Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তীব্র শীতের কামড়

পৌষ-মাঘে দুই দফা প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ তাপমাত্রা ৪-৬ ডিগ্রিতে নামতে পারে

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৪ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

আসছে আরও তীব্র শীতের কামড়। চলতি জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) মাসে ২ থেকে ৩ দফা শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে সমগ্র বাংলাদেশ। এরমধ্যে দুইটি প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে। এ সময় তাপমাত্রার পারদ নেমে যেতে পারে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে। গতকাল শুক্রবারসহ দু’তিন দিন ধরে ‘শীত নামানো’ পৌষের অকাল বৃষ্টিপাতের পর শীতের তীব্রতা ক্রমেই বেড়ে যাবে। তাছাড়া এ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকা অঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র কুয়াশা পড়বে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের। অনেক সময় বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে দুপুরবেলা গড়িয়ে গেলেও।

আবহাওয়া অধিদপ্তরে বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় উপরোক্ত দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ। এ মাসে (পৌষ-মাঘ) দেশে ব্যাপক আকারে শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার কারণে বিরূপ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষা করতে বোরো ধানের বীজতলার বিশেষ যতœ নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায়। তাছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অপর এক সভায় শীতার্ত জনগণকে সুরক্ষা ও পাশে দাঁড়াতে আগাম পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জেলা-উপজেলা, স্বাস্থ্য বিভাগসহ মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দেয়া হয়।

এদিকে পৌষের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে গতকাল ঢাকা, চট্টগ্রামসহ প্রায় সারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবনে নানামুখী দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। অনেক স্থানে বৃষ্টির সাথে হিমেল কনকনে হাওয়া বয়ে যায়। আরেক দফা শৈত্যপ্রবাহের জানান দিচ্ছে অসময়ের এ বৃষ্টি। তবে কুয়াশা তেমন না থাকায় এবং মেঘলা আবহাওয়ার কারণে তাপমাত্রা ছিল বেশ উঁচুতে। এরফলে মানুষজন গত সপ্তাহের মতো শীতকষ্টে ভোগেননি। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১১.২, ঢাকায় ছিল ১৭, চট্টগ্রামে ১৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মেঘ-বৃষ্টি কেটে গেলে দাপট নিয়ে ফের আসবে তীব্র শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক আবহাওয়া-জলবায়ু সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে প্রাপ্ত আবহাওয়া তথ্যাদি, ঊর্ধ্বাকাশের আবহাওয়া বিন্যাস, বায়ুমন্ডলের বিভিন্ন স্তরের বিশ্লেষিত আবহাওয়া মানচিত্র, জলবায়ু মডেল, সিপিটি, নোয়া, এপেক জলবায়ু সংস্থা, বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্য-উপাত্ত, আবহাওয়া মানচিত্র, জলবায়ু মডেল, এল নিনো বা লা নিনা’র অবস্থা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করে উপরোক্ত পূর্বাভাস প্রদান করা হয়।
চলতি জানুয়ারি (পৌষ-মাঘ) মাসের পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, এ মাসে সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিক হার ও পরিমানের চেয়ে কিছুটা বেশিই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গত ডিসেম্বর ’১৯ (অগ্রহায়ণ-পৌষ) মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের তুলনায় ৪৩.৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার বৃষ্টিপাতেও ছিল এলাকাভেদে অস্বাভাবিক অসঙ্গতি। যেমন- বরিশাল বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৪.৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আবার রংপুর বিভাগে মাসজুড়ে আদৌ বৃষ্টিই ঝরেনি (একশ’ ভাগ কম)।

আর রাজশাহী বিভাগে ৮১.৭ ভাগ কম, ঢাকা বিভাগে ২৭.৮ ভাগ কম, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২.৬ ভাগ কম, ময়মনসিংহ বিভাগে প্রায় ৬০ ভাগ কম, সিলেট বিভাগে ৮৫.৪ ভাগ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে খুলনা বিভাগে স্বাভাবিকের কাছাকাছি (৪.১ ভাগ কম) বৃষ্টিপাত হয়। বিগত নভেম্বর ’১৯ (কার্তিক-অগ্রহায়ণ) মাসে দেশে গড় বৃষ্টিপাত হয় স্বাভাবিকের চেয়ে ১২০ দশমিক শতাংশই বেশি। বৃষ্টিপাতে ব্যাপক গড়মিল লক্ষ্য করা গেছে বিগত সালব্যাপী।

জানুয়ারির কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, এ মাসে দেশের দৈনিক গড় বাষ্পীভবন ২.২৫ থেকে ৩.২৫ মিলিমিটার এবং গড় সূর্য কিরণকাল ৬ থেকে ৭ ঘণ্টাকাল স্থায়ী থাকতে পারে।
এদিকে গত ডিসেম্বর ’১৯ (অগ্রহায়ণ-পৌষ) মাসে দেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উক্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় জানানো হয়, ডিসেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১.৪ ডিগ্রি এবং ০.৩ ডিগ্রি সে. কম ছিল।
পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাবে ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়। তাছাড়া পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে পূবালী বায়ু প্রবাহের সংমিশ্রনে ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের অধিকাংশ স্থানে এবং চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের প্রভাবে ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করায় ২৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ এবং ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া ও টাঙ্গাইল অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৪.৫ ডিগ্রি সে.। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বৃষ্টিপাতের দিন সংখ্যা, শৈত্যপ্রবাহ, কৃষি আবহাওয়া এবং দেশের নদ-নদীর অবস্থা ডিসেম্বর মাসের পূর্বাভাসের সাথে সংগতিপূর্ণ ছিল।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস সম্পর্কে জানানো হয়, ৩ থেকে ৫ জানুয়ারি সারাদেশে বৃষ্টিপাত হবে। এ সময় তাপমাত্রা ক্রমশ কমবে। ৬ জানুয়ারির পর থেকে দেশে আরেকটি তীব্র ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। ১০ জানুয়ারির পর মাসের মধ্যভাগে একটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। এ মাসের শেষের দিকে আসবে আরেকটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। তখন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে নেমে যেতে পারে। পূর্বাভাস অনুসারে এবার ঢাকাসহ মধ্যাঞ্চলে শীত ও কুয়াশার তীব্রতা বেশি থাকতে পারে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের দুর্যোগ প্রস্তুতি নিয়ে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে পৌষের তৃতীয় সপ্তাহের শেষে এসে গতকাল দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে করে অনেক শহর-নগর, হাট-বাজার, বন্দর-গঞ্জ, জেলা-উপজেলা, গ্রাম-জনপদে রীতিমতো বর্ষাকালীন অবস্থার সৃষ্টি হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় নোয়াখালীতে ৬১ মিলিমিটার।
এ সময় ঢাকায় ১৮, চট্টগ্রামে ১৫, সিলেটে ১৩, রাজশাহীতে ৯, রংপুরে ২, খুলনায় ২৩, বরিশালে ৩৪, ময়মনসিংহে ৯, গোপালগঞ্জে ২৫, রাঙ্গামাটিতে ১২, চাঁদপুরে ৩০, কুমিল্লায় ২৫, ফেনীতে ৪৭, বগুড়ায় ১২, তেঁতুলিয়ায় ৩০, মংলায় ৩৫, যশোরে ১৯, ভোলায় ৫০ মিলিমিটারসহ সমগ্র দেশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণ হয়েছে।
বৃষ্টিপাতের কারণে দিনের তাপমাত্রা আগের দুদিনের চেয়ে হ্রাস পায়। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২.৫, দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল ছিল টেকনাফে ২৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুধুই টেকনাফেই বৃষ্টিপাত হয়নি।

এদিকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা, খুলনা ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ক্রমান্বয়ে আবহাওয়ার অবস্থার উন্নতি (বৃষ্টি হ্রাস বা বন্ধ) হতে পারে।
এরপর রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। এর পরবর্তী ৫ দিনে আবহাওয়ার তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্তমানে পূবালী লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক একটি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, পৌষের শীতের সাথে অসময়ের বর্ষণে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের স্বাভাবিক জনজীবন মারাত্মক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল শেষরাত থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সর্বত্র হালকা থেকে মাঝারী বৃষ্টিপাতের পরে তা স্তিমিত হলেও দুপুর দেড়টা থেকে পুনরায় বর্ষণ চলছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বরিশালে প্রায় ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রার পারদ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও পৌষের এ বর্ষণে শীতের অনুভ‚তি যথেষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।
অসময়ের এ বর্ষণ দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ফসল আমনের জন্য বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। মাঠে থাকা পাকা ধান কাটা থেকে শুরু করে তার গুনগত মান নষ্ট হবার পাশাপাশি কর্তনকৃত ধান মাড়াই ও শুকানো নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন দক্ষিণাঞ্চলের চাষীরা।

কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সারা সপ্তাহের কাঁচা বাজার করে থাকেন। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া বাজারেও যথেষ্ট বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। জুমার আগে নির্বিঘেœ মসজিদে যেতে পারলেও নামাজ শেষে মুসল্লিরা ঘরে ফিরতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েন।
সড়ক ও নৌ যোগাযোগ কিছুটা স্থবির হলেও আকাশ পরিবহন স্বাভাবিক ছিল। বরিশাল বিমানবন্দরে রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহনসহ অপর দুটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের ৩টি ফ্লাইট নির্বিঘেœ চলেছে।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পৌষের অকাল ভারী বৃষ্টিতে কলাপাড়ার সর্বস্তরের মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে বৃষ্টির কারণে কৃষকের মাঠের মোটা ধান এবং উঠানে তোলা আমন ধানের গজ ফুটে যাওয়ার সন্ধ্যায় চোখে সর্ষে ফুল দেখছে কৃষকরা। গতকাল সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হলেও বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে দুর্ভোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
রবি শস্য চাষিরা লোকসানের ভাবনায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। মাঠের ডাল, মরিচ, তরমুজসহ সকল প্রকার রবিসশ্য অকাল বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে দ্রæত নিষ্কাশন না হওয়ায় কলাপাড়া পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট পানিতে তলিয়ে গেছে।

মংলা সংবাদদাতা জানান, মংলায় গতকাল সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। শহরে প্রয়োজন ছাড়া তেমন একটা লোকজন দেখা যায়নি। এ কারণে অধিকাংশ দোকান-পাট বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার সকালেও এখানে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হয়েছিল। বাতাস কম থাকায় পশুর নদী প্রায় স্বাভাবিক ছিল।
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, তেঁতুলিয়ায় গতকাল সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দুপুর থেকেই শুরু হয় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। তার সাথে ছিল হিমেল হাওয়া। প্রচন্ড শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অসময়ের বৃষ্টিতে ইট ভাটাগুলোর অধিকাংশ কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ভাটাগুলোর প্রায় ১৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভাটা মালিকরা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ