Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হেদায়তময় শান্তির সোনালী আলোকবর্তিকা

মুহাম্মদ রাশেদ হায়দার মহিউদ্দীন | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

মরু আরবের শুষ্ক প্রান্তর হতে ইসলামের যে বীজ আল্লাহর হাবীব (দঃ) বপন করেছিলেন তা আজ ফুলে ফলে সুশোভিত হয়ে ধরণীর প্রান্তে প্রান্তে সকলকে করছে মুগ্ধ বিমুগ্ধ বিমোহিত, যাঁর পরশে সমগ্র সৃষ্টি হচ্ছে সম্মোহিত, সমাদৃত এবং সম্মানিত। ইসলামের এই যুগান্তকারী বিস্তৃতি এবং ব্যাপকতার নেপথ্যে যাঁরা ত্যাগ শ্রম এবং কোরবানির মাধ্যমে সুবিশাল অবদান রাখার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের আলোয় উদ্ভাসিত তাঁদের সকলের যে শক্তি ছিল তা হলো ঈমানের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে তাওহীদকে বুকে ধারণ করে এশকে মোস্তফার অনুশীলন নবী (দঃ) কে পরিপূর্ণ অনুসরণ এবং অনুকরণ। প্রিয় রাসুল (দঃ) এঁর এ ভালবাসাময় আকুলতায় তাঁরা হয়েছেন সৃষ্টির দিশারী, পথহারাদের পাঞ্জেরী। তাদের নূরাণী কর্ণকুহরে যেন প্রতিনিয়ত ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয় নিপীড়িতদের আহাজারি, বঞ্চিতদের রোনাজারি। একজন মানুষকে যে সুমহান উদ্দেশ্য নিয়ে খোদা তাঁর প্রিয়তম সৃষ্টিরূপে দুনিয়াতে পাঠায় মানুষ যখন তা ভুলে যায় তখন খোদার প্রতিনিধি হয়ে নবী (দঃ) এঁর আদর্শকে বাস্তবায়ন করার মধ্য দিয়ে সলফে সালেহীনগণ তথা যুগের যাঁরা সংস্কারক থাকেন তাঁরা দায়িত্ব গ্রহণ করেন সে সমস্ত পথভোলা মানুষকে খোদার পথে এনে জান্নাতের সুঘ্রান দেয়ার। মাশাআল্লাহ আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া একবিংশ শতাব্দির মাহেন্দ্রক্ষণে প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষতার সময়ে নবী প্রেমের বিন্যাসে এমন একজন কালজয়ী রাহবারকে আমরা পেয়েছি যিনি নূরে মোস্তফার সংস্পর্শে মানুষকে এমনভাবে পরিচালিত করছেন যে পথের শেষে অনাবিল প্রশান্তি, দূর হয় জীবনের ভ্রান্তি, আসেনা এবাদতে ক্লান্তি, ক্বলবে অনুভূত হয় খোদায়ী শান্তি, ঈমান ও আখলাকে পাই হেদায়তময় তৃপ্তি, জীবনে জ¦লে উঠে নবী প্রেমের দীপ্তি, দুজাহানে হয় বেহেশতি প্রশান্তময় প্রাপ্তি। একজন বান্দা যখন গুনাহর সাগরে হাবুডুবু খেতে খেতে খোদাকে বেমালুম ভুলে যায় তখন সে যদি কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে আসে তখন হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বক্ষ নিঃসৃত নবী (দঃ) নূরে পাক গ্রহণ করে তখন তার জীবন ঐশী কৃপায় ভরপুর হয়ে উঠে। হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে যে ব্যক্তি এ নূর গ্রহণ করবেন তার তিনটি পরিবর্তন জীবনে আসবে ১) সে দুনিয়া থেকে হালকা হয়ে যাবে আখেরাতের দিকে ধাবিত হবে ২) সবসময় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকবে ৩) ইসলামের জন্য তার বক্ষ প্রসারিত হয়ে যাবে। এ নূরে পাক গ্রহণের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তনগুলো দৃশ্যমান হয় তা যেন আজ বাস্তব গাউছুল আজমের অনুসারীদের মাঝে। এ নূরের প্রভাবে মানুষ আশেকে রাসুলে পরিণত হয়। যার হৃদয়ে নবীর প্রেম থাকে তার জীবনতো সুন্নতের অলংকারে সুসজ্জিত থাকবে। তার চলাফেরায় চিন্তাধারায় কথাবার্তায় ইসলামের জ্যোতি, সুন্নতের প্রীতি, খোদার ভীতি হবে দৃশ্যমান, নফসের প্রভাব হবে ¤্রয়িমান, ইনসানিয়্যত হবে বেগবান। সর্বোপরি খুঁজে পাবে এহসান তথা খোদার সন্ধান, মারেফতের সুঘ্রান। এ মহান তরিক্বতের আরেকটি মহামূল্যবান নেয়ামত হল ফয়েজে কোরআন তথা কোরআনের নূর। যেথায় মিলে হাকীক্বতের সুধা শরাফত, যার ঝলকানিতে ক্বলবে উঠে আল্লাহ আল্লাহ সুরের মহা ঝংকার, হৃদয়ে সাজে নবী প্রেমের অলংকার ঐ ব্যক্তিকে নিয়েই যেন জাতে পাকের অহংকার। অশ্রæজলে বিনীত প্রার্থনায় এরকম অগণিত ইনসানে কামেল সৃষ্টির রূপকার হযরত গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু। এ মহান ব্যাক্তিত্বের অবদান স্বরূপ উনি পেয়েছেন খলিফাতুর রাসুলের দুর্লভ মকাম, খলিলুল্লাহ উপাধি, গাউছিয়্যতের আসনে হয়েছেন উপবিষ্ট। তাইতো তাঁর সংস্পর্শে অশান্ত হৃদয় হয়ে যায় শান্ত-শিষ্ট, সাধারণ ব্যক্তিও হয়ে উঠে খোদার কাছে বিশিষ্ট, আচারে ব্যবহারে হয় সুমিষ্ট, সবর শোকরের আসনে হয় অধীষ্ট, এবাদতে হয় আকৃষ্ট দূর হয় জীবনের যত কষ্ট, হয়না কখনো পথভ্রষ্ট, শয়তানি ওসওয়াসা তাকে করতে পারেনা নষ্ট, এভাবেই হয়ে উঠে সৃষ্টিতে শ্রেষ্ঠ। গাউছিয়্যতের সোনালী আলোর রূপালী ছটা আজ ছড়িয়ে পড়েছে বিশে^র প্রান্ত হতে প্রান্তে সমস্ত দিগন্তে। অদ্ভুত এক প্রশান্তিমাখা, ঘুম ভাঙানিয়া, জীবন জাগানিয়া, নফস দমনীয়া, রূহ রাঙানিয়া ঈমানোদ্দিপ্ত চেতনায় হযরত গাউছুল আজম সৃষ্টিকে করেছেন খোদা প্রেমের আহ্লাদে ভরপুর, বাজিয়েছেন নবী প্রেমের সুরাসুর। নবীর দয়ায়-মায়ায় উনার ঠিকানায় মিলে প্রেমের আস্বাদন, নূরের প্রস্বেদন, চির শান্তির নিঃসরণ, প্রেম পিয়াসি করে চলে তা আহরণ, যার সুবাসে আভাসে জাগে ঐশী শিহরণ। নিপিড়িত জীবনের তিনি প্রেমসুখ জড়ানো আক্বা, ঘোর আঁধারে উদ্ভাসিত হেদায়তময় শান্তির আলোকবর্তিকা। প্রেম শান্তির এই শাশ^ত পয়গামকে বিশ^বাসীর কাছে পৌঁছে দেবার জন্য ইনশাআল্লাহ এ বছরের বিশ জানুয়ারি গাউছুল আজম সিটি বায়োজিদ চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক তরিক্বত কনফারেন্স। যেখানে হবে হেদায়তের সুধা মাখা প্রেম নূর বিনিময়, হুব্বে মোস্তফা চির মধুময়, তৌহিদী জ্যোতি বসন্তময়, মারেফতের অমৃত আধার রহমতময়, হাকীক্বতের ঝলকানি অপরূপ আলোময় সর্বোপরি গাউছিয়্যতের ফুয়ুজাতভরা রেজায়ে খোদার লীলাময় প্রবাহ।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শান্তি

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ