Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণ শীর্ষ অগ্রাধিকার : নেতানিয়াহু সরকার

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২, ১০:১০ এএম

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকে অগ্রাধিকারের তালিকার শীর্ষে রেখেছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কট্টরপন্থি নতুন ইসরায়েলি সরকার। আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেওয়ার একদিন আগে তারা এই তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি বুধবার নতুন সরকারের নীতি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে প্রথমেই গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়াসহ ‘ইসরায়েলের ভূখণ্ডে সকল অংশে বসতি সম্প্রসারণ আরও এগিয়ে নেওয়া ও বিকাশের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মূলত গ্যালিলি, নেগেভ, গোলান হাইটস এবং জুডিয়া ও সামারিয়া অধিকৃত ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরের এলাকা এবং বাইবেলের নামানুসারে ইসরায়েল এসব ফিলিস্তিনি অঞ্চলকে এই নামেই ডেকে থাকে।
আল জাজিরা বলছে, এই ধরনের প্রতিশ্রুতি নতুন সরকারকে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে দেশটিকে সংঘর্ষের পথে ফেলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরায়েলের অনেক ঘনিষ্ঠ মিত্রই অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে বসতি নির্মাণের বিরোধিতা করে থাকে।
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে গাজা উপত্যকা এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর দখল করে নেয়। যদিও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরকে তাদের ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে চায়।
যাইহোক, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ হলেও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল কয়েক ডজন ইহুদি বসতি নির্মাণ করেছে এবং সেগুলো এখন প্রায় ৫ লাখ ইসরায়েলির আবাসস্থল।
অবশ্য আনুমানিক ২৫ লাখ ফিলিস্তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরে বাস করে এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের চলাচল ও গতিবিধি কঠোরভাবে সীমিত করে রেখেছে।
নেতানিয়াহুর নতুন সরকার ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে ধর্মীয় এবং কট্টরপন্থি অতি-অর্থোডক্স দল, অতি-ডান-আল্ট্রান্যাশনালিস্ট ধর্মীয় উপদল এবং তার লিকুদ পার্টি নিয়ে গঠিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এই সরকারের শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে ইসরায়েলে গত ১ নভেম্বরের নির্বাচনে জয় পান দেশটির সাবেক কট্টরপন্থি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। এবার ক্ষমতায় যেতে তিনি চরম কট্টরপন্থি এবং অবৈধ বসতি স্থাপনের পক্ষে থাকা দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। নেতানিয়াহুর জোটে থাকা উগ্রপন্থি এসব দলগুলোর মধ্যে রিলিজিয়াস জায়োনিজম নামে একটি দলও রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিরা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন, নেতানিয়াহুর অধীনে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে সম্ভবত আরও অবৈধ ইসরায়েলি বসতি গড়ে উঠবে। বুধবারের ঘোষণায় ফিলিস্তিনিদের সেই আশঙ্কায় সত্যি হলো।
এর আগে ২০২১ সাল পর্যন্ত নেতানিয়াহু একটানা ১২ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং ওই সময়কালে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি অবৈধ বসতির রেকর্ড সম্প্রসারণ হয়েছিল। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এই ধরনের ইসরায়েলি অবৈধ বসতি আন্তর্জাতিক আইনে বেআইনি বলে বিবেচিত হয় এবং সংকট সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অংশ হিসাবে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধক হিসাবে মনে করা হয়।
এছাড়া নেতনিয়াহুর জোটে থাকা রিলিজিয়াস জায়োনিজম নামক ওই উগ্রবাদী দলটি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণকে সমর্থন করে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে থাকে।
এদিকে বাইডেন প্রশাসন বলেছে, তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বসতি সম্প্রসারণের তীব্র বিরোধিতা করে এবং অতীতে এর জন্য ইসরায়েলি সরকারকে তিরস্কার করেছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নেতানিয়াহু সরকার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ