Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভূমধ্যসাগরে মুখোমুখি তুরস্ক-ফ্রান্স, যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:১১ পিএম

লিবিয়া ইস্যুতে এবার ফ্রান্সের সাথে সরাসরি দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ল তুরস্ক। ভূমধ্যসাগরে লিবিয়ার সহযোগিতায় তেল ও গ্যাস আহরণ করতে চায় তুরস্ক। কিন্তু তাতে প্রবল আপত্তি জানিয়েছিল গ্রীস। জানা গেছে, লিবিয়ার সমর্থনে কয়েকদিন আগে ভূমধ্যসাগরে দুইটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিলেন এরদোগান। আজ শুক্রবার গ্রীসের সমর্থনে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ফ্রান্স।

গতকাল বৃহস্পতিবার লিবিয়া ইস্যু নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্যারিস ও আঙ্কারা বাক-যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে অস্থিতিশীলতার জন্য ফ্রান্সকে দায়ী করেছে তুরস্ক। অন্যদিকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের ব্যর্থতার জন্যই দেশটির সংঘাত নিরসন হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।

ভূমধ্যসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত বছরের জুনে সাইপ্রাসের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে তুরস্ক। সেখানে সাইপ্রাসের কাছে প্রাকৃতিক গ্যাসের একটি বিশাল মজুদ আবিস্কৃত হওয়ার পরে সেই গ্যাস উত্তোলনে পাইপলাইন স্থাপণে চুক্তি করে গ্রীস, দক্ষিণ সাইপ্রাস ও ইসরায়েল। কিন্তু ওই এলাকার অন্যতম অংশীদার হওয়া সত্ত্বেও তুরস্ক ও লিবিয়াকে চুক্তিতে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। আবিষ্কৃত সম্পদের সুষ্ঠু ও নায্য বিতরণ করার জন্য তুরস্ক ওই দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তাতে কোন সাড়া না পাওয়ায় তুরস্ক তাদের ড্রিলিং কার্যক্রম লিবিয়ার দিকে সম্প্রসারণ করে। ফলে গ্রীস, দক্ষিণ সাইপ্রাস ও ইসরায়েলের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

এদিকে, লিবিয়ায় চলমান সংঘাত নিরসনে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে গত ১৯ জানুয়ারি বার্লিনে এক সম্মেলন আয়োজন করেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেল। ওই সম্মেলনে তুরস্ক ও ফ্রান্সের নেতারা লিবিয়ায় বিদেশি হস্তক্ষেপ বন্ধের বিষয়ে একমত হন। এছাড়া জাতিসংঘের নেতৃত্বে লিবিয়ার ঐক্য প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়েও সম্মতি আসে ওই সম্মেলনে।

এরপর বৃহস্পতিবার গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কাইরিয়াকোস মিতসোতাকিসের সঙ্গে এক বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেন, তুরস্ক বার্লিন সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মানছে না। দেশটি কয়েকদিন আগে লিবিয়ায় যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে। আমরা বার্লিনে যেসব বিষয়ে সম্মত হয়েছিলাম এটা তার মারাত্মক এবং স্পষ্ট লঙ্ঘন।

অন্যদিকে ম্যাখোঁর মন্তব্যের জবাবে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হামি আকসোয় এক বিবৃতিতে বলেছেন, লিবিয়া সংকটের জন্য ফ্রান্সই সবচেয়ে বেশি দায়ী। শুরু থেকেই তারা এই সংকট উসকে দেয়ার মতো কাজ করে আসছে। লিবিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেতে হাফতারকে নিঃশর্ত সমর্থন দিচ্ছে ইউরোপের দেশটি।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকেই সহিংসতা আর বিভক্তিতে জর্জরিত হয়ে আছে লিবিয়া। গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে দেশটিতে সক্রিয় রয়েছে দুটি সরকার। এর মধ্যে রাজধানী ত্রিপোলি থেকে পরিচালিত সরকারের ওপর জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশের সমর্থন রয়েছে। তুরস্কের সমর্থনও এই সরকারের প্রতি। অন্যদিকে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল থেকে পরিচালিত জেনারেল খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন অপর সরকারটিকে সমর্থন দিচ্ছে মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, সউদী আরব ও ফ্রান্স। সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর।



 

Show all comments
  • jack ali ৩১ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:২৩ পিএম says : 0
    Those who are supporting Hafter Iblees they are enemy of Islam... May Allah Punish them and bring much needed peace. Ameen
    Total Reply(0) Reply
  • Salam Talukder ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১০:৩৭ পিএম says : 0
    তুরস্ককে খুব সাবধানে এগিয়ে যেতে হবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ