Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের তিন মন্ত্রীর সফর বাতিলে সমালোচিত মোদি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য রাইসিনা সংলাপে অংশ না নেয়ার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। গত মাসে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীও নিজেদের সফর বাতিল করেন। এর এক সপ্তাহ পরেই দুই দেশের মধ্যে যৌথ নদী কমিশনের আলোচনাও বাতিল হয়ে যায়। ভারতের সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ হওয়ার পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশের তিনজন মন্ত্রী ভারত সফর বাতিল করলেন। এর জেরে মোদি সরকারের সমালোচনা করেছে ভারতের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম।

আজ সোমবার থেকে ভারতে শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘রাইসিনা আলোচনা’। এই প্রথম সেই সম্মেলন হতে চলেছে। সম্মেলনে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল কালাম আব্দুল মোমেনকে। মূলত সেই আলোচনা সভায় মোমেন ছিলেন অন্যতম বক্তা। কিন্তু ঢাকার পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তার পক্ষে ভারতে যাওয়া সম্ভব নয়। এরপর নিমন্ত্রণ করা হয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে। জানা গেছে, তিনিও যাচ্ছেন না ভারতে। আরব-আমিরাত সফরে যাওয়ার কথা জানিয়ে তিনিও ভারত সফর বাতিল করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

কলকাতা ২৪ এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কেউ যোগ দেবেন কিনা তাও নিশ্চিত নয়। হঠাৎ কেন বাংলাদেশের তরফে এমন ব্যবহার তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ভারতীয় সংসদের দুটি কক্ষ লোকসভা ও রাজ্য সভায় পাস হওয়ার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় ভারতে। এরপরেই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সফর বাতিল করে বাংলাদেশ। এরপর আরও এক বাংলাদেশের মন্ত্রী ভারত সফর বাতিল করেন।

ঢাকার ক‚টনৈতিক মহলের ধারণা, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে বারবার বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন প্রসঙ্গ টানছে ভারত সরকার। এতে উদ্বিগ্ন শেখ হাসিনার সরকার। যদিও বিলটি পাসের পর প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে কোনও সংখ্যালঘুরা নিরাপদেই রয়েছেন। এমন এই বিল নিয়েও বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়, এটি ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু একের পর এক হাসিনা সরকারের মন্ত্রী যেভাবে ভারত সফর বাতিল করেছে তাতে রাজনৈতিকমহলের একাংশের মতে, দু’দেশের সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে।

শুধু তাই নয়, হিন্দুদের উপর অত্যাচার, পাকিস্তানের সঙ্গে এক আসনে বাংলাদেশকে রেখেছিলেন অমিত শাহ। তাতে গোটা বাংলাদেশে ভারত বিরোধিতার ঢেউ তৈরি হয়েছে। যার জেরে সম্প্রতি তিন তিন জন বাংলাদেশের মন্ত্রী এবং সরকারি প্রতিনিধির বাংলাদেশ সফর বাতিল করে দিয়েছিলেন ঢাকা নেতৃত্ব। কিন্তু তার পরে সম্পর্ক কিছুটা সহজ করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বছরের প্রথম দিন ফোন করেন হাসিনাকে। দুই নেতার মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। দু’ দেশের সম্পর্কে ডেমেজ কন্ট্রোলে মোদির তরফে এই চেষ্টা যে যথেষ্ট নয়, তা কার্যত পরিস্কার হল আরও এক মন্ত্রীর সফর বাতিল হওয়ার মাধ্যমে।
প্রসঙ্গটি সামনে এনে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজক পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত সফর বাতিল করলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এনডিটিভি আরও উল্লেখ করেছে, সম্প্রতি অমিত শাহ বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের প্রতি অবহেলার অভিযোগ এনেছেন। এসব কারণেই বাংলাদেশের মন্ত্রীরা ভারত সফর বাতিল করেছেন বলে অনুমান। তবে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গীর হওয়ার কারণেই ভারত সফর বাতিল করেছেন প্রতিমন্ত্রী।

ভারতের আরেক প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম আজকালের শিরোনামে বলা হয়, ‘ফের মুখ পুড়ল মোদি সরকারের, একমাসে তিনবার ভারত সফর বাতিল বাংলাদেশের মন্ত্রীর’। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত মাসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সফর বাতিলের পাশাপাশি ভারতকে সতর্ক করেছিলেন। ঠিক তার কিছুদিন পরেই বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মেঘালয় সফর বাতিল করেন। বাংলাদেশের মন্ত্রীদের পরপর ভারত সফর বাতিল প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে একহাত নিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।’



 

Show all comments
  • Moushiur Rahman ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
    সীমান্ত হত্যা অন্যতম কারণ
    Total Reply(0) Reply
  • Ismail Hossain Sumon Jcd ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৮ এএম says : 0
    Good Decision
    Total Reply(0) Reply
  • Srabon Joardar ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ভারতের জন্যেই বেশি সমস্যার।এই ইস্যুতে মোদী সরকার ভারতীয়দের দ্বিধাবিভক্ত করেছে যেটা দীর্ঘমেয়াদে ভারতের জন্যে সুখকর নয়।এটার ইফেক্ট বাংলাদেশে পড়াটাও স্বাভাবিক যেহেতু এই আইনটি ভারত সরকারের মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।এটা ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি আরো অস্থিতিশীল হয়েছে। এই আইন বাতিল না করা পর্যন্ত এই ঘোলাটে পরিস্থিতি কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
    Total Reply(0) Reply
  • Salman Kader ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২০ এএম says : 1
    বিলকুল টেনশন নিবেন না দাদা, মন্ত্রী মহোদয় গিয়ে আপনার পা ছুয়ে প্রণাম করে আসবে..!!
    Total Reply(0) Reply
  • Syed Kamal Uddin ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থে কতটা কঠোর, মোদি অমিতশাহ খুব ভাল করেই জানেন।যার প্রমান বিজেপি সরকারের তীব্র আপত্তি সত্বেও চীন থেকে সাবমেরিন ক্রয় এবং দুইদেশের আয়তনের ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরের সীমা ভাগ করে নেওয়ার মোদির প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে বাংলাদেশের সমান আয়তনের সমুদ্রসীমা বিজয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Shamim Chowdhury ১৩ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২০ এএম says : 0
    ২ দিনের ব্যবধানে বডারে আমাদের ৩ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে, এরপরও যারা ভারতকে আমাদের বন্ধু মনে করবে,তারা দেশের সত্রু এবং ভারতীয় রাজাকার।
    Total Reply(0) Reply
  • মনির হাজারী ১৪ জানুয়ারি, ২০২০, ৫:৪০ এএম says : 0
    অভিনন্দন! মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মজবুত পররাষ্ট নীতির জন্য।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ