পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে ঢাকা-সিলেট চারলেন মহাসড়ক প্রকল্প। স¤প্রতি এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে চুক্তি করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এর মধ্য দিয়ে এ মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার যে অনিশ্চয়তা চলছিল, তা দূর হয়েছে। চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে চারলেনের কাজ। বর্তমানে চলছে জমি অধিগ্রহণ ও সমীক্ষার কাজ।
ইআরডি সচিব মো. মনোয়ার আহমেদ ইনকিলাবকে জানান, প্রকল্পতে অর্থায়নের জন্য আমরা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। তারা অর্থায়নের বিষয়ে সম্মতির কথা জানিয়েছিল। এরপর থেকে প্রকল্প নিয়ে আশা-নিরাশায় দুলছিলেন সিলেটবাসী।
তবে প্রকল্পের জন্য এডিবি কত টাকার ঋণ সহায়তা দেবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। কারণ প্রথমে প্রকল্পের এক পাশে সার্ভিস লেন হওয়ার কথা ছিল। এখন মহাসড়কের দু’পাশেই ধীর গতির গাড়ি চলাচলের জন্য আলাদা সার্ভিস লেন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নতুন করে প্রকল্প সমীক্ষা করা হচ্ছে।
সমীক্ষার পর ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যাবে বলে জানান ইআরডি সচিব মো. মনোয়ার। ব্যয়ের অঙ্ক নির্ধারিত হলেই এডিবি’র কাছ থেকে কত শতাংশ নেওয়া হবে তা নির্ধারণ করা হবে। গত বছরের নভেম্বরে এডিবির প্রধান কার্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসে। ওই প্রতিনিধি দল ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে নীতিগত সম্মতি দেয়। এখন এডিবির সঙ্গে ঋণের শর্ত নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের মধ্যে এডিবির সঙ্গে চুক্তি হতে পারে বলে আশা করছেন ইআরডি কর্মকর্তারা।
সড়ক পরবিহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ২২৬ কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত করতে স¤প্রতি ইআরডির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে এডিবির। চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছর মহাসড়কের উন্নয়নে দৃশ্যমান কাজ শুরু করবে এডিবি। প্রকল্প প্রস্তাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ৭০টি সেতু নির্মাণের কথা রয়েছে।
এছাড়াও চার হাজার ৩৫৮ মিটার দীর্ঘ চারটি উড়াল সড়ক নির্মাণেরও কথা রয়েছে। উড়াল সড়কগুলো ভৈরব, সিলেটের গোয়ালাবাজার, তাজপুর ও দয়ামীর বাজার এলাকায় নির্মাণের কথা। এছাড়া নরসিংদী, ভৈরব, ওলিপুর, লস্করপুর ও সিলেটে নির্মাণ করা হবে রেলওয়ে ওভারপাস। মহাসড়কটি এশিয়ায়ন হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।
সূত্র জানায়, চারলেন করতে এডিবি ২০১৩-১৪ সালের দিকে প্রথম সমীক্ষা করে। এরপর মহাসড়কের কাজ কারা করবে, এ নিয়ে নানান জটিলতা তৈরি হলে এডিবি আর বেশিদূর এগোতে পারেনি। তারা আবার যখন কাজটি করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সে কারণে আগের সমীক্ষার নতুন করে মূল্যায়ন প্রয়োজন। এ জন্যে নতুন করে সমীক্ষা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে চারলেনের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ভূমি অধিগ্রহণ ও সড়কের পাশের ইউটিলিটি স্থানান্তরের জন্য ইতোমধ্যে সরকার ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ হচ্ছে ৮৫১ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করতে শুরুতে এডিবির সঙ্গেই কথা হচ্ছিল সরকারের। কিন্তু মধ্যে চীনের অর্থায়নে জিটুজি ভিত্তিতে চারলেনে উন্নীত করার জন্য ২০১৭ সালের অক্টোবরে চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছিল সরকার। কথা ছিল ২০১৮ সালের শুরুতেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। কিন্তু চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের জন্য যে ব্যয় প্রস্তাব করেছিল তা সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের প্রাক্কলনের চেয়ে প্রায় ৪২ শতাংশ বেশি। তাই ওদের প্রস্তাব সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেনি।
এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েক দফা আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা না হয়ে কাজ ঝুলে যায়। একপর্যায়ে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য ডিপিপিও তৈরি করা হয়। সেটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলেও সেখান থেকে আরও কিছু সংশোধনী চেয়ে ফেরত পাঠানো হয়। সড়ক বিভাগ তা সুবিন্যন্ত করে ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়।
প্রস্তাবটি পরিকল্পনা কমিশনে যাওয়ার পর অনেক ব্যয়বহুল উল্লেখ করে এর জন্য বাইরের কোনো অর্থায়ন পাওয়া যায় কিনা দেখতে বলা হয়। এর পরপরই প্রকল্পটি ঝুলে যায়। অথচ কথা ছিল সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার। এখন প্রকল্পে অর্থায়ন করবে এডিবি।
প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শুধু যোগাযোগের ক্ষেত্রে নয়, এর মাধ্যমে শিল্পায়নে পিছিয়ে পড়া সিলেটে শিল্প বিপ্লব ঘটারও সম্ভাবনা দেখছেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে মহাসড়কটি অর্থনৈতিক করিডোরের ভূমিকাও পালন করতে পারে- এমন প্রত্যাশা ব্যবসায়ী নেতাদের। এতে করে সিলেটের স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসারও সম্ভাবনা দেখছেন তারা। চারলেন হলে সবচেয়ে বেশি প্রসার ঘটবে সিলেটের পর্যটন খাতের। আর এমন ভাবনা পর্যটন ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।