Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শীতবস্ত্রের বেচাকেনা বৃদ্ধি বিপাকে দরিদ্র মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

পৌষের ৩য় দিনে হঠাৎই তাপমাত্রার পারদ নেমে বগুড়া, রংপুর রাজশাহী বিভাগসহ উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে বাড়লো শীতের প্রকোপ। গত বছর গুলোর তুলনায় এ বছর ভিন্ন মাত্রায় শীত পড়তে শুরু করেছে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে হিমালয়ের হিমেল হাওয়া শৈত্য প্রবাহে রুপ নিয়েছে। কনকনে শীতে বদলাতে শুরু করেছে প্রকৃতির রুপ। দিনের বেলা দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। রাতভর ঘনকুয়াশা ও শিশির কণাগুলো বৃষ্টির মত ঝরতে থাকে। শীতে একেবারে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে এ জনপদে। প্রচন্ড ঠান্ডার সাথে সম্ভাবনা রয়েছে তাপমাত্রা আরো কমার। শীতের তীব্রতা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন তথ্য :
বগুড়া ব্যুরো জানায় : শীত বাড়ায় বাজারে বিক্রি বেড়েছে গরম কাপড়, কম্বল, লেপ তোষকের। হকার্স মাকের্েেট কেনাবেচার হার অনেক বেশি। কম্বল বিক্রেতা শাজাহান জানালেন , ডিসেম্বর থেকে কম্বলের পসরা সাজিয়ে দোকানে বসে থাকলেও বেচা বিক্রি ছিলনা । শীত নামায় বেচা বিক্রি অনেক বেড়েছে।
শীতের তীব্রতার কারণে শহরে লোকজনের চলাচল বেশ কম ছিল। বগুড়া শহরে রিক্সাওয়ালারা যাত্রী পেয়েছে কম। হাট বাজার মানুষের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে। মোট কথা হঠাৎ শীতের আগমনে জনজীবন ছিল স্থবির।

শীত ও তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে চাইলে বগুড়া আবহাওয়া অফিসের পক্ষে রবিউল ইসলাম জানালেন, মঙ্গলবার যেখানে তাপমাত্রা ছিল মিনিমাম ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বুধবার তা’ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে ১৩ তে নেমেছে। এই অফিসে কর্মরত আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মোহাম্মদ সজিব হোসাইন জানান , পৌষ ও মাঘ এই দুমাসইতো শীতের মওশুম। শীততো নামতেই হবে ,তাই বলা যায় ঠিক সময়েই শীত নামলো।

বুধবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখা যায় যায়, মঙ্গল ও বুধবার রংপুরের তাপমাত্রা আজও ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির রয়েছে। এদিন ময়মনসিংহে ১৪ দশমিক ৬ থেকে কমে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহীতে ১৪ দশমিক ৩ থেকে কমে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে স্থির রয়েছে। দিনাজপুর অঞ্চলে আগে থেকেই শীত নেমেছে ।

সৈয়দপুর (নীলফামারী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : হিমালয়ের খুব কাছের এলাকা সৈয়দপুর হওয়ায় শীত টা একটু জেঁকেই বসে এ অঞ্চলে। হঠাৎ ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা না পাওয়ায় গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষদের। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা সারা নীলফামারী জেলার অভাবী মানুষজন শীত নিবারণের জন্য খড় কুটো জ্বালিয়ে অব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

পুরাতন শীত বস্ত্রের বাজারে গরম কাপড় ক্রয় করতে আসা এক ক্রেতা জানালেন, অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেশী গরীব ও অসহায়। গত বছর যে সোয়েটারের মূল্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা, সে সোয়েটার বর্তমানে ক্রয় করতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। পুরুষ মানুষের একটি জ্যাকেট বা একটি ভাল সোয়েটারের মূল্য ছিল ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। কিন্তু তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। ক্ষোভ প্রকাশ করে ঐ ক্রেতা আরো বলেন, শীত বেশি পড়ায় শীতবস্ত্র ব্যবসায়ীরা লাভ কম হওয়ার কথা বলে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : অগ্রাহায়ণ মাস থেকে হালকা শীত পড়তে শুরু করলেও পৌষের শুরু থেকেই শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। হিমালয়ের খুব কাছে হওয়ার কারণে শীত মৌসুমে জনদুর্ভোগ বেড়ে যায় অনেক বেশী। তবে শীত মোকাবেলায় সরকারী বরাদ্দের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ৫ হাজার কম্বল এসেছে। বিত্তবান ব্যাক্তি ও বেসরকারী সংস্থা গুলোকে শীতার্তদের পাশে এগিয়ে শুরু করেছে।

তেঁতুলিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া জানান, তেঁতুলিয়ায় দিনদিন শীতের তীব্রতা বাড়ছে। অসহায় ও ছিন্নমুল মানুষের তুলনায় সরকারি ভাবে যা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। আরো শীত বস্ত্রের জন্য বিত্ত¡বান ও এনজিও প্রতিনিধিদের এগিয়ে আশারও আহবান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল আলম জানান, দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে তেঁতুলিয়ায় শীতের তীব্রতা বেশিই। শীতার্ত মানুষের জন্য ইতিমধ্যে আমরা ৫ হাজার কম্বল পেয়েছি সেগুলোর বিতরণ কার্যক্রম চলছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আরো কম্বলের চাহিদা পাঠানো হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শীত

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
৬ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ