বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতি শেষ হলো ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন। দিনভর কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচন নিয়ে নানা মন্তব্য-প্রতিক্রিয়া হয়েছে প্রচুর। ফেইসবুক পোস্টে ভোটের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন অনেকেই। অধিকাংশ মানুষ এ নির্বাচন নিয়ে দেখিয়েছেন বিরূপ প্রতিক্রিয়া। ভোট দিতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। আবার কারও কারও মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টিও দেখা গেছে।
ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘ভোট দিয়ে এলাম তাও টানা ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে। অবশ্য ভোটারদের কারণে এই দীর্ঘ লাইন ছিল না ইভিএমে সমস্যার কারণে ভোট দিতে দেরি হচ্ছিল। আমাদের কেন্দ্রের ৩-৫ নম্বর বুথের ভোটাররা ভোট দিয়ে ঢুকছিলেন আর বের হচ্ছিলেন । কিন্তু ১-২ নম্বর বুথে দীর্ঘ লাইন পড়েছিল এই সমস্যার কারণে। আনসার সদস্যরা অধৈর্য ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, ভাই যন্ত্রে তো একটু সমস্যা হতেই পারে। এক অধৈর্য ভোটার বললেন, সেটা তো আমাদের সমস্যা নয়, আমরা তো ইভিএম চাইনি। আমি বললাম সিইসি বলেছেন, কোন ইভিএমের সমস্যা দেখা দিলে সাথে সাথে নতুন ইভিএম সেখানে দেয়া হবে। নতুন ইভিএম নিয়ে আসেন। আমার কথার জবাব দিতে না পেরে এক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে লাইন ভেঙে ভিতরে নিয়ে গেলেন এবং ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন। দ্বিতীয়বারের মতো ইভিএমে ভোট দিলাম। সিস্টেম হিসাবে এটা দারুন। নিয়ত সৎ থাকলে ইভিএমে ভোটগ্রহণে কোন এজেন্ট, এমনকি পোলিং অফিসারও লাগার কথা নয় বলে আমার মনে হয়েছে। থাম্ব প্রেস এবং ভোট প্রদান, খুবই সহজ প্রক্রিয়া। টিপসই/ সিগনেচার, অমোচনীয় কালিরও দরকার নেই। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় বেশ কিছু অভিজ্ঞতা হলো। গত রাতের সন্ত্রাসী বিরোধী ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে!! কেন্দ্রের ভেতরে বাইরে ধানের শীষের মশা মাছিও দেখলাম না। এক প্রার্থীর এজেন্ট আমার পিছনে দাঁড়ানো তার একজন ভোটার বন্ধু কে বলছেন, দোস্ত, বারোটা পর্যন্ত
আমরা মাথা ঠান্ডা রাখবো। ফেরার সময় একটি কেন্দ্র থেকে ইশরাক কে বেরোতে দেখলাম বিপুল মিডিয়ার সমভিব্যাহারে। মিডিয়া শো সে ভালই করতে পেরেছে। তাকে দেখে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সরে পথ ছেড়ে দিলো। এই জেশ্চারটি ভালো লেগেছে।’’
আলী রীয়াজ লিখেছেন, ‘যে দেশের মানুষের কাছে নির্বাচন ছিল উৎসব, ভোট দেওয়া ছিল একই সঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব-ষাট শতাংশ ভোট কোনো বিষয় ছিল না সে দেশের মানুষকে ভোটকেন্দ্র বিমুখ করতে পারার এই ঐতিহাসিক কাজ যে বা যারা সুচারুভাবে সম্পাদন করতে পেরেছেন তাদের নোবেল পুরস্কার না পারেন জাতীয় একটা পুরস্কার দিন—তাঁর বা তাঁদের এই ইতিহাস তো এক শ বছরেও ঘটেনি। আমরা যেন তাঁদের চিনি জানি-সকাল সন্ধ্যা তাঁদের নাম জপ করি সেই সুযোগ দিন। ভোটকেন্দ্রের অভিজ্ঞতার কথা যারা বলছেন তাঁদের কাছ থেকে শুনুন, কোথা দিয়ে কি হয়েছে তাঁরা টের পাননি। ইভিএম নামের যে রঙ্গমঞ্চ সাজানো হয়েছে তার হাল কি হবে তা গুগল করতে যারা পারেন তারা আগেই জানেন। সেই রঙ্গমঞ্চের কুশীলব—ভাঁড়ও বলতে পারেন, আজকে যা বলেছেন তা বাঁধিয়ে রাখুন। এখনো তো সফটওয়্যারের খেলার খবর পাননি, অপেক্ষা করুন। একে আপনারা নির্বাচন না বলে অন্য কিছু বলুন। উদ্দেশ্যটা তো দুর্বোধ্য নয়। মানুষ বলবে-“এই নির্বাচন চাই না”, আপনাদের ভাষ্যে সেটা দাঁড়াবে “জনগণ নির্বাচন চায় না”। তারপরে কী হবে সেটা অনুমানের বিষয় নয়, উপলব্ধির বিষয়।
মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘‘যে দিন বাংলাদেশ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিদায় নিয়েছ সে দিন থেকে বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছে।’’
মো. মাসুদ আলম লিখেছেন, ‘‘আর কতো জাতির সাথে তামাশা। শুধু শুধু জনগণের টাকা অপচয় করে এমন একটা সাজানো নির্বাচন দেওয়ার কি দরকার ছিল?’’
মোরশেদ আলম লিখেছেন, ‘‘ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়...! আজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্বলের প্রতি যে জুলুম করে যাচ্ছেন, তার ফল একদিন না হয় একদিন ভোগ করতেই হবে.. এটাই পৃথিবীর নিয়ম... সেদিনের জন্য জুলুমকারীরা প্রস্তুত থাকুন..!’’
রশিদুল রহমান লিখেছেন, ‘‘যারা ধর্ষণের হুমকি দিয়ে এজেন্ট বের করে দিচ্ছে বা নিজেদের প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য করতেছে তাদের কাছে নিজেদের মা-বোনও নিরাপদ না। সে সব অবিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলতেছি আপনার সন্তান এবং ভাই থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। মনে রাখবেন পশুর কাছে সবাই সমান।’’
আফসান চৌধুরী লিখেছেন, ‘নির্বাচনে যেই জিতুক অবস্থার উন্নতি হওয়ার চান্স কম। তবে ইলেকশনের আওয়াজ বন্ধ করার জন্য ধন্যবাদ। ওটাই যথেষ্ট।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।