পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল না কিনতে নিজ দেশের আমদানিকারকদের সতর্ক করে দিয়েছে ভারত। সরকারের এমন আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতোমধ্যেই কুয়ালালামপুর থেকে পাম তেলা কেনা বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন ও কাশ্মির ইস্যুতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সমালোচনার প্রেক্ষিতে দিল্লি এমন উদ্যোগ নিয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এর আগে কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল, রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার এবং অঞ্চলটিকে ভেঙে দুই টুকরো করে দেওয়ার ঘটনায় দিল্লির সমালোচনা করেছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। জাতিসংঘ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ভারতকে কাশ্মিরের দখলদার শক্তি উল্লেখ করেন তিনি। পরে মোদি সরকারের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাহাথির। তিনি বলেছেন, ‘আমি দুঃখের সঙ্গে দেখছি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে দাবি করা ভারত এখন কিছু মুসলিমদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করতে উদ্যোগ নিচ্ছে। আমরা যদি এখানে এটি বাস্তবায়ন করি, আমি জানি না তাহলে কী ঘটবে! বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা তৈরি হবে এবং সবাই ভোগান্তির শিকার হবে।’
মাথাথির কাশ্মির ইস্যু ও ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কথা বলার পর গত সপ্তাহে মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানির বিষয়ে ফের ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেয় দিল্লি। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত। তখন মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি বন্ধে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহŸান জানিয়েছিল দেশটির ভোজ্য তেল ব্যবসায়ীদের শীর্ষ একটি সংগঠন। ম‚লত এ বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রেক্ষিতেই ওই আহŸান জানিয়েছিল সংগঠনটি। তখন ম‚লত কাশ্মির নিয়ে কথা বলায় মাহাথিরের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল দিল্লি। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীর খোলামেলা বক্তব্য। কুয়ালালামপুর তখন বলেছিল, তাদের সামনে বহু বিকল্প রয়েছে। তারপরও দিল্লির সিদ্ধান্ত শুধু মালয়েশিয়াকেই নয়, বরং ভারতকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ওই সময়েই মাহাথির মোহাম্মদ সাফ জানিয়ে দেন, ভারত তাদের পণ্য বয়কট করলেও কাশ্মির প্রশ্নে করা মন্তব্য থেকে তিনি পিছু হটবেন না। কারণ তিনি যা বলেছেন, তা ‘মন থেকেই’ বলেছেন।
নতুন করে অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে অবগত অন্তত পাঁচটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, সরকারের নির্দেশনার ফলে ভারতীয় আমদানিকারকরা আর মালয়েশিয়া থেকে কোনও অপরিশোধিত বা পরিশোধিত পাম তেল কিনছেন না।
ভারতে অশোধিত তেল পরিশোধনের সঙ্গে যুক্ত একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি রয়টার্সকে বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে মালয়েশিয়া থেকে অপরিশোধিত পাম তেল আমদানিতে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সরকারের নির্দেশনার (অনানুষ্ঠানিক) কারণে কেউ কিনছে না।’
তিনি জানান, সরকারের নির্দেশনার ফলে এখন বেশি দামে ইন্দোনেশিয়া থেকে পাম তেল আমদানি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
বার্ষিক ৯ মিলিয়ন টনেরও বেশি পাম তেল কেনা ভারত এ খাতে বিশ্বের বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ। ম‚লত ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া থেকে এ তেল সংগ্রহ করে দেশটি। মুম্বাইভিত্তিক একজন ব্যবসায়ী রয়টার্সকে জানান, আমরা মালয়েশিয়া থেকে ক্রুড পাম তেল (সিপিও) আমদানি করতে পারি। তবে সরকার বলে দিয়েছে, চালান আটকে গেলে আমাদের কাছে আসবেন না। আর কেউই চায় না তাদের চালান বন্দরে আটকে যাক। ভারতে অশোধিত তেল পরিশোধনের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি বলেন, অন্যদের মতো আমরাও বেশি দামে ইন্দোনেশীয় পাম তেল কিনছি। অল্প কিছু লাভের জন্য আমরা জুয়া খেলতে পারি না। উল্লেখ্য, উৎপাদন কমে যাওয়া ও জৈব জ্বালানির চাহিদা বেশি থাকায় গত ছয় মাসে পাম তেলের দাম বেড়েছে ৬০ শতাংশ। সূত্র : রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।