পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দিনভর ঘন কুয়াশার আড়ালে ঢাকা সূর্য। মেঘলা আকাশ। একটুও রোদের দেখা নেই। হাড় কনকনে অসহ্য হিমেল হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। দিনের তাপমাত্রার পারদও নেমে গেছে রাতের তাপমাত্রার খুব কাছাকাছি। ঢাকায় দু’তিন দিন যাবৎ দিন এবং রাতের বেলায় তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গেছে খুবই অস্বাভাবিক পর্যায়ে। গতকাল রোববার রাজধানী ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা ছিল (সর্বোচ্চ) ১৭.১ এবং রাতের সর্বনিম্ন পারদ ১৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গাঢ় কুয়াশা ও আকাশ মেঘলা, সেই সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে হিমেল হাড় কনকনে হাওয়া বইছে ঢাকায়। এ অবস্থায় রাজধানীজুড়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ঢাকা মহানগরীতে দিনের বেলায়ও কাঁপছে মানুষ ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতায়। যা আজও অব্যাহত থাকার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
শুধু ঢাকাই নয়। রাতে-দিনে তীব্র শীতের কাঁপন এখন দেশজুড়ে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে থমকে গেছে স্বাভাবিক জনজীবনের গতি। কুয়াশার সঙ্গে ধূলোবালি, ধোঁয়ায় দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সর্দি-কাশি, ভাইরাস জ¦র, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধিতে মানুষ ঘরে ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর ভিড়। সড়ক-মহাসড়ক, নৌ ও রেলপথে যানবাহনের গতি থমকে গেছে। বেড়েছে ঝুঁকি। আকাশপথেও বিলম্বে ছাড়ছে ফ্লাইট। সর্বত্র মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট ও অপচয় ঘটছে বৈরী আবহাওয়ায়।
আবহাওয়া বিভাগ বলছে, শীত ও কুয়াশার একটি বলয় অর্থাৎ উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ এখন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল ও এর সংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে। এরফলে রাতের তাপমাত্রার তুলনায় অনেক জায়গায় দিনের তাপমাত্রা কমে গেছে এবং শীতের দাপট হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুর বিভাগের রাজারহাটে ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া ঈশ্বরদী ও চুয়াডাঙ্গায় ৯.৮, তেঁতুলিয়ায় ছিল ৯.৯ ডিগ্রি সে.। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৬.১ ডিগ্রি সে.। গতকাল ঢাকা ছাড়াও দিনের বেলায় তাপমাত্রার পারদ অস্বাভাবিক নেমে গিয়ে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় চাঁদপুর, নোয়াখালী, মাদারীপুর, সৈয়দপুর, দিনাজপুর, ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায়।
রাতের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেলে বাংলাদেশের আবহাওয়ায় একে বলা হয় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। কিন্তু গত দু’দিন ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় দিনের (সর্বোচ্চ) তাপমাত্রার অস্বাভাবিক পতন, ঘন কুয়াশা, মেঘলা আকাশ, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে হিমেল কনকনে হাওয়া প্রবাহিত হওয়া- এসব কারণে প্রায় সারাদেশে তীব্র শীতে মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, সারাদেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের কোথাও কোথাও গাঢ় কুয়াশাপাত বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ঈশ^রদী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ঢাকায় উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে ঘন্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে হিমেল বাতাস বয়ে যেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এরপরের ৫ দিনে রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে উত্তর-পশ্চিম দিকে থেকে আসা হিমালয়ের হিমেল কনকনে হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় সর্বত্র মানুষের কষ্ট-দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। পৌষ মাসের প্রথম তিন দিন পর টানা প্রায় তিন সপ্তাহেরও বেশিদিন যাবৎ শীতের দাপটে দেশজুড়ে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন, কর্মজীবী মানুষের আয়-রোজগার ও কর্মচাঞ্চল্য, মালামাল ডেলিভারি পরিবহন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা, গ্রামীণ অর্থনীতি, কৃষি-খামারসহ সর্বক্ষেত্রে স্থবিরতা বিরাজ করছে। প্রায় মাসজুড়ে শীতকষ্টে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দিনে এনে দিনে খাওয়া হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষজন। সকালবেলায় শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের স্কুল-মাদরাসায় আসা-যাওয়া ব্যাহত হচ্ছে। আবার অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।