Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্নায়ু চাপ জিতে যুবাদের স্বপ্ন পূরণ

বিশ্বজয়ী আকবরের কৃতজ্ঞতা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

সুশান্ত শর্মার বলে বাউন্ডারি হাঁকালেন রকিবুল হাসান। বল বাউন্ডারির দিকে যেতে না যেতে উদযাপন শুরু করলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরে সামাল দিলেন নিজেকে। এগিয়ে এলেন অধিনায়ক আকবর আলী। মনে করিয়ে দিলেন, কাজ এখনও শেষ হয়নি। এমন পরিস্থিতি থেকে অনেকবারই ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। এবার তীরে এসে তরী ডোবেনি। স্নায়ু চাপ ধরে রেখে জিতে নিয়েছে যুব বিশ্বকাপ।
রকিবুল-আকবর যখন জয়স‚চক রানটি নিলেন তখন কার আগে কে যাবেন, বাংলাদেশ দল যেন সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। ক্র্যাম্পের কথা ভুলে পারভেজ হোসেনও দৌড়ালেন সতীর্থদের সঙ্গে। গ্যালারিতে তখন শুধু বাংলাদেশ! বাংলাদেশ! বাংলাদেশ! গর্জন। সারাটা দিন দলকে সমর্থন দিয়ে যাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশিরা তখন বিশ্ব জয়ের আনন্দে ভাসছেন।

গত অন‚র্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ১০৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১০১ রানে থমকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজে আড়াইশর বেশি রান করে ভারতের বিপক্ষে হেরেছিল তারা। গতকালের ফাইনালেও এক সময়ে হাত থেকে ছুটতে বসেছিল ম্যাচ। লেগ স্পিনার বরি বিষ্ণুইয়ের ছোবলে এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন আকবর।

বাংলাদেশ ইনিংসের ৪১তম ওভার শেষে বৃষ্টি নামলে কিছুক্ষণের জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ১৭৭ রান তাড়ায় সে সময় দলটির স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১৬৩। ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে তারা পায় ৪৬ ওভারে ১৭০ রানের নতুন লক্ষ্য। অর্থাৎ শেষ ৫ ওভারে ৭ রান। এই ধরনের বিরতিতে অনেকবার দিক হারিয়েছে বাংলাদেশ। এবার হারায়নি। বিচক্ষণ ক্যাপ্টেনের মতো হাল ধরেছিলেন আকবর। দেশকে প্রথম কোনো বৈশ্বিক শিরোপা জয়ের পর জানালেন, ‘স্বপ্ন প‚রণ হয়েছে। দুই বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফল পেয়েছে বাংলাদেশ।’

উইকেট পড়লে তো কথাই নেই, ভালো একটা ফিল্ডিংয়েও শোনা যাচ্ছিল হাততালি। ব্যাটিংয়ের সময় চার-ছক্কায় শোনা যাচ্ছিল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গর্জন। শেষের দিকে তো বল ডিফেন্স করলেও চিৎকার করে যাচ্ছিলেন সমর্থকরা। ম্যাচের বিভিন্ন পর্যায়ে ভারতীয় ফিল্ডারদের আচরণ দেখেও বোঝা গেছে, ম্যাচের সঙ্গে কতটা সম্পৃক্ত ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থকরা। নবম ওভারে তানজিদ হাসানের ক্যাচ মুঠোয় জমিয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে গ্যালারির দিকে তাকিয়েছিলেন কার্তিক তিয়াগি। ২১তম ওভারে সীমানায় শামীম হোসেনের ক্যাচ মুঠোয় নিয়ে একইভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান যাশাসবি জাসওয়াল। সে সময়ে খানিকটা চুপসেই গিয়েছিল বাংলাদেশের সমর্থকরা। আকবর ও পারভেজ হোসেনের জুটিতে দূর হয় তাদের উৎকণ্ঠা। দুই দলের সমর্থকদেরই শুরু থেকে ছিল সরব উপস্থিতি। পতাকা নিয়ে গ্যালারিতে মিছিল, শ্লোগান দেখা গেছে দিন জুড়েই। শিরোপা জেতার পর তাদের কথা মনে রেখেছেন আকবর আলী। বাংলাদেশ অন‚র্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক তাদের প্রতি জানিয়েছেন কৃতজ্ঞতা। শিরোপা জয়ী অধিনায়ক হিসেবে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে আকবর জানালেন নিজের প্রতিক্রিয়া। উপস্থাপক ইয়ান বিশপের অনুমতি নিয়ে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বাংলায় জানান কৃতজ্ঞতা, ‘এখানে যারা উপস্থিত হয়েছেন তারা আজকে (কাল) ছিলেন আমাদের দ্বাদশ খেলোয়াড়।’
দক্ষিণ আফ্রিকায় সবশেষ সফরে সিনিয়রদের দল হেরেছে সব ম্যাচ। সেখানে এবার যুবারা সমর্থকদের এনে দিলেন উৎসবে মেতে উঠার উপলক্ষ্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বজয়ী
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ