পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শীত ও কুয়াশার ঘোর বিস্তার লাভ করছে ক্রমেই দেশজুড়ে। শীতের একটি বলয় বা সার্কেল ভারত হয়ে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে। এটি আরও ছড়িয়ে পড়বে। গতকাল (মঙ্গলবার) দেশের সর্ব উত্তরের জনপদ পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঢাকায় ১১.৬ ডিগ্রি। এমনকি ঢাকায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও নেমে আসে ১৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গতকাল রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ ও সেই সঙ্গে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে হিমেল দমকা হাওয়ায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়ে। দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষজনের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। তাদের আয়-রোজগারে ভাটা পড়েছে।
এটি মওসুমের বর্তমান সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রা। তাছাড়া দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের অনেক জায়গায় শীত ও কুয়াশার বিস্তারের ফলে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঘনকুয়াশা এবং শীতজনিত সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীর ভিড় বেড়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ পূর্বাভাসে জানায়, আজ (বুধবার) দেশে সার্বিকভাবে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে, তাতে বাড়বে শীতের প্রকোপ। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলে হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পর দেশে তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
গতকাল শৈত্যপ্রবাহের পর্যায়ে তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে টাঙ্গাইলে ৯.৬, গোপালগঞ্জে ১০, রাজশাহীতে ১০.১, ঈশ্বরদীতে ৯.৮, রংপুরে ৯.৫, দিনাজপুরে ১০, সৈয়দপুরে ৯.৮, ডিমলায় ৯.৭, রাজারহাটে ৮.৫, যশোরে ৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৭.৩ ডিগ্রি সে.। তবে অধিকাংশ জেলায় দিনের তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রির নিচে নেমে যায়। এর ফলে শীতের তীব্রতা অধিক অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক একটি লঘুচাপ দক্ষিণ বাঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টর পূর্বাভাসে জানা গেছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
পাবনা, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ ও যশোর অঞ্চলসহ রাজশাহী বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলে বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এর পরের ৫ দিনে আবহাওয়ার তেমন কোন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
অন্যদিকে, নড়াইলে কনকনে শীতের মধ্যেই ভোরে শ্রমজীবি ও খেটে খাওয়া মানুষরা বেরিয়ে পড়ছে কাজের সন্ধানে। তবে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন বিরতির পর ময়মনসিংহে আবারো জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। কনকনে হিমেল হাওয়ায় আরো বেশি দুর্ভোগ বেড়েছে। তীব্র শীতে নাকাল হচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষ।
গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। কোল্ড ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নতুন নতুন রোগী। ঘনকুয়াশা ও হীমেল হাওয়ায় সিরাজগঞ্জে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় রোগবালাইসহ জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছে ছিন্নমূল ও যমুনা চরের মানুষ।
তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও প্রচন্ড শীত আর কনকনে ঠাÐা বাতাসে জবুথবু অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে লালমনিরহাটে। ভারী কুয়াশার সঙ্গে হিম বাতাসে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
নেত্রকোনায় ঘন কুয়াশা ও শৈত প্রবাহে জবুথবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সকালে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পাবনা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান : পাবনার সুজানগরে শীতের কারণে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মাসুদ রানা (৭) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার চরখলিলপুর গ্রামের আব্দুল মাজেদের পুত্র।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে মাসুদ রানা বাড়ির পাশের তার তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে খঁড়ে আগুন জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছিল। হঠাৎ আগুন তার গায়ের সোয়েটারে লেগে গেলে গায়ের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।