মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারে পরিকল্পিত সহিংসতা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা পেতে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন একটি স‚ত্র তথা ভারত সরকারের কাছ থেকে অস্তিত্বগত হুমকির মুখে পড়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিকে এক সিনিয়র মন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে তাদের ভাগ্যে যাই থাকুক না কেন, ভারতে অবস্থানরত রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উত্তর প‚র্বাঞ্চল উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং ৪ জানুয়ারি বলেন, এখানে কোনো কিন্তু, যদি নেই। এখন যা ঘটবে তা হলো রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেয়া নিয়ে। তিনি ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের আওতায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেয়ার আহŸানটির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। গত বছর ভারতীয় পার্লামেন্টে পাস হওয়া ওই আইনে জাতিসংঘ উদ্বাস্তুবিষয়ক হাই কমিশনারের পরিচয়পত্রহীন ‘অনিয়মিত অভিবাসী’ এসব মুসলিমের অধিকার অস্বীকার করা হয়। মন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যে প্রায় এক দশক ধরে ভারতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জন্য মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ভারতে ৪০ হাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু রয়েছে। এদের অর্ধেকের কম সংখ্যকের কাছে জাতিসংঘ উদ্বাস্তুবিষয়ক হাই কমিশনারের পরিচয়পত্র রয়েছে। মিয়ানমার সরকারের আরোপিত প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য থেকে রক্ষা পেতে এসব লোক ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। বৈষম্যগুলোর মধ্যে ছিল চলাচলের স্বাধীনতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যার সুবিধা লাভ। এছাড়া ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ শুদ্ধি অভিযান চালানো হয়। শুদ্ধি অভিযানের সময় গণহত্যা, নির্যাতন, যৌন সহিংসতা পরিচালনায় জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার সব উদ্যোগ প্রতিরোধ করে আসছে মিয়ানমার সরকার। ওই শুদ্ধি অভিযানের জেরে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে চলে আসে। এরপর থেকে মিয়ানমার সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের সব চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়, সাবেক রোহিঙ্গা গ্রামগুলো বুলডোজার দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে। নিহত বা পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের কোনো চিহ্নই যাতে অবশিষ্ট না থাকে, সেজন্যই দৃশ্যত এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আবার অনেক গ্রামে নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনাও নির্মিত হয়েছে। আবার কিছু গ্রামে রাখাইন রাজ্যের অন্যান্য স্থান থেকে প্রধানত বৌদ্ধদের নিয়ে আসা হয়েছে। মিয়ানমার সরকার এখন রাখাইন রাজ্যে অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদেরকে জোর করে বিভিন্ন ক্যাম্পে আটকে রেখেছে। তাদের ওপর ভ্রমণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যার ওপর কড়াকড়ি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে বলেছে যে নারী, পুরুষ ও শিশুদেরকে আলাদা করে রাখা হয়েছে, তাদের সাথে বর্ণবাদী আচরণ করা হচ্ছে। ভারত সরকারকে আরো মনে রাখতে হবে যে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের ফলে এসব লোক নাগরিকত্ব লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জিতেন্দ্র সিংয়ের মন্তব্যের ফলে যেসব রোহিঙ্গার ইউএনএইচসিআরের সুরক্ষা কার্ড নেই, তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ২০১৮ সালের অক্টোবরে ভারতের সাত রোহিঙ্গা পুরুষকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ঘটনাটিও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। এর জের ধরে শত শত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। ভারতের উচিত হবে মিয়ানমারকে তার নাগরিকদের প‚র্ণ মর্যাদা দিয়ে ফিরত নিতে রাজি করার মাধ্যমে তার নেতৃত্বকে প্রকাশ করার সুযোগটি গ্রহণ করা। তা না করে রোহিঙ্গাদের পাইকারি হারে ফেরত পাঠানো হলে তা ক্ষতিকরই হবে। এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।