পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জামিন আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে যাওয়ায় জামিন পাননি বেগম খালেদা জিয়া। আদালতের মাধ্যমে তাঁকে মুক্ত করা যাবে আইনজীবীদের স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে আদালতের দিকেই তাকিয়ে আছে দলটির সিনিয়র নেতারা। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সিনিয়র নেতাদের আন্দোলন বিমুখতায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়ে সরকার প্রধানের বক্তব্যের পরও আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণ না করায় কেন্দ্রের প্রতি হতাশ হয়েছেন তারা। শিগগিরই বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা চায় দলটির মধ্যম সারির নেতা এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদল নেতা মামুন খান বলেন, শুধু শব্দ বোমা আর নিজেদের লোকদের সাথে ছবি তুলে বা ধাক্কাধাক্কি করা মিছিলের ভিডিও ক্লিপ দিয়ে এই মসনদের কিছুই করা যাবেনা! হাইকোর্ট তো ঐ মসনদের সাব ডিভিশন! সর্বশক্তি নিয়ে রাজপথে নামার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাহলেই বন্ধ হবে বিচারের নামে এই প্রহসন। খালেদা জিয়াকে ছেড়ে দিয়ে পালাবে এই প্রশাসন! তানভীর আহমেদ নামে ছাত্রদলের আরেক নেতা বলেন, আমি মনে করি এটা বিএনপির নীতিনির্ধারকদের ব্যর্থতা। কেন না বিগত দশ বছর আগেই আইনের শাসন উঠে গেছে সেখানে তারা আদালতের দিকে চেয়ে বসে আছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছে। সুতরাং রাজনৈতিকভাবেই সেটা মোকাবিলা করতে হবে। কেবল আদালতের মাধ্যমে দেশনেত্রীর মুক্তি আসবে না।
অবশ্য বিএনপির সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন যে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে মুক্ত করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রবীণ আইনজীবী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তবুও দলীয় প্রধানের জামিনের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতের দিকেই তাকিয়ে ছিলেন দলটির নেতাকর্মীরা। বিএনপির আইনজীবী ও সিনিয়র নেতাদের ধারণা ছিল যে, শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনায় নিয়ে মানবিক কারণে হলেও আদালত বেগম জিয়াকে জামিন দেবেন। কিন্তু বিএনপির সে আশায় গুঢ়ে বালি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ মেডিকেল রিপোর্ট জমা দেয়ার পর আদালত তা পর্যালোচনা শেষে জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে দলটির আইনজীবী ও নেতাকর্মীরা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করেছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা জানান, বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায়। তারা মনে করেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের বিকল্প নেই। তাদের অভিযোগ- বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে সরকারের ‘নিয়ন্ত্রণাধীন’। বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি। তাকে জামিন না দিয়ে বারবার জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে। এমতাবস্থায় আন্দোলনই একমাত্র পথ। অবশ্য দলীয় প্রধানের মুক্তির জন্য রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব সহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, দলের নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্ত ও কৌশল প্রণয়নে তারা ক্ষুব্ধ।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির এক নেতা বলেন, দলের সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের একজন সমর্থক পর্যন্ত জানে আদালতের মাধ্যমে দেশনেত্রীর মুক্তি সম্ভব হবে না। কিন্তু তারপরও আমাদের নেতারা আদালতের দিকেই তাকিয়ে থাকেন কেনো তা বুঝে আসে না।
মাদারীপুরের শিবচর থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান বলেন, আমরা আদালতের সিদ্ধান্তে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। আওয়ামী সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বন্দী করেছে। আদালত একটি গোষ্ঠীকে খুশি করতেই দেশনেত্রীর জামিন আবেদন খারিজ করেছে। অথচ আদালত চাইলেই মানবিক কারণে ৭৫ বছর বয়স্কা একজন নারীকে জামিন দিতে পারতেন। সুতরাং এখনই সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিৎ ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্দ্ধে উঠে তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে সাথে নিয়ে নেত্রীমুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করা। সেইসাথে বিএনপিতে সুবিধাবাদী নেতাদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান চালানো উচিৎ।
ঢাকার পার্শবর্তী দুইটি জেলার সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা বেগম জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে জীবন দিতেও প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু সিনিয়র নেতারা তাদের সম্পদ রক্ষা ও সরকারের সাথে আঁতাতের কারণে বেগম জিয়ার দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী রয়েছেন। সিনিয়র নেতারা শুধু সভা-সমাবেশে হুঙ্কার ছাড়লেও বাস্তবে কোনো প্রতিফলন নেই। তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, বেগম জিয়ার মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য হলেও কোনো কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়নি। আমার সন্দেহ হয় যে বিএনপির সিনিয়র নেতারা কি আদৌ বেগম জিয়ার মুক্তি চান?
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তো আইনি প্রক্রিয়ায় আটক না। তাকে যে মামলায় আটক করা হয়েছে সেটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং যেভাবে দেশনেত্রীকে আটক রাখা হয়েছে সেটিও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে। সুতরাং এর রাজনৈতিক সমাধানের জন্য যে প্রক্রিয়া প্রয়োজন সেই প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই।
কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল আউয়াল খান বলেন, আমাদের সিনিয়র নেতারা হুঙ্কার দিলেও আন্দোলনের রূপরেখা এখনো আমরা পায়নি। সুতরাং মিটিং-সমাবেশে হুঙ্কার না দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক একটি কর্মসূচি প্রয়োজন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা সর্বাত্মক প্রস্তুত আছে।
সিলেট বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, নেতাকর্মীরা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।আমরা অপেক্ষা করছি কেন্দ্র থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য কি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি মোঃ গোলাম সরোয়ার বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র নেই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, সেখানে কেউ যদি মনে করে আদালতের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে পারবে তাহলে সেটা হবে বোকামি। আমরা সেই অবস্থাও সৃষ্টি করতে পারিনি যে, বিচার বিভাগ চাপ অনুভব করবে এবং ন্যায় বিচার করবে। এখন দুর্বার গণআন্দোলন ছাড়া বেগম জিয়াকে মুক্ত করা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই বলে তিনি মনে করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিপ্লব ছাড়া ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয় না। কেননা ফ্যাসিস্টরা কৌশল হিসেবে রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর ভর করে নিজেদের সুরক্ষা অটুট রেখে দেশ শাসন করে। সুতরাং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে দুর্বার গণআন্দোলনের বিকল্প নেই। ###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।