Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শৈত্যপ্রবাহ-ঘনকুয়াশায় জেঁকে বসেছে শীত

দিনাজপুরে সর্বনিম্ন ৫.৮

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে সর্বত্র। দুদিন সূর্যের মুখ দেখা যাওয়ায় শীত কিছুটা কমলেও শৈত্য প্রবাহের কারণে এক রকম অপরিবর্তিতই হয়ে আছে শীতের অবস্থা। আর ডিসেম্বরের শেষে শীতের তীব্রতা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চারপাশ ছেঁয়ে আছে ঘনকুয়াশায়। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ। আজ বৃহস্পতিবার কিংবা আগামীকাল সম্ভাবনা রয়েছে বৃষ্টির।

দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তোফাজ্জল হোসেন জানান, গতকাল বুধবার ভোরে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সকালে সূর্যের দেখা মেলায় তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। এটাই চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। দু’এক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে তিনি জানান। তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় কুয়াশা ও হিমালয়ের হিম বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশে পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সংবাদদাতাদের এ সংক্রান্ত পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন :

রাজশাহী ব্যুরো জানায় : রাজশাহীতে গতকাল মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে আসে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনভর নিরুত্তাপ সূর্য কিরণ আর কালো মেঘের লুকোচুরি ছিল আকাশ জুড়ে। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় দুভোর্র্গ বেড়েছে ছিন্নমুল মানুষের। হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, গড়ে প্রতিদিন শীতজনিত রোগে রোগীর সংখ্যা শতাধিক।

দিনাজপুর অফিস জানায় : দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে সর্বনিম্ন এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দিন ও রাত সমানভাবে শীত অনুভ‚ত হয়ে আসছে। দিনের বেলা সূর্যের মুখও দেখতে পায়নি এ অঞ্চলের মানুষ গত কয়েকদিন ধরেই।

হালিম আনছারী, রংপুর থেকে জানান : এক টানা ৬ দিন ধরে শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকায় শীতের তীব্রতা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে বেলা ১১/১২টা পর্যন্ত বৃষ্টির মত কুয়াশা ঝরছে। ঘন কুয়াশা আর সে সাথে প্রচন্ড হিমেল হাওয়ায় মানুষসহ পশু-পাখি জুবুথুবু হয়ে পড়েছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে কেউ যাচ্ছে না। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই মানুষ ঘরে ঢুকে কাঁথা-কম্বল গায়ে জড়িয়ে থাকছে। স্থবিরতা নেমে এসেছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায়। ঘন কুয়াশা আর প্রচন্ড হিমেল হাওয়ার কারনে মানুষ ক্ষেতে-খামারে কাজ করতে পারছে না।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : গতকাল সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ছিল ৬.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা সারা দেশের সর্বনি¤œ তাপ মাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়। প্রচন্ড শীতে বয়স্ক ও শিশুদের চলাফেরা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অব্যাহত শীত হিমালয়ের হিমেল হাওয়ায় শৈত্য প্রবাহে রুপ নিয়েছে।

তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রাজিউল করিম জানান শীতজনিত কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা, ঘন কুশায়া আর কনকনে হিমেল বাতাসে হাজার হাজার দুস্থ, অসহায় মানুষ নিদারুন কষ্টে পড়েছেন। শীতবস্ত্রের অভাবে চরম বেকায় পড়েছে মানুষ। এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে সৈয়দপুর-ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে সবকটি বিমানের ফ্লাইট সিডিউলে মেনে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এই রুটে প্রতিদিন বাংলাদেশ বিমানের দুইটি ছাড়াও বেসরকারি বিমানসংস্থার মিলে ১০টি ফ্লাইট চলাচল করে।

পৌষের শুরু থেকে প্রচন্ড শীত অনুভূত হচ্ছে সৈয়দপুরসহ আশপাশের এলাকায়। গতকাল বুধবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রী তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই এবারে শীত মৌসুমে এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তীব্র শীতের প্রকোপে মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। শরীরে হুঁল ফোটানো শীতে শিশু, বয়স্ক মানুষগুলো একেবারে কাহিল হয়ে পড়েছে। আক্রান্তরা শীতে প্রকোপে বিশেষ করে শ্বাষকষ্ট, এ্যাজমা আক্রান্তরা কষ্ট পাচ্ছেন। আর এ সব আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও সর্দি জ্বর, কাশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্তরা হাসপাতালে ছুঁটে আসছেন। তবে গতকাল বুধবার পর্যন্ত এ সব রোগে কতজন মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তা সঠিক সংখ্যা পাওয়া যায়নি।

সৈয়দপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আবু হাসনাত সরকার জানান, গতকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে দুই দফায় তিন হাজার ৪৬০পিস কম্বল বরাদ্দ মিলেছে। যা ইতোমধ্যে ইউপি ও পৈৗরসভা জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীতার্তদের মাঝে বিলিবন্টন করা হয়েছে। তিনি দুস্থ ও অসহায় মানুষের জন্য আরো ছয় হাজার পিস কম্বলের জন্য দুর্যোগ,ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। চাহিদা থেকে কত পিস শীতবস্ত্র কিংবা কবে নাগাদ চাহিদাকৃত শীতবস্ত্র মিলবে তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

ঈশ্বরদী (পাবনা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : গত এক সপ্তাহের টানা শৈতপ্রবাহ অনেকটায় দুর্বল হলেও শীতের প্রকোপ বেড়েছে বহুগুণ। হাসপাতালে বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যায় বেশী।

ঈশ্বরদী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাক্তার শফিকুল ইসলাম শামীম জানান, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশীর ভাগ মানুষ। গত কয়েক দিনে দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেছে। প্রতিদিনই নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ