পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন গৃহবধূ। আজ থেকে ৩৮ বছর আগে তিনি রাজনীতিতে যোগদান করেছেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর বেগম জিয়া ১৯৮২ সালে ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এইচ এম এরশাদ বিএনপির প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।
বেগম জিয়া এর প্রতিবাদ করেন। দলের নেতাকর্মীদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বেগম জিয়া ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিতসভায় তিনি প্রথম বক্তৃতা করেন। বিচারপতি আবদুস সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ মে দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হন। স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করে আপোষহীন নেত্রীর খেতাব পান বেগম জিয়া। ১৯৮৩ সালের বেগম জিয়ার নেতৃত্বে সাত দলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়। একই সময় এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। বেগম জিয়া প্রথমে বিএনপিকে নিয়ে ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ৭ দলীয় ঐক্যজোটের মাধ্যমে রাজপথে এরশাদবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। একই সময় তার নেতৃত্বে সাত দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন পনের দলের সাথে যৌথভাবে আন্দোলনের কর্মস‚চি শুরু করে।
১৯৮৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফা আন্দোলন চলতে থাকে। কিন্তু ১৯৮৬ সালের ২১ মার্চ রাতে হঠাৎ আওয়ামী লীগ এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে বাঁধার সৃষ্টি হয়। ১৫ দল ভেঙে ৮ দল ও ৫ দল হয়। ৮ দল নির্বাচনে যায়। এরপর বেগম জিয়ার নেতৃত্বে ৭ দল, পাঁচ দলীয় ঐক্যজোট আন্দোলন চালায় এবং নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। ১৯৮৭ সাল থেকে খালেদা জিয়া ‘এরশাদ হটাও’ এক দফার আন্দোলন শুরু করেন। এর ফলে এরশাদ সংসদ ভেঙে দিতে বাধ্য হন।
পুনরায় শুরু হয় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। অবশেষে দীর্ঘ আট বছর একটানা নিরলস ও আপোষহীন সংগ্রামের পর ১৯৯০ সালে এরশাদের পতন হয়। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি সরকার গঠন করে এবং বেগম জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। সেই নির্বাচনে খালেদা জিয়া মোট পাঁচটি আসনে অংশ নিয়ে পাঁচটিতেই জয়লাভ করেন।
বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয়বার ও ২০০১ সালে জোটগতভাবে নির্বাচন করে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন।
খালেদা জিয়া দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) দুবার চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচনের ইতিহাসে খালেদা জিয়ার একটি অনন্য রেকর্ড হচ্ছে- পাঁচটি সংসদ নির্বাচনে ২৩ আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে সব কটিতে তিনিই জয়ী হয়েছেন। অর্থাৎ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে তিনি কোনো কখনোই পরাজিত হননি। এমন নজীর অন্যদের ক্ষেত্রে নেই।
সেনাসমর্থিত ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়াকে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘদিন কারাবাসের পর তিনি আইনি লড়াই করে সব কটি মামলায় জামিন নিয়ে মুক্তিপান। কারাগারে থাকাকালে তাকে বিদেশে নির্বাসনে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি যেতে অস্বীকার করেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হন। খালেদা জিয়ার অভিযোগ, বলপ্রয়োগে তাকে বাসা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তিনি ওই বাড়িটিতে ২৮ বছর ছিলেন। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্দুস সাত্তার সেনানিবাসের বাড়িটি তার নামে বরাদ্দ দিয়েছিলেন।
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়ে পরের বছর ১১ সেপ্টেম্বর তিনি হাইকোর্টের আদেশে মুক্তিপান। ২০১৮ সালের ৮ মার্চ একটি মামলায় খালেদা জিয়ার কারাদন্ড হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। বন্দি জীবনেও তিনি আপোষহীন নেত্রী হিসেবে দেশের কোটি কোটি মানুষের কাছে সমাদৃত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।