Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এনপিআর তালিকা থেকে মুসলমানদের উৎসব বাদ

বিজেপিকে একঘরে করার আহ্বান মমতার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার বা এনপিআর-এর নির্দেশিকায় বাদ দেয়া হয়েছে মুসলমানদের উৎসবের দিন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই এনপিআর ২০২০ তালিকা থেকে মুসলিমদের উৎসবে ছুটি বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে তালিকায় রয়েছে অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবের ছুটির দিন। এদিকে, ‘গোটা দেশে বিজেপিকে একঘরে’ করার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মর্মে শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলই নয়, দেশের নাগরিক সমাজকেও রাস্তায় নামার অনুরোধ করেছেন তিনি।

এনপিআর-এর নির্দেশিকা থেকে মুসলমানদের উৎসব বাদ দেয়ার বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, এনপিআর তথ্যের সময় নাগরিকদের জন্ম-মাস (ইংরেজি ক্যালেন্ডার) মনে করাতেই এই পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, এনপিআর ২০২০ সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকার পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদে ‘গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব’ সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। সেখানেই নাগরিকের জন্ম তারিখ তথ্য জোগাড় করার সময়ে কী কী করণীয়, তা উল্লেখ রয়েছে। যা অনুযায়ী, কোনও নাগরিকের পূর্ণ জন্মতারিখ, শুধু জন্ম মাস, ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জন্ম তারিখ, স্থানীয় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জন্ম তারিখ জানা না থাকলে কী করণীয়, তার উল্লেখ রয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনও নাগরিক যদি জন্মতারিখ উল্লেখ করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে এনপিআর কর্মকর্তা জানতে চাইবেন, যে কোন ঋতুতে জন্ম সংশ্লিষ্ট নাগরিকের জন্ম হয়েছে। যদি ওই নাগরিকের উত্তর বর্ষা হয়, তবে কর্মকর্তা জানতে চাইবেন, কোনও উৎসবের কাছাকাছি সময়ে তার জন্ম হয়েছে- যেমন, প্রজাতন্ত্র দিবস, মহা শিবরাত্রী, রাম নবমী, পোঙ্গল, মকর সংক্রান্তি, গুড ফ্রাইডে, মহাবীর জয়ন্তী ইত্যাদি। এভাবেই জন্মতারিখ মনে না রাখা নাগরিকের জন্ম-তথ্য জোগাড় করা হয়।

বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করা হচ্ছে, এই তালিকা থেকে ইচ্ছাকৃতভাবেই মুসলিমদের উৎসবের দিনকে বাদ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর আগে ২০১১ সালেও এনপিআর তালিকাতেও মুসলিম উৎসবে ছুটির দিনের উল্লেখ ছিল না।
এদিকে, কলকাতার পর নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এবার লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে যাওয়া পুরুলিয়া দিয়েই জেলাসফর শুরু করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনআরসি, সিএএ-এর প্রতিবাদে পুরুলিয়া টাউনে ৫ কিলোমিটারের মিছিল এসে ‘গোটা দেশে বিজেপি-কে একঘরে’ করার আহŸান করলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।

মমতা বলেন, ‘বৈধভাবে এদেশে বসবাসকারী নাগরিকদের নাগরকত্ব কেড়ে নিতে চাইছে বিজেপি। সবার কাছে আমার অনুরোধ, একজোট হয়ে বিজেপি-কেই গোটা দেশে একঘরে করে দিন।’ তিনি বলেন, ‘এনআরসি বাতিল না হলে আমি আন্দোলন থামাব না। আপনারা শুধু ভোটার লিস্টে নাম রয়েছে কিনা দেখে নিন। বাকিটা আমি দেখে নেব। বাংলা থেকে কাউকে তাড়াতে দেব না। দেশ থেকে তাড়াতে দেব না।’

অন্যদিকে, দেশজুড়ে বিক্ষোভের মধ্যেই এবার সিএএ’র সমর্থনে ডিজিটাল প্রচারে নামলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিজের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট, টুইটার থেকে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের স্বপক্ষে বক্তব্য পোস্ট করা শুরু করেছেন তিনি। নরেন্দ্র মোদি অ্যাপের মাধ্যমেও একই প্রচার চলছে। পাশাপাশি নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে সদগুরুর এক ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি।

গতকাল এনআরসি ও ক্যাবের বিরোধিতায় শামিল হলেন মতুয়া সম্প্রদায়। গতকাল বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর বøকের তেতুলিয়া ফুটবল মাঠ থেকে সীমান্ত লাগোয়া মালঙ্গ পাড়ার ফুটবল মাঠ পর্যন্ত পদযাত্রায় কাসর ও নিশান নিয়ে মিছিলে পা মেলান তারা। স্বরূপনগর বøকের মতুয়া সম্প্রদায় সম্পাদক গোপাল বিশ্বাস ও সভাপতি দিলীপ বিশ্বাস মিছিল থেকে এনআরসি ও ক্যাবের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। মিছিলে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি বীনা মন্ডল ও বিশিষ্ট তৃণমূল নেতা রমেন সরদার-সহ অন্যান্যরা। সূত্র : টিওআই, এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিজেপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ