Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হেমন্ত জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মোদি-মমতার অভিনন্দন

ঝাড়খন্ডে বিজেপির পতন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে পতন হলো বিজেপি সরকারের। নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করে সেখানে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ও রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)-এর তিনদলীয় জোট। নির্বাচনে নিজেদের হার স্বীকার করে নিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতা তথা ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। অভিনন্দন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায়ও।

ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট আসন ৮১। এর মধ্যে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) ৩০টি কংগ্রেস ১৫টি রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ১টি, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২৫টি, অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আজসু) ৩, ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চা (জেভিএম) ৩, জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ) ০ ও অন্যান্য ৪টি আসন পেয়েছে।

গতকাল সোমবার, ভোট গণনার শুরু থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শুরু হয়েছিল। কিন্তু, বেলা যত গড়াতে থাকে ততই ভোটের ফলাফল জোট শিবিরের দিকেই ঝুঁকে পড়তে শুরু করে। আর তাতেই ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে যায় পালাবদলের ইঙ্গিত। ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় মোট আসন ৮১টি। সরকার গড়তে প্রয়োজন ৪১। এ দিন ফলাফল স্পষ্ট হতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেই জোট শিবিরের উল্লাসের ছবি দেখা গিয়েছে। কোথাও জেএমএম ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মিষ্টিমুখ শুরু হয়ে যায়। আবার কোথাও বাজি পোড়াতে শুরু করেন কংগ্রেস ও জেএমএম সমর্থকরা। ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বুথফেরত সমীক্ষাগুলির বেশির ভাগই এ বার বিজেপির থেকে কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোটকেই এগিয়ে রেখেছিল। রাজ্যের একক গরিষ্ঠ দল হয়েছে হেমন্ত সোরেনের জেএমএম।

জয়ের জন্য জনগণকে ধন্যবাদ দিয়েছেন জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন। তিনি বলেন, ‘ এই জয় ঝাড়খণ্ডের মানুষের উৎসাহের দিন। আজকের দিনটা আমরা জন্য নতুন প্রতিজ্ঞার দিন।’ এদিকে, হার স্বীকার করলেন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। নিজের কেন্দ্রেও তিনি কয়েক হাজার ভোটে হেরে গিয়েছেন।

ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনে নিজেদের হার স্বীকার করে নিয়ে বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতা তথা ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় টুইট করে মোদি বলেন, ‘ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে জয়ের জন্য হেমন্ত সোরেনজি, জেএমএম এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটকে অভিনন্দন।’ তিনি আরও লেখেন, ‘বিগত কয়েক বছর আমাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য ঝাড়খণ্ডের মানুষকে আন্তরিক ধন্যবাদ। বিজেপির সব কর্মকর্তাকেও অভিনন্দন জানাই।’

মোদির এই বার্তার কিছুক্ষণ আগেই টুইটে বার্তা দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। মোদির সুরেই তিনিও ঝাড়খণ্ডের মানুষদের ধন্যবাদ জানান। তবে বিজেপি নেতৃত্ব মুখে সাহসিকতার পরিচয় দিলেও, গত এক বছরের মধ্যে এই নিয়ে পঞ্চম রাজ্যটি হাতছাড়ার পর তারা যে হতাশ, তা বলাই বাহুল্য।

আরজেডি, কংগ্রেস এবং জেএমএম জোটকে টুইট করে শুভেচ্ছা জানালেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০০০ সালে গঠিত ঝাড়খণ্ড রাজ্য গত মাসেই ২০ বছরে পা দিয়েছে। এটি রাজ্যের চতুর্থ বিধানসভা নির্বাচন। এ দিন সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে জোট থেকে শিবসেনা সরে যাওয়ায় ক্ষমতা থেকেও সরতে হয়েছে বিজেপিকে। ৩০ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দফায় ভোটগ্রহণ হয় ঝাড়খণ্ডে।

বিদায়ী বিধানসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে গত পাঁচ বছর রাজ্য শাসন করেছে বিজেপি। কিন্তু এ বারের বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছিল, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-কংগ্রেস-আরজেডি জোট বেশি আসন পাবে বিজেপির থেকে। এমনকি বর্তমান বিরোধী জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে সমীক্ষার ইঙ্গিত ছিল।

২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির জোটসঙ্গী ছিল আজসু (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন)। এ বার তারা আলাদা ভাবে লড়েছে। দলের সভাপতি সুদেশ মাহাতো বলে রেখেছেন, ভোটের পর পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা জোট এবং জোটসঙ্গীর কথা ভাববেন।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ঝাড়খণ্ডে বিজেপি জিতেছিল ৩৭ আসনে। জোটসঙ্গী আজসু পেয়েছিল পাঁচটি আসন। ম্যাজিক ফিগারের থেকে একটি আসন বেশি ছিল জোটের। কিন্তু ২০১৫-র গোড়াতেই জেভিএমের ছয় বিধায়ক বিজেপিতে চলে আসার পর, বিজেপি একাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যায় বিধানসভায়। ঝাড়খণ্ডের ইতিহাসে সেই প্রথম, বিধানসভায় একা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় কোনও দল। এবং এই প্রথম কোনও একজন (রঘুবর দাস) টানা পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রীর আসনে থেকে মেয়াদ শেষ করলেন।

রাজ্য গঠনের পর থেকেই ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক অচলাবস্থা বারংবার ফিরে এসেছে। জোট ভেঙেছে। নতুন জোট হয়েছে বার বার। তিন বার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে। ২০ বছরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন ৬ জন। কেউ কেউ দু’বার। মোট ১০ বার শপথ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীদের। কিন্তু রঘুবরের আগে, কোনও মুখ্যমন্ত্রী আড়াই বছর পর্যন্তও টিকে থাকতে পারেননি। সূত্র : টিওআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

 

 



 

Show all comments
  • MD Bahar Uddin ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
    বিজেপি নিপাত যাক, মুদি ও অমিত চরম সাম্প্রদায়িক নেতা, ভারতীয় হিন্দুদের উচিত মুদি বা অমিত সরকারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া নৈতিক দায়িত্ব ....
    Total Reply(0) Reply
  • MZ Hossain ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৭ এএম says : 0
    পতনের শুরু !!!
    Total Reply(0) Reply
  • Alamgir Chowdhury ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
    পতন শুরু।
    Total Reply(0) Reply
  • Sujata Souradipta Biswas ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৮ এএম says : 0
    ঝাড়খন্ডে বিজেপির হার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সময় এসেছে " জাত নয় সাধারণ মানুষ ভাত চায়"।
    Total Reply(0) Reply
  • Tahsin Hasan Imran ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 0
    বিজেপির পতন খুব সন্নিকটে
    Total Reply(0) Reply
  • Swapon Farooq Omar ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
    মুসলিম বিদ্বেষী আইনই মোদীর পতনের অন্যতম কারন হতে পারে ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nurul Amin ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ। এখন মোদি চুরির মতলব আঁটবে। সবার সাবধান হওয়া দরকার। ভারতের শান্তি প্রিয় জনগণ আরএসএস-বিজেপি আর চায় না।
    Total Reply(0) Reply
  • SQ Islam ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
    ট্রাম্প-মোদি-সুচি-নেতানিয়াহু হচ্ছে শয়তানের অক্ষচক্র। ট্রাম্প পতনের দ্বারপ্রান্তে, সুচি কাঠগড়ায়, নেতানিয়াহু পরাজিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিজেপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ