পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘন কুয়াশা পড়ছে। বেশিরভাগ সময়েই আকাশ মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন। কোথাও কোথাও হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত। সেই সাথে উত্তুরের কনকনে হিমেল হাওয়া বইছে দেশের সর্বত্র। এ অবস্থায় শীতকষ্ট অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বিস্তার লাভ করছে শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল দিনাজপুরে ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কুয়াশা, মেঘমালা ও বাতাসের আর্দ্রতার হার (৮০ শতাংশ) অত্যধিক বেশি থাকায় রাতের সর্বনি¤œ তাপমাত্রার সাথে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদও নিচের দিকে অবস্থান করছে।
ঢাকার তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ১৩.১ এবং সর্বোচ্চ ২০.৭ ডিগ্রি সে.। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ২৫ ডিগ্রি সে.। রংপুর-রাজশাহী তথা দেশের উত্তরাঞ্চল জুড়ে এবং চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ ১০ ডিগ্রির নিচে রয়েছে।
তাছাড়া গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, সিলেট, তাড়াশসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ বর্ষণ হয় নেত্রকোনায় ৬ মিলিমিটার। উত্তর জনপদে অনেক জায়গায় গুঁড়িবৃষ্টির মতোই কুয়াশা পড়ছে। কর্মমুখী মানুষের দুঃখ-দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।
অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এরপরের ৫ দিনে রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
বরিশাল : দক্ষিণাঞ্চলের স্বাভাবিক জনজীবন থেকে শুরু করে শীতকালীন সবজি ও প্রধান রবি ফসল বোরো ধানের বীজতলা ব্যাপক ক্ষতির কবলে পড়তে যাচ্ছে। কুয়াশা আর অসময়ের বৃষ্টিপাতে দক্ষিণাঞ্চলের নৌ, সড়ক ও আকাশ পরিবহন ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে ঘন ঘন।
ঠান্ডাজনিত কারনে নিউমোনিয়া সহ ব্যাপক সর্দিÑকাশি ও জ¦রের কবলে পড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বিশেষকরে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এ বৈরী আবহাওয়া ঝুঁকি বয়ে আনছে। সরকারীÑবেসরকারী হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের ভীড় ক্রমশ বাড়ছে। গত তিনদিন ধরে দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে সূর্যের দেখা নেই। এর সাথে অসময়ের বৃষ্টিপাতে পরিস্থিতি আরো নাজুক। বরিশালে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ১১.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে জনজীবনে চরম বিপর্যয় নেমে আসে।
বৃহস্পতিবার বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ১২ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে শুক্রবার সকালে ১৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৃদ্ধি পেলেও শণিবার তা আবার ১৩ ডিগ্রিতে নেমে গেছে। পৌষের প্রথমভাগের এ বর্ষণ দক্ষিণাঞ্চলের উঠতি আমন ফসলের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় সষ্টি করছে। মাঠে থাকা ফসল তোলা থেকে শুরু করে ঘরে তোলা ফসল শুকাতে গিয়েও চরম বিপাকে পড়ছেন চাষিরা।
অসময়ের বর্ষনের সাথে ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরী’র কবলে পড়ছে। ফলে এবার বোরো আবাদ নিয়েও কৃষকদের চরম সঙ্কটে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগণ। কুয়াশার কারনে ফুলকপি ও বাঁধা কপির গায়ে কালো দাগ পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য শাক-সবজির উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশায় দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীণ প্রায় ২০টি নৌপথ ছাড়াও বরিশালের সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও মোংলা-খুলনা নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। রাত বাড়ার সাথে কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা পড়ছে মেঘনা অববাহিকার নৌপথগুলো। ফলে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে নৌযানগুলো চলাচল করছে। শুধুমাত্র বরিশালÑঢাকা নৌপথের হাতে গোনা কয়েকটি বেসরকারী যাত্রীবাহী নৌযান ছাড়া সিংহভাগ নৌযানেই কোন রাডার ও জিপিআরএস না থাকায় নৌযানগুলো চলছে সীমাহীন ঝুকির মধ্যে।
কুয়াশার কারনে বরিশালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমান বন্দরে ফ্লাইট পরিচালন ব্যাহত হচ্ছে গত কয়েকদিন ধরে। শনিবার নির্ধরিত সময়র প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে বেসরকারী নভো এয়ারের একটি ফ্লাইট বরিশাল বিমান বন্দরে অবতরন করতে গিয়ে ঘন কুয়াশার সাথে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় মারাত্মক ঝুঁকির কবলে পড়ে। দু দফার চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে তৃতীয় দফায় রানওয়েতে সদ্য সংজোযিত ‘পাপি লাইট’এর ওপর নির্ভর করে ৭৪ জন যাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি বরিশাল বিমান বন্দরে অবতরনে সক্ষম হয়।
দিনাজপুর : শনিবার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে। এই রেকর্ড সকাল ৬টায় করা হয়। তবে সকাল ৮ টার পরপরই কাংখিত সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়তে থাকে। গত কয়েকদিনের লাগাতার শ্বৈত প্রবাহের পর সূর্যের তাপ পেয়ে মানুষ বাহির বের হয়ে আসে। পরে থাকা কাজ সেরে ফেলতে বাজার থেকে ক্ষেত খামারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে নারী পুরুষেরা। রৌদ্রের তাপের স্বাদ নিতে মানুষ ফাকা জায়গায় স্থান করে নেয়। কিন্তু দুপুর গড়াতেই শুরু হয় হিমেল বাতাস। তারপরেও রৌদ্রতাপের কারনে সাধারন মানুষ বাতাসকে উপেক্ষা করে কাজে মনোযোগ দেয়।
এদিকে গত কয়েকদিন থেকে বয়ে যাওয়া ঘন কুয়াশায় বোরো বীজতলা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষকেরা মত প্রকাশ করেছে
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে টানা শীতের প্রকোপে জনজীবনে স্তবিরতা নেমে এসেছে। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা। এদের বেশির ভাগই ডায়েরিয়া ও শ^াসকষ্টজনিত রোগে আকান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অপরদিকে আলু ও বীজতলা নিয়ে আশংকায় রয়েছেন কৃষকরা। শীত ও হিমেল ঠান্ডা হাওয়ার কারণে বীজতলার ক্ষতি না হয়। এদিকে তীব্র ঠান্ডার কারণে কষ্ট হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের। এছাড়াও শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে সাধারণ দুস্থরা। শনিবার কুড়িগ্রামে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
বামনা(বরগুনা) : বরগুনার বামনা গত কয়েক দিন ধরে শৈত্য প্রবাহে জন জীবন বিপর্যায় হয়ে পরেছে। খেটে খাওয়া মানুষ পারছেনা কোন কাজ করতে। এর ফলে সংসারে দেখে দিয়েছে অভাব অনাটন। উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিষখালী নদীর তীরবর্তী মানুষগুলো হাটু কাপা শীতে নানান রোগে অসুস্থ হয়ে পরেছে। গত কয়েকেদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছেনা এ উপজেলায়। হাটে বাজারে দেখা মিলছেনা সাধারণ মানুষের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।