মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ঠিকই চিনেছেন আমাদের বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদি। জামা কাপড় সাজসজ্জা দেখেই তিনি বুঝতে পেরেছেন গোটা দেশজুড়ে কারা ‘গণ্ডগোল’ করছে। তিনি বুঝে ফেলেছেন এনআরসি, সিএএ বানচাল করতে কারা নেমেছে রাস্তায়। টিভির পর্দায় চলমান ছবি আর খবরের কাগজে রঙিন স্থিরচিত্র দেখেই প্রধানমন্ত্রী বুঝে নিয়েছেন, তারা মুসলমান। ঝাড়খণ্ডে এক নির্বাচনী সভায় মোদি বলেছিলেন, ‘আগুন কারা লাগাচ্ছে, সেটা তাদের পোশাক দেখলেই চেনা যায়।’ তিনি বলেন, ‘আমার ভাই ও বোনেরা, এই যে দেশে আগুন লাগানো হচ্ছে, টেলিভিশনে যে সব ছবি আসছে সেগুলো কি আপনারা দেখেছেন? আগুন কারা লাগাচ্ছে, সেটা কিন্তু তাদের পোশাক দেখলেই চিনতে পারা যায়!’ কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলো এতে উসকানি দিচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন। বিরোধীরা অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে একটি বিশেষ ধর্মের মানুষের প্রতি সাম্প্রদায়িক আক্রমণ হিসেবেই চিহ্নিত করছেন। এনআরসি, সিএএ বিরোধী আন্দোলন খুব স্বাভাবিক কারণেই পছন্দ নয় নরেন্দ্র মোদির। তার ওপর সেই প্রতিবাদ যদি হয় মুসলমানদের। তবে তার বা অন্য কারো পছন্দ হোক বা না হোক, এ কথাটা সত্যি যে এটা তো মুসলমানদেরই লড়াই। এ লড়াই তাদেরই লড়তে হবে। মুসলমানরাই লড়ছেন। দেয়ালের লেখা সঠিকভাবে পড়ে ভারতীয় মুসলমানরা আজ নিজের প্রতিবাদ নিজে করার সংকল্প নিয়ে পথে বেরিয়েছেন। তাদের অধিকার রক্ষার লড়াইটা অন্য কেউ লড়ে দেবে, সেই ভরসায় আর বসে নেই মুসলমান। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর থেকে কোনো কিছুতেই মুসলমান যেন নিস্পৃহতা কাটছিল না। মুসলমানের বিরুদ্ধে যাবতীয় অন্যায়ের প্রতিবাদ করার দায় যেন উদার ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দুদের। তেমনটাই চলে আসছিল। মুম্বই আর গুজরাটের ভয়াবহ দাঙ্গা, তারও পরে উত্তর প্রদেশের পর পর ঘটে যাওয়া মুসলমান নিধনের ঘটনাগুলোর পরেও তেমন করে প্রতিবাদ করেনি মুসলমান। এমনকী ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া বাবরি মসজিদের ওপর রাম মন্দির নির্মাণের যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিল, তার বিরুদ্ধেও কোনো সোচ্চার প্রতিবাদ মুসলমানদের তরফ থেকে চোখে পড়েনি। গোরক্ষার নামে তুচ্ছ কারণে একটার পর একটা গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। তারও প্রতিবাদ করেনি মুসলমান। বিজেপি নেতারা দিনের পর দিন মুসলিম বিরোধী মন্তব্য করে চলেছেন। এবং নিশ্চিতভাবেই তাতে দলের ওপর মহলের অনুমোদন থাকে। তারও কোনো প্রতিবাদ হয়নি। প্রতিবাদ যা হয়েছে সবই ভারতের উদার হিন্দু বা ধর্মহীন ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে। ভারতীয় মুসলমান যেন ভুলতে বসেছিল প্রতিবাদের ভাষা। অথচ গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সময়ে মুসলমানদের ঠেলতে ঠেলতে খাদের কানায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। হয় তাকে প্রবল শক্তিতে নিজের ক্ষমতায় নিরাপদ জায়গায় ফিরতে হবে নয়তো খাদে পড়ে মরতে হবে। এমন একটা জায়গায় পৌঁছে তার প্রতিবাদে গর্জে ওঠা ছাড়া উপায় ছিল না। এই প্রতিবাদ দেখে কেবল বিজেপি নেতা মন্ত্রীরা নন, বহু সাধারণ মানুষও বলতে শুরু করেছে, নতুন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বা এনআরসিতে মুসলমাদের উল্লেখ পর্যন্ত নেই, ‘ওদের’ এত ভয় পাওয়ার কী হয়েছে? কী আশ্চর্য! নতুন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা নাগরিকপঞ্জীর পরিণাম জানার পরও যদি কেউ ভয় না পায় তাহলে তার বোধ-বুদ্ধির বিকাশ বা মনুষ্যত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যতই বলুন, নতুন সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জী মুসলমানদের লক্ষ্য করে করা হয়নি, সে আশ্বাস কোনো যুক্তিতেই ধোপে টেঁকে না। কারণ অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই বলে চলেছেন, গোটা দেশেই এনআরসি হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।