Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ত্রাণের অভাবে চরম সঙ্কটে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ

তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত ২১ হাজার ছাড়াল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম

আঞ্চলিক ইতিহাসের অন্যতম সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ২১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এদিকে, জরুরি ত্রাণ সহায়তার অভাবে চরম সঙ্কটে পড়েছেন উত্তর সিরিয়ায় ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা।

কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, দুই দেশ মিলিয়ে মৃতের মোট সংখ্যা ২১০৫১ জনে দাাঁড়িয়েছে। তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওক্তাই বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তার দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭৬৭৪ জনে দাাঁড়িয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৭২৮৭৯ জন। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৩৩৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে দেশটির উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ২০৩০ জন এবং সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশে ১৩৪৭ জন বলে স্বেচ্ছাসেবক দল ও সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে। সিরিয়ায় মোট আহতের সংখ্যা ৫২৪৫ জন; এদের মধ্যে সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশে ২২৯৫ জন এবং বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ২৯৫০ জন। সবমিলিয়ে ভ‚মিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় অন্তত ৭৮ হাজার ১২৪ জন আহত হয়েছেন।

উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করছে এমন একটি বেসামরিক ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেট-এর প্রধান জাতিসংঘের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, ভ‚মিকম্পের পর জাতিসংঘের পদক্ষেপ ছিল খুবই বাজে। রায়েদ আল-সালেহ বলছেন, জাতিসংঘ নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে না। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের প্রথম ত্রাণ-বাহী গাড়িবহর তুরস্ক থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে ঐ অঞ্চলে প্রবেশ করে। তবে হোয়াইট হেলমেট বলছে, ঐ রসদ-পত্র ভ‚মিকম্পের আগে সেখানে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল এবং উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য জরুরি রসদ-পত্র তাতে ছিল না। ইডলিব থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে জেনেভায় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলার সময় আল-সালেহ বলেন, ভূমিকম্পের ১০০ ঘণ্টা পর যে ত্রাণ বহর উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় পৌঁছেছে তাতে ছিল মাত্র ছয় ট্রাক ভর্তি সাহায্য সামগ্রী। এবং এগুলো ভ‚মিকম্পের আগেই সেখানে যাওয়ার কথা ছিল।

তুরস্ক থেকে সিরিয়া পর্যন্ত স্থল সীমান্তের ক্রসিংগুলো রাশিয়ার পীড়াপীড়িতে কমিয়ে আনা হয়েছে। যার ফলে বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয় ভূখন্ডের কিছু অংশে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিতরণ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রাশিয়া বলেছে, সাহায্য সামগ্রীগুলি দামেস্কের সরকারের মাধ্যমে যাওয়া উচিত। কিন্তু হোয়াইট হেলমেট শুক্রবার দাবি করেছে যে, ভূমিকম্পের পর সিরিয়ার সরকার উত্তর সিরিয়ায় ‘কিছুই’ পাঠায়নি। আল-সালেহ আরও কিছু মানবিক করিডোর খোলার জন্য জাতিসংঘকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা ‘রাশিয়াকে রাগাতে চায়নি’ বলে তিনি বলেন। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা অবশ্যই আল-সালেহ’র এই ব্যাখ্যা মেনে নেবেন না। জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস এ সপ্তাহান্তে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় যাচ্ছেন। তবে এই সফরের সময় তিনি হোয়াইট হেলমেট কর্মীদের সাথে দেখা করবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

ভ‚মিকম্প আঘাত হানার পর চার দিন পার হয়েছে এবং সাহায্যের অভাবে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার পরিস্থিতি মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন। উত্তর সিরিয়ার একটি হাসপাতালের কর্মরত ডাক্তার মোহাম্মদ হাসাউন বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভ‚মিকম্পের পর এখন তাদের কাছে যে চিকিৎসা সামগ্রী রয়েছে তা দেশের উত্তরাঞ্চলের ২০শতাংশ মানুষের চাহিদাও পূরণ হবে না। বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর দিচ্ছে, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ডবিøউএফপি শুক্রবার জানিয়েছে যে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায়, যেখানে ৯০ শতাংশ মানুষ সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে খাদ্যের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। সূত্র : বিবিসি নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক ও সিরিয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ