদার ক‚টনৈতিক আলোচনা চলছে। এই বৈঠক ইসরাইলের নির্বাচনের আগেও হতে পারে। এতে উপস্থিত থাকতে পারেন ইসরাইল, সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুদান, ওমান ও বাহরাইনের নেতারা। এর আগে খবরে জানা গিয়েছিল এই বৈঠক বাহরাইনের রাজধানী মানামাতে আয়োজন করা হতে পারে। কারণ এখানেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শতাব্দির সেরা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। ম‚লত নেতানিয়াহু ও সউদী যুবরাজকে একসঙ্গে বৈঠকে বসানোর জন্যই এই আয়োজন। এই বিষয়ে জানা গেছে যে, জর্ডানকে প্রস্তাবিত বৈঠকের আমন্ত্রণও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেশটির বাদশাহ আব্দুল্লাহকে আরব দেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয় যাতে করে ফিলিস্তিনকেও বৈঠকের আমন্ত্রণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে এবং জানায় এই বিষয়ে ফিলিস্তিনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ইসরাইলও ফিলিস্তিনিদের অংশগ্রহণের বিষয়ে সম্মতি জানায়। গত কয়েক বছর ধরে সউদী আরব ও উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ ইসরাইলের সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্ক বাড়িয়ে চলেছে। এতে করে ধারণা করা হচ্ছে ইহুদি রাষ্ট্রটির সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে মুসলিম আরব দেশগুলোর। আর ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখন্ডের লড়াই ক্রমশ গুরুত্ব হারাচ্ছে তাদের কাছে। জেরুজালেম পোস্ট, মিডল ইস্ট আই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।