বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে ঐতিহ্যবাহি রাজশাহী কলেজের দু’দিনব্যাপি এইচএসসি অ্যালামনাই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান গতকাল থেকে শুরু হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর পদচারণায় মুখরিত ক্যাম্পাস। সকালে বিশাল র্যালির পর এর উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিপুমনি বলেন, দেশের ১৩টি শতবর্ষী কলেজকে তিনি শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চান। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন তিনি করবেন। স্বাধীণতার পর অনেকটা সময় আমরা নষ্ট করেছি। সামরিক শাসন, স্বৈরশাসনের ভেতর আমাদের গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রাম করতে হয়েছে। এখন দেশে গণতন্ত্র রয়েছে। এখন সময় এসেছে শিক্ষার মানের দিকে নজর দেয়ার। আমরা শতবর্ষী ১৩টি কলেজকে সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে করা হবে। তিনি বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত কাজ করব। সে সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়নও করব। শিক্ষার পরিবেশ হবে আনন্দময়। পড়াশোনার চাপে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে যেন আনন্দ হারিয়ে না যায় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।
শিক্ষকদের গবেষণার ওপর জোর দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকরা গবেষণা কার্যক্রম আরও বেশি জোরদার করবেন। দেশে গবেষণা হয়, কিন্তু ভাষার দুর্বলতায় সেগুলো আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশ হয় না। স্বীকৃতি আসে না। গবেষণার জন্য শুধু বরাদ্দ দিলেই হবে না, তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেই ভাষাগত দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করতে হবে। ডা. দীপু মনি এ সময় দেশসেরা রাজশাহী কলেজের প্রশংসা করেন। বলেন, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে এ কলেজে এসে মুগ্ধ হবেন না। ভাষার জন্য প্রথম আন্দোলন এখানে, প্রথম শহীদ মিনার এ কলেজেই। বাঙালীর সব আন্দোলন-সংগ্রামে এ কলেজের অবদান অনস্বীকার্য।
মন্ত্রী বলেন, এ কলেজ বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া, ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকার, কবি রজনীকান্ত সেন, চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক, ভারতীয় রাজনীতির পুরোধা জ্যোতি বসু, বিচারপতি হাবিবুর রহমানের কলেজ। সংসদে এ কলেজ থেকে পাস করা একজন মন্ত্রী আছেন, একজন হুইপ আছেন, আটজন সংসদ সদস্য আছেন। নির্বাচন কমিশনার এ কলেজের ছাত্র। ১৪৭ বছরের ইতিহাসে রাজশাহী কলেজ অসংখ্য গুণিজন তৈরি করেছে। দেশ-বিদেশে তারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তাদের মতো আরও অনেক গুণিজন এ কলেজ থেকে তৈরি হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংয়ে পর পর তিনবার দেশসেরা হয়েছে রাজশাহী কলেজ। কলেজের যেসব সমস্যা আছে সেগুলো দূর করা হবে। এখানে আরও একটা ছাত্রীনিবাস খুব প্রয়োজন। প্রশাসন ভবনেরও দরকার। অচিরেই এখানে দশতলা ছাত্রীনিবাস হবে। প্রশাসন ভবনও করে দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, নাটোর-৪ আসনের এমপি আবদুল কুদ্দুস, রাজশাহীর সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা এবং সিনিয়র অ্যালামনাস ডা. এসএএ বারী। সভাপতিত্ব করেন কলেজ অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে অ্যালামনাইয়ের উদ্বোধন করেন। অ্যালামনাই উপলক্ষে সকালে কলেজ চত্ত্বর থেকে নগরীতে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি, কলেজের শিক্ষক এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। দেশে রাজশাহী কলেজেই প্রথমবারের মতো এইচএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অ্যালামনাই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠান শেষ হবে শনিবার। দুই দিনের এ আয়োজনে খরচ হচ্ছে দুই কোটি টাকারও বেশি। অংশ নিয়েছেন এইচএসসি ব্যাচের সাবেক ৯ হাজার শিক্ষার্থী। থাকছেন এক হাজার অতিথিও। সাবেক শিক্ষার্থীরা বহুদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে এসে খুঁজে পেয়েছেন পুরনো বন্ধুদের। গল্প-আড্ডায় মেতে উঠেছেন সবাই।
অ্যালামনাই উপলক্ষে কলেজের সাজসজ্জাও চোখে পড়ার মতো। ৩৫ একরের পুরো ক্যাম্পাসের সবখানেই উৎসবের ছোঁয়া। কলেজের মাঠে প্রশাসন ভবনের আদলে তৈরি করা হয়েছে বিশালাকার এক মঞ্চ। প্রাক্তন শিক্ষার্থী কবি রজনীকান্ত সেনের নামে মঞ্চের নাম দেয়া হয়েছে ‘রজনীকান্ত মঞ্চ’। দু’দিন ধরে এ মঞ্ছে থাকছে আলোচনা, স্মৃতিচারণ, ছাত্রাবাসের স্মৃতিচারণ, সাংষ্কৃতিক সন্ধ্যা, আতসবাজিসহ নানা আয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।