পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শীত মৌসুম প্রায় শেষের পথে হলেও বিকেলে শুরু হয় হালকা কুয়াশা। রাত গড়িয়ে সকাল পর্যন্ত থাকে দাপট। এবার শীতের শুরুতে খেজুর গাছের মিষ্টি রসে দেখা মিলেছিল। শীত অনুভূত হলেও ফেব্রæয়ারির শুরুতেই মিষ্টি রসের দেখা মিলছে না।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদর সান্তাহার পৌর এলাকাসহ আশপাশের গ্রাম হাটবাজার, এমন কি শহরতলীতেও খেজুর গাছের মিষ্টি রসের হাড়ির দেখা মিলছে না। কালের বিবর্তনে এলাকায় খেজুর গাছ কমে গেছে। এখানকার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল ও হাট-বাজারে মিলছে না সবার প্রিয় মিষ্টি রস।
বগুড়ার মধ্যে আদমদীঘি মানেই শীতে খেজুরের মিষ্টি রস। এমন ঐতিহ্য বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে। বছরের চাকা ঘুরে শীত এলেও কমছে খেজুরের রস। প্রতি বছর শীতের শুরুতে দেখা গেলেও মাস শেষ হতেই গাছ থেকে উধাও হয়ে যায় রস। হাড়ি ঝুলিয়ে রাখা হলেও টিপটপ করে রস পড়ার শব্দ আর হয় না।
গত শতাব্দীর শেষ দিকেও শীতের প্রতিটি ভোরে হাড়ি নিয়ে রস বিক্রেতারা গ্রামে গ্রামে এবং শহরের পাড়া-মহল্লায় ঘুরতেন। শীতের সকালে কানে ভেসে আসত ‘চাই টাটকা মিষ্টি রস, লাগবে রস’। এই তো বছর দশেক আগেও রস বিক্রেতাদের হাকডাক ছিল।
সে সময় রস কিনে বাড়ির ছোটবড় সবাই মিলে সকালের নাস্তার পর্ব সারতেন। রসের সাথে মুড়ি মিশিয়ে খাবার যে আনন্দ ছিল তা ক্রমশ ফিকে হতে চলেছে। গত মঙ্গলবার ভোরে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার জাফরপুরের খেজুর রস বিক্রেতা আব্বাস উদ্দীন সান্তাহার শহরের রেলগেটে বসেছিলেন। তিনি জানান, হাড়িভর্তি রস নিয়ে বসার পর কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে যায়।
আদমদীঘির স্থানীয় গাছিরা জানান, এলাকায় এখন আর আগের মত খেজুর গাছ নেই। এলাকায় জমিতে বসতবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় খেজুর নয় অনেক গাছই কেটে ফেলা হয়েছে। এক সময় ছিল প্রচুর খেজুর গাছ। বর্তমান প্রজন্মের কাছে খেজুর গাছ ও রস আগামীতে গল্প হয়ে ধরা দেবে।
তারা আরো জানান, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের পর বাজারে বিক্রির পাশাপাশি গুড় তৈরি করা হত। রসের পাশাপাশি বাড়িতে তৈরি গুড় বিক্রি করে গাছিরা লাভবান হতেন। দিন দিন খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় সকালে রস ও দিনভর বাজারে গুড় বিক্রি বর্তমানে নেই বললেই চলে।
এক সময় গোটা আদমদীঘিতে খেজুর রসের যে সুখ্যাতি ছিল তা ক্রমেই হারাতে বসেছে। এখন আর গ্রামগঞ্জে শীতের সকালে খেজুর রসের জন্য অপেক্ষায় থাকে না সব বয়সের মানুষ। রস দিয়ে পায়েস ও হরেক রকমের লোভনীয় পিঠা তৈরি হয় না। গাছ কমে গেলেও বর্তমানে প্রতি কেজি খেজুরের রস যে দামে বিক্রি হয় তাতে সাধারণ লোকজন কিনে খেতে পারেন না। আর সেই রসের তৈরি প্রতি কেজি গুড়ের দামও অনেক বেশি।
সান্তাহার পৌর এলাকার বশিপুর গ্রামের ফুনা মিয়া, আদমদীঘির রামপুরা গ্রামের আক্কাসসহ কয়েকজন গাছি জানান, শীত এলেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে পুরো মৌসুম বিক্রি করা হয়। তাছাড়া গুড় তৈরি করে বাজারে নিয়ে বিক্রির মাধ্যমে গাছিরা বেশ লাভবান হতেন। বর্তমানে গাছের সংখ্যা অনেকা কম। এখন যে সংখ্যায় গাছ রয়েছে তাতে রস সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। গাছের নিচে রস নামানোর পরই বিক্রি হয়ে যায়। আগামীতে এমন দৃশ্য দেখা না গেলে অবাক হওয়ার মত কিছু থাকবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।