Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘাটাইলে পরকীয়ার জেরে পিতা ও স্ত্রীর পরিকল্পনায় হাবিবুল্লাহ খুন

ঘাটাইল(টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২০, ৬:০৬ পিএম

পুত্রবধূর সাথে শ্বশুরের পরকীয়ার কারণে নিজ পিতা ও স্ত্রীর পরিকল্পনায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন হাবিবুল্লাহ (২৫) নামের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ ডিসেম্বর ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মুলবাড়ি গ্রামে। পুলিশ পুত্রবধূকে গ্রেপ্তার করার পর পুত্রবধূর সাথে শ্বশুরের পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারে। পরে হাবিবুল্লাহর পিতাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায় প্রথমে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাবিুল্লাহর স্ত্রী ছবুরা বেগম (২৩) কে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। সে গত ৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন। আদালতের জবানবন্দীতে সে শ্বশুরের সাথে তার পরকীয়া সম্পর্ক থাকা এবং পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্বামী খুন হওয়ায় কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশ গত ৬ জানুয়ারি সোমবার এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাবিবুল্লাহর পিতা আবু জাফর স্বপন (৫২) গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ নিহত হাবিবুল্লাহর স্ত্রী ছবুরার দেয়া আদালতের জবানবন্দীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আবু জাফর স্বপন বাড়ি ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের মুলবাড়ি গ্রামে। তার ছেলে হাবিবুল্লাহ (২৫) পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সে আট মাস আগে কালিহাতী উপজেলার বেলটিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের মেয়ে ছবুরাকে বিয়ে করে। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই শ্বশুর আবু জাফরের সাথে পুত্রবধূ ছবুরার অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। পিতা আবু জাফর নানা কৌশলে নব বিবাহিত ছেলে হাবিবুল্লাকে রাতে বাড়ির পাশের বাজারের দোকানে রাত্রিযাপনের জন্য পাঠিয়ে দিত। বিষয়টি হাবিবুল্লাহর সন্দেহ হয়। এ অবস্থায় একদিন পিতার সাথে স্ত্রীর মেলামেশার দৃশ্য দেখে ফেলে। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে স্ত্রী ও পিতার সাথে মনমালিন্য হয়। তারপরও শ্বশুর ও পুত্রবধূর অনৈতিক সম্পর্ক চলতেই থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয় হাবিবুল্লাহ। এ অবস্থায় আবু জাফর ছেলে হাবিবুল্লাহ দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়। তার পরিকল্পনায় সায় দেয় পুত্রবধূ ছবুরা। তাদের পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্প্রতিবার রাতে ভাড়াটে খুনিদের কাছে হাবিবুল্লাহকে তুলে দেয়। কিন্ত তাদের পরিচয় বলতে পারেনি ছবুরা। সেই রাত থেকেই নিখোঁজ হয় হাবিবুল্লাহ। নিখোঁজের চারদিন পর গত ৩০ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে ঘাটাইল উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের বগা গ্রামের আব্দুল লতিফের বাড়ির পাশে এক চোখ উপড়ে ফেলা হাবিবুল্লাহর লাশ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য পুলিশ হাবিবুল্লাহর লাশ উদ্ধারের পর নিহতের বাবা অভিযুক্ত আবু জাফর স্বপন নিজেই বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামী করে এই দিনই ঘাটাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০৮)।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাকসুদুল আলম জানান, শ্বশুর ও পুত্রবধূর পরকিয়ার সূত্র ধরেই হাবিবুল্লাহ খুনের ঘটনা ঘটেছে। হাবিবুল্লাহর স্ত্রী ছবুরা এ ব্যাপারে আদালতে জবানবন্ধী দিয়েছেন। শ্বশুর আবু জাফরকেও আটক করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কাজ চলছে। আশা করছি দ্রæততম সময়ের মধ্যে হত্যার সাথে জড়িত অন্যানদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ