Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্তন ক্যন্সার প্রতিরোধে সচেতনতা

ডাঃ মাহমুদুল হাসান সরদার | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৭:২১ পিএম

কেস স্টাডি ১. নাম প্রকাশ করছিনা । খবরটি আৎকে দেওয়ার মতো দেশের ্একজন নামকরা চিকিৎসক এবং ওনার স্ত্রীও একজন নামকরা চিকিৎসক । দু’জনের কর্মব্যস্ততায় দেশের সবচেয়ে বড় মেবিকেল কলেজটি যেন প্রাণবন্ত হয়ে উঠত।কিন্ত একদিন প্রিয়তমা স্ত্রীর স্তনে টিউমারের কথা শুনে হঠাৎই চমকে গেলেন ডাক্তার । সাথে সাথেই স্ত্রীকে গালমন্দ করলেন এবং এর বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব করলেন না।

কেন স্টাডি ২.সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা উর্মি। বি সি এস পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ভীষণ ব্যস্ত। অনেক দিন ধরেই তার বা স্তনটা ব্যথা করছে কিন্তুসে দিকে তার খেয়াল নেই। এখাবে বেশ কয়েকদিন তার কেটে গেল । কিন্তু পরীক্ষার দিন আসতেই তার বা স্তনে প্রচন্ড ব্যথা । হাসপাতালে চেকআপ করতে গেলেই মারাত্নক অবস্থা ধরা পড়ে । এখন তার চিকিৎসা জরুরী । উপরোক্ত দু’টো বিষয়ই লক্ষ্য করলে বুঝা যায় এখানে অবহেলার মারাত্নক ঘাটতি রয়েছে । এই অবহেলাই জীবনকে করে তোলে বিভীষিকাময় । চিকিৎসা বিদ্যায় স্তন জনিত সমস্যাকে রোগ না বলে ক্যান্সার বলে অবহিত করা হয়। তাই একে অবহেলা না করে একটু সচেতন হলে এর থেকে সুস্থ্য থাকা য়ায় সহজেই। নিম্নে স্তন ক্যান্সার ও এর সচেতনতা সমপর্কে ধারনা দেওয়া হলো :
স্তন ক্যান্সারে নারী মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ৩৫ বছরের বেশি বয়সী মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। একটু সচেতন হলেই এ ক্যান্সার রোধ করা সম্ভব। তাই এ ব্যাপারে প্রতিটি নারীর সচেতন হওয়া জরুরি।
যারা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন
* যাদের বয়স পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব।
* কম বয়সে ঋতুবতী হওয়া অথবা দেরিতে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া।
* ৩০ বছরের পর প্রথম সন্তান লাভ অথবা নিঃসন্তান।
* যাদের শরীরের ওজন বেশি।
* চর্বিজাতীয় খাদ্য বেশি-বেশি গ্রহণ ও শাকসবজি কম গ্রহণ করে থাকলে।
* শিশুকে বুকের দুধ যারা দেন না।
* যারা মদ পান করেন
রোগ নির্ণয়
* নিজের স্তন পরীক্ষা করা
প্রত্যেক মহিলার উচিত প্রতি মাসে একদিন স্তন নিজ হাত দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা।
* স্তনের ডাক্তারি পরীক্ষা
স্তনে চাকা বা গোটা হওয়া, স্তনের চামড়া মোটা হওয়া, স্তন ফুলে যাওয়া, স্তনের কোনো অংশে ডোবা দেখা দেয়া, স্তনের আকারে বিকৃতি দেখা দেয়া, স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে সেঁধিয়ে যাওয়া, স্তনে ব্যথা, স্তনবৃন্ত স্পর্শে ব্যথা, স্তনের বোঁটা থেকে অস্বাভাবিক নিঃসরণ, বিশেষ করে রক্তযুক্ত নিঃসরণ। আর এ লক্ষণগুলোর একটি অথবা একাধিক যদি দিনের পর দিন দেখা যেতে থাকে তাহলে স্তন ক্যান্সার হয়েছে বলে সন্দেহ করা উচিত।
* ম্যামোগ্রাফি
স্তনের এক্স-রে পরীক্ষার মাধ্যমে চাকা বা পিন্ড আছে কিনা তা দেখার ব্যবস্থা আছে।
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা
* শল্য চিকিৎসা অর্থাৎ স্তন কেটে বাদ দেয়া অথবা স্তন এবং আরও কিছু অংশবিশেষসহ অপারেশন করতে হয়।
* বিকিরণ চিকিৎসা বা রেডিওথেরাপি
* কেমোথেরাপি বা ক্যান্সার বিধ্বংসী ওষুধ।
স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক প্রতিরোধ
কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা কিছু কিছু স্তন ক্যান্সারকে প্রতিরোধ করতে পারব।
* বিয়ে-শাদি এবং প্রথম সন্তান ৩০ বছরের আগেই সম্পন্ন করতে হবে।
*পরিমিত আহার ও হালকা ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে হালকা-পাতলা রাখতে হবে।
*অতিরিক্তি চর্বিজাতীয় খাদ্য কম করে খেতে হবে এবং শাকসবজি বেশি খেতে হবে। * মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে।স্তন ক্যান্সারকে যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করা যায় তাহলে বাদবাকি জীবন সুস্থ্য থাকা সম্ভব এবং এভাবেই আমরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্তন ক্যান্সারকে প্রতিহত করতে পারি। আমরা নিজেরাই স্তন ক্যান্সার গোড়াতেই ধরে ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি, যদি আমরা এ ব্যাপারে একটু সচেতন হই। নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করার অভ্যাস করতে হবে।

ক্যান্সার চিকিৎসক
সরদার হোমিও হল, ২১ গ্রীণ কর্ণার, গ্রীন রোড, ঢাকা।
সেল -০১৭৪৭৫০৫৯৫৫।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্তন ক্যন্সার
আরও পড়ুন