Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা নিপীড়ন গণহত্যা নয় : মিয়ানমারের কমিশন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ৩:০৭ পিএম

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, গণধর্ষণ ও নির্বিচারে আটকসহ ভয়াবহ নিপীড়ন চালিয়েছিলো বার্মিজ সেনারা। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ওই সেনা নির্যাতন থেকে বাঁচতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের ওপর কোনো গণহত্যা হয়নি। কিছু সেনাসদস্য কেবল যুদ্ধাপরাধের মতো অপরাধ করেছেন।
গতকাল সোমবার (২০ জানুয়ারি) মিয়ানমারের দ্য ইনডিপেনডেন্ট কমিশন অব এনকোয়ারি বা আইসিওইর প্রকাশিত প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে এমনটা জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার আগে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কাছে তদন্তের সারসংক্ষেপ জমা দিয়েছে কমিশন। মিয়ানমারের এই কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফিলিপাইনের কূটনীতিক রোজারিও মানালে। তার সঙ্গে দুজন আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিও রয়েছেন।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালত রাখাইনে গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে রুল জারি করা হবে কিনা সে ব্যাপারে ২৩ জানুয়ারি আদেশ দেবেন। তার আগেই এ প্রতিবেদন প্রকাশ করলো মিয়ানমার।
আইসিওইর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা, তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়াসহ অসম শক্তিপ্রয়োগ করেছে; যা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধের শামিল। তবে সেটাকে গণহত্যা বলা যায় না।
২০১৭ সালে রাখাইনে সামরিক অভিযানে ব্যাপক দমন-পীড়নের মুখে অন্তত ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। বহু রোহিঙ্গা নারী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী অনেক রোহিঙ্গা নারী ইতিমধ্যে সন্তানও জন্ম দিয়েছেন, যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে নানা সময়ে প্রকাশিত হয়েছে। জাতিসংঘ শুরু থেকেই রোহিঙ্গাদের ওপর এই মিয়ানমার সেনাদের নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।
রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গত মাসে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। আগামী ২৩ জানুয়ারি ওই মামলার অন্তর্র্বতীকালীন আদেশ দিবে আদালত। এ অবস্থায় মিয়ানমারের স্বাধীন কমিশন এ ধরনের বিভ্রান্তমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করলো।
মিয়ানমার বরাবরই রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ সেনা নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে থাকে। এমনকি গত ডিসেম্বরে হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সময় দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি মিয়ানমার সেনাবাহিনী কোনো নির্যাতন করেনি বলে দাবি করেছিলেন। যদিও সেটি ছিলো তার নির্লজ্জ মিথ্যাচার।
এদিকে তদন্ত কমিশনের ওই প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করেছেন গেøাবাল জাস্টিস সেন্টারের প্রেসিডেন্ট আকিলা রাধাকৃষ্ণ। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, এই কমিশন হচ্ছে দায়িত্ব বিপথগামী ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে ধাপ্পাবাজির আরেকটি দেশীয় চেষ্টা। তা নইলে গণধর্ষণ ও অন্যান্য গণহত্যার মতো অপরাধে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার কোনও ইচ্ছা নেই মিয়ানমার সরকারের।



 

Show all comments
  • md anwar hossain ২১ জানুয়ারি, ২০২০, ৪:৪৭ পিএম says : 0
    বিচারের
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা সঙ্কট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ