Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দুই পাকিস্তানিতেই পিষ্ট বাংলাদেশ!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

পাঁচ দিনের টেস্টের মাত্র গড়াল দুই দিন। অথচ এই দু’দিনের তারতম্য বিস্তর। গতকাল রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার শান মাসুদের ১০০ রান ও বাবর আজমের অপরাজিত ১৪৩ রানে ভর করে ৩ উইকেটে ৩৪২ রানে শেষ করেছে পাকিস্তান। উইকেট পতণ ও রান সংখ্যা বিবেচনা করলে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে পিচটি ছিল নিখাদ ব্যাটিং উপযোগী। অথচ বিরীত মেরুতে বাংলাদেশের ইনিংস। দু’দিন আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৮২.৫ ওভারে ২৩৩ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল মুমিনুল হকের দল। গতকাল দ্বিতীয় দিন শেষে পাকিস্তান লিড নিয়েছে ১০৯ রানে। সফরকারিদের রানে চাপা দিতে ক্রিজে আছেন সেঞ্চুরিয়ান বাবর ও ৬০ রানে অপরাজিত আসাদ শফিক। আজ তৃতীয় দিনে এই দুই ব্যাটসম্যান লিড বাড়াতে মাঠে নামবেন।

বাংলাদেশ ২৩৩ রানে অলআউট হতেই প্রথম দিনের খেলা শেষ হয়। গতকাল নতুন সকালে মাঠে নামেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার শান মাসুদ ও আবিদ আলী। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পাওয়ার উচ্ছ¡াসে ভাসে বাংলাদেশ। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করা আবিদকে ফেরান আবু জায়েদ। তার স্টাম্পের অনেক বাইরের বল খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটকিপার লিটন দাসের গøাভসে, রানের খাতা না খুলেই। ধাক্কাটা কাটিয়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনি পাকিস্তানের। ওপেনার মাসুদের সঙ্গে অধিনায়ক আজহার আলী ৯১ রানের জুটি গড়েন। অবশ্য এই শক্ত জুটিও ভেঙেছে জায়েদের বলে। বাংলাদেশি পেসারের আউট সুইং ডেলিভারি আজহারের ব্যাটের কানায় লেগে সিøপে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেনের হাতে জায়গা করে নেয়। ৫৯ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৪ রানে থামেন পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন। প্রথম সেশনে ৯৫ রান দিয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ছিল ২ উইকেট।
অথচ প্রথম দিনে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়েও শুরুটা হয়েছিল এমনই হতাশার। দলীয় ৩ রানে ফিরে যান সাইফ হাসান। সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেয়া তো দূরের কথা। উল্টো আরও বিপদে ফেলে পরের ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পরে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তামিম ইকবাল। ঘরোয়া ক্রিকেটে সদ্যই ৩৩৪ রান করে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তামিমের ব্যর্থতা উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিল ঘরোয়া ক্রিকেটর মান নিয়ে।

লাঞ্চের পর আরেকটি উইকেট পেয়েই গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ইবাদত হোসেন ক্যাচ মিস করেন বাবর আজমের। তাইজুল ইসলামের বল ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মেরেছিলেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। হাওয়ায় ভাসতে থাকা বলে নজর রেখে মিড-অফ থেকে দৌড়ে ইবাদত দুই হাত বাড়িয়ে বল তালুতে নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহ‚র্তে আর ধরে রাখতে পারেননি। হাত গলে বল বেরিয়ে গেলে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় বাংলাদেশের।

২ রানে পাওয়া ‘নতুন জীবন’ কী চমৎকারভাবেই না কাজে লাগালেন বাবর। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ৭৯ বলে ফিফটির দেখা পান। সেটাকে তিন অঙ্কের ঘরেও নেন ১৩৪ বলে ১৫ বাউন্ডারিতে। টানা তৃতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি করেন বাবর, যেটা ক্যারিয়ারের পঞ্চম। এর আগে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় জীবন পান মাসুদও। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটকিপার লিটনের গøাভসে জমা হলেও কোনও আবেদন ওঠেনি! বোলার রুবেল হোসেন কিংবা লিটনের কেউই বুঝতে পারেননি ক্যাচ ছিল। আবেদন হলে কিংবা রিভিউ নিলে মাসুদের ইনিংস তো শেষ হয়ে যায় তখনই। বাংলাদেশের ভুলের সুযোগটা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানি ওপেনার তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। অবশ্য শতক প‚রণের পরপরই তাইজুলের শিকার হন। ১৬০ বলে ১০০ রানের ইনিংসটি সাজানো ১১ বাউন্ডারিতে। ভাঙে ১১২ রানের শক্ত জুটি।

মাসুদের আউটের এক ওভার পরই ৩ উইকেটে ২০৬ রানে দ্বিতীয় সেশন শেষ করে পাকিস্তান। শেষ সেশনে বাবরের সঙ্গে আসাদ শফিক দাঁড়িয়ে যান। ডানহাতি ব্যাটসম্যান ১০০ ছাড়ানো জুটি গড়ার পথে ২৭তম ফিফটি করেন ৮৩ বলে ৭টি চারে। আর ২০১৮ সালের নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১২৭ রানের ইনিংস পেছনে ফেলে ক্যারিয়ার সেরা স্কোর করেন বাবর। ১৯২ বলে ১৯ চার ও ১ ছয়ে ১৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি, আর ৬০ রানে টিকে আছেন আসাদ। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটিটি ১৩৭ রানের।

বাংলাদেশের হয়ে ধারাবাহিক বোলার আবু জায়েদ রাহীই যা একটু চাপে রাখতে পেরেছেন পাকিস্তানিদের। আর কোন বোলার চেপে ধরতে পারেনি স্বাগতিকদের। আজ দিনের শুরুতে রাহী-এবাদতের দিকেই তাকিয়ে আছে পুরো দল।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান, ১ম টেস্ট ২য় দিন
টস : পাকিস্তান, রাওয়ালপিন্ডি
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : (আগের দিন) ৮২.৫ ওভারে ২৩৩ (শান্ত ৪৪, মুমিনুল ৩০, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মিঠুন ৬৩, লিটন ৩৩, তাইজুল ২৪; শাহীন ৪/৫৩, আব্বাস ২/১৯, নাসিম ১/৬১, হারিস ২/১১।
পাকিস্তান ১ম ইনিংস    রান    বল    ৪    ৬
মাসুদ বোল্ড তাইজুল    ১০০    ১৬০    ১১    ০
আবিদ ক লিটন ব রাহী    ০    ৬    ০    ০
আজহার ক শান্ত ব রাহী    ৩৪    ৫৯    ৪    ০
বাবর ব্যাটিং    ১৪৩    ১৯২    ১৯    ১
আসাদ ব্যাটিং    ৬০    ১১১    ৮    ০
অতিরিক্ত (বা ১, লেবা ৩, নো ১)    ৫
মোট (৩ উইকেট, ৮৭.৫ ওভারে)    ৩৪২
উইকেট পতন : ১-২ (আবিদ), ২-৯৩ (আজহার), ৩-২০৫ (মাসুদ)।
বোলিং : এবাদত ১৪.৫-২-৭৮-০, রাহী ২০-২-৬৬-২, রুবেল ১৭-৩-৭৭-০, তাইজুল ৩৪-৫-১১১-১, মাহমুদউল্লাহ ২-০-৬-০।
*দ্বিতীয় দিন শেষে



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ