Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শীতে কাঁপছে দেশ

শীতবস্ত্রের অভাবে কনকনে ঠান্ডায় ভুগছেন হতদরিদ্ররা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

মৃদু ও মাঝারী শৈত্য প্রবাহে সারাদেশে বিপর্যস্ত জনজীবন। পৌষের শুরুতেই কনকনে শীতে কাপছে পুরো দেশ। হিমালয়ের পাদদেশ উত্তরের গ্রামীণ জনপদে শীতের তীব্রতার সঙ্গে ঘন কুয়াশা আর শিরশিরে হাওয়ায় কাহিল অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষের। কয়েকদিন ধরে কয়েকটি জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। অভিন্ন চিত্র রাজধানী ঢাকায়। কোথাও কোথাও হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ বিমান ও নৌ-রুটে সিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। শীতবস্ত্রের অভাবে কনকনে ঠান্ডায় ভুগছেন হতদরিদ্ররা। ঠান্ডাজনিত রোগ বালাইয়ে নাকাল শিশু ও বৃদ্ধরা। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে চারপাশ। কৃষিবিদরা শৈত্য প্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থনীতিবিদরা শীত দীর্ঘ হলে অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে আগামী এক মাসে আরো দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির হলেই ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকেই নতুন করে শুরু হবে শৈত্যপ্রবাহ। শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে দেশের তাপমাত্রার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু অঞ্চলে অবনতি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গতকাল রোববার ফের রাজশাহী, পাবনা, যশোর, তেঁতুলিয়া ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে আগামী দুই দিন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে শীতের অনুভ‚তি থেকেই যেতে পারে।
গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যশোরে, ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর ছাড়াও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া অন্য অঞ্চলগুলোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি, তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ঈশ্বরদীতে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও রাজশাহীতে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যশোর থেকে মিজানুর রহমান তোতা, রাজশাহী থেকে রেজাউল করিম রাজু, খুলনা থেকে আবু হেনা মুক্তি, সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন, চট্টগ্রাম থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম, কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুনসহ জেলা ও উপজেলা সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত :
চট্টগ্রাম : তীব্র শীতে জনজীবনের সাথে বিপর্যস্ত বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের সার্বিক-ব্যবসা বাণিজ্য, পণ্য পরিবহন। ঠান্ডায় কাবু কর্মজীবী মানুষ। বিশেষ করে শ্রমজীবী আর দিনমজুরদের অবস্থা এখন কাহিল। কর্মঘণ্টা কমে যাওয়ায় তাদের আয়-রোজগারও কমে গেছে।
দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচলও কমে গেছে। আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। দূরপাল্লার বাসের শিডিউলও এলোমেলো। কর্তফুলীর ১৬টি ঘাট এবং চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙর থেকে নৌপথে পণ্য পরিবহনও স্থবির হয়ে পড়েছে। নগরীর সদরঘাট, মাঝিরঘাট, মাদারবাড়িসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক এলাকায় পণ্য উঠানামা আর গুদামজাত করার কাজেও অচলাবস্থা চলছে।
দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছদগঞ্জেও স্থবিরতা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রচন্ড শীতের কারণে বেচাকেনা থমকে গেছে। শীতে কাবু শ্রমিকেরাও পণ্য উঠা-নামার কাজ করতে গিয়ে কাহিল হয়ে পড়ছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, রাতে এবং সকালে কুয়াশার কারণে সড়ক মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। একই অবস্থা নৌপথেও। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে লাইটারেজ, কার্গো জাহাজ যোগে আমদানি পণ্য এবং জ্বালানি তেল পরিবহন কমে গেছে।
নগরীর কদমতলী ও মাদারবাড়ি থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক পণ্য পরিবহন করে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। পণ্য উঠানামার কাজে ব্যস্ত থাকে কয়েকশ শ্রমিক। সেখানেও এখন কর্মব্যস্ততা নেই। হকার, ফুটপাতের ক্ষুদে ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে। গরম কাপড়ের কিছু দোকান ছাড়া ফুটপাতের দোকানে নেই ক্রেতা। ক্ষুদে ব্যবসায়ও এখন চরম মন্দা। শীতকালীন শাকসবজি পরিবহন ব্যাহত হওয়ায় কৃষকরা হতাশ। ক্ষেতের ফসল ক্ষেতে থেকে যাচ্ছে। এতে লোকসান গুণছেন চাষী ও খামারিরা।
এদিকে শীতের সাথে ঘনকুয়াশা আর ধুলাবালির কারণে বাড়ছে রোগ ব্যাধী। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত কারণে অসুস্থদের সংখ্যা বাড়ছে। চমেক হাসপাতালে স্বাভাবিকের চেয়ে রোগী বেড়েছে। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও সেবিকাদের।
রাজশাহী : শীতের কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে পুুরো রাজশাহী। মৃদু শৈত্য প্রবাহে শীতের প্রকোপ বেড়েই চলেছে দিন দিন। ফলে মানুষের পাশাপাশি এখন পশু-পাখি শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। ভোর থেকে প্রধান সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে। দিন-রাত সমানতালে বইছে হিমালয় ছুঁয়ে আসা হিমেল হাওয়া।
গতকাল তাপমাত্রা নেমেছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনদিন মেঘলা আকাশ থাকার পর গতকাল দুপুরে ক্ষনিকের জন্য সূর্য উঁকি দিয়ে আবার হারিয়ে যায়। আবহাওয়া অফিসার আনোয়ারা বেগম বলেন, গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহীতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২১ ডিসেম্বর তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় শীত জনিত রো ব্যাধিও বেড়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর ভীড়। সবচেয়ে বেকায়দায় পড়েছে দিন খেটে খাওয়া মানুষ। কাজ না পাওয়া মানেই অনাহার অর্ধাহার।
যশোর : রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস বিরাজ করছে যশোরে। কনকনে শীতে বিপর্যস্ত জেলার জনজীবন। গত ক’দিনে প্রচন্ড শীত, ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘিœত হয়। আবহাওয়া দপ্তর জানায়, যশোরে ৯.০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, এটি এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন। ঠান্ডার পাশাপাশি হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় তীব্র শীত অনুভুত হচ্ছে। সবজি ও খেুজুরের রস গুড়, ফুল, মাছের রেণু পোনা রেকর্ডসৃষ্টির যশোরে সংশ্লিষ্ট কাজকর্ম করতে পারছেন না। এতে অর্থনীতির বিরাট ক্ষতি হচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. আকতারুজ্জামান দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, শৈত্য প্রবাহের সময় বীজতলা স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধা পর্যন্ত ঢেকে দেওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের। বীজতলার চারা হলুদ হয়ে গেলে প্রতি শতক জমিতে ২৮০ গ্রাম হারে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। রোপণের পর শৈত্য প্রবাহ হলে জমিতে ৫-৭ সেন্টিমিটার পানি ধরে রাখতে হবে।
খুলনা : শীতের পোশাক পরেও ঠক ঠক করে কাঁপছে মানুষ। সন্ধ্যার পরে শহরের অলিগলিতে আগুন জ্বেলে চলে হাত-পা সেঁকেছে মানুষ। রাত একটু গড়াতেই রাস্তা-ঘাট হয়ে পড়ে সুনসান। গত কয়েক দিন ধরে খুলনায় এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। শীতের তীব্রতায় কাহিল হয়ে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ। সকালে পথের ধারে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষদের। ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। প্রচন্ড শীতে মানুষের পাশাপাশি গৃহপালিত পশু-পাখিও কষ্ট পাচ্ছে।
সিলেট : ঘন কুয়াশায় মোড়ানো আকাশ। আলতো হাওয়া বইছে প্রকৃতিতে। যে সময়ে থাকে কাঠ ফাটা রোদ। সেই দুপুরেও সিলেটে নেই সূর্যের আলো। ঘন কুয়াশায় সিলেটে দুপুরেও পরিলক্ষিত হচ্ছে ভোরের চিত্র। আবহাওয়া অধিদফতর থেকে জানা গেছে, এবার শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গত শনিবার রাতে। এদিন সকাল ৯টায় সিলেটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রী। সেই সঙ্গে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ভোররাত ৩ টার দিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রী। এরপর ভোর ৬টায় ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এরপর সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রী রেকর্ড করা হয়। এটাই এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এদিকে কনকনে শীত ও কুয়াশার কারণে বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। হতদরিদ্র নিম্নআয়ের দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষজনের আয়-রোজগারের ক্ষেত্রেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব।
কুমিল্লা : পৌষের হাড় কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে কুমিল্লার জনজীবন। গত মঙ্গলবার থেকে কুমিল্লায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে কর্মব্যস্ত মানুষ ছুটছে নানা ঠিকানায়। তাতে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে ভোগার ঝুঁকিও বাডছে জনজীবনে। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়া আকাশে সুর্যের দেখা মিলছেনা। কুমিল্লায় গত দুইদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শীত এতোটাই জেঁকে বসেছে যে সড়ক মহাসড়কে কুয়াশা মোড়া দিনে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের উপর মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ায় জন-জীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অতিরিক্ত ঠান্ডায় কুড়িগ্রাম জেলার জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগী।
লালমনিরহাট : ঘন কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহে কাপছে লালমনিরহাটের মানুষ। প্রকট শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দিনের বেলা মেঘাছন্ন আকাশে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো ঝড়ছে শিশির। কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেলে হাওয়া। সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগের কবলে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকার ৩৩টি চরের মানুষজন।
পঞ্চগড় : হিমালয়ের হিমশীতল বাতাস ও ঘনকুয়াশায় বিপর্যস্ত অসহায় দরিদ্র দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। গত তিন দিন ধরে প্রচন্ড শীত পড়েছে। তীব্র শীত আর কনকনে ঠান্ডা বাতাসের কারণে পঞ্চগড়ের গরিব, দুস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দরিদ্র মানুষরা শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে। হাড় কাঁপানো শীতে এলাকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়েছে। রাতে বৃষ্টির মত শিশির পড়ছে। দিনমজুর, শ্রমিক, রিক্সাচালক শীতবস্ত্রের অভাবে কাজে যেতে পারছে না। শহরে লোকজনের উপস্থিতি ও রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। শহরের ফুটপাতসহ লেপ-তোষক ও শীতবস্ত্রের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে গেছে।
গাইবান্ধা : শীতকালে সাধারণত বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতের তীব্রতা কমে। তবে গত কয়েকদিন থেকে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে গাইবান্ধায় যেন ঘটছে এর উল্টো। বেলা যত বাড়ে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ে। এতে করে দুর্বিষহ কষ্ট দেখা দিয়েছে ছিন্নম‚ল মানুষদের মধ্যে। ঘনকুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত কয়েকদিনে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গায় দিনদিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় তীব্র ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। কমছে তাপমাত্রা। গতকাল সকালে চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে পুরো জেলা। ক্রমেই বাড়ছে শীতের প্রকোপ। দুর্ভোগ-দুর্দশা বাড়ছে ছিন্নম‚ল মানুষের। শীতে বেশি কষ্টে আছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। এছাড়াও শ্রমজীবী মানুষদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) : টানা তিন দিন ধরে শৈত্য প্রবাহের কারণে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রবি সরিষা ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রচন্ড ঠান্ডায় সরিষা ফুলের পাঁপড়ি পচে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ইরি বোরো ধানের বীজ তলা কোল্ড ইঞ্জুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে চাষীরা চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন।
ঈশ্বরদী (পাবনা) : বৃদ্ধি পেয়েছে শীতের প্রকোপ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জন জীবন। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। আজ ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। হাসপাতালে ঠান্ডা জনিত রুগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যায় বেশি।



 

Show all comments
  • Shohidul Islam ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৬ এএম says : 0
    আমাদের চার পাশে অনেক শির্তাতো মানুশে আছে বির্তবানদের এগিয়ে আশা উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • MD Rasel Miah ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৭ এএম says : 0
    আল্লাহ সকলে বিপদ থেকে রখা করুন আমিন
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুর রহমান ইবনে সাঈদ ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৭ এএম says : 0
    কুড়িগ্রামে গত ৭ দিন থেকে সূর্য উঠছেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Balal Uddin ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৭ এএম says : 0
    আল্লাহ সবাইকে শীতের সমস্ত বিপদ হতে রক্ষা করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Masud ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৭ এএম says : 0
    এত শীত কেন আমার মনে হয় বিএনপি'র হাত আছে। নিশ্চিত এটা বিএনপি'র চক্রান্ত।
    Total Reply(0) Reply
  • Azizul Aziz ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৮ এএম says : 0
    হাড় কাঁপানো শীতের খবর পড়ার সময় আপনার গায়ে উষ্ণ জামা নেই
    Total Reply(0) Reply
  • Nayem Khan ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৮ এএম says : 0
    হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে গোটা দেশ৷ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের গরিব মানুষেরা শীতে নাকাল ৷ আমাদের সামান্য সহযোগিতা এনে দিতে পারে কনকনে শীতে কাঁচা ঘর ও ভাঙ্গা ঝুপড়ীতে বসবাসকারী মানুষগুলোর একটুখানি উষ্ণতা ৷ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন "আল্লাহ তায়ালা সেই বান্দাকে সহযোগিতা করেন যে তার ভাইকে সহযোগিতা করে"৷ তাই আসুন আমরা শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই৷ তাদের কষ্টকে আমরাও ভাগ করে নিই৷
    Total Reply(0) Reply
  • MD Azizul Haque ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৯ এএম says : 0
    শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abdul Udod Bahar ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:২৯ এএম says : 0
    শিতে কাপছে গোটা দেশ এবং শিতকে বয় পাচ্ছে গোটা দেশের মানুষ কিন্তু এই শিতে বয় পাচ্ছে যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে তাদেরকে দেখলেই শিতে দৌড়ে পালাই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ