Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফ্রান্সে ব্যাপক সংঘর্ষ, স্মরণকালের বড় ধর্মঘটের ডাক

পেনশন সংস্কার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১১:৫৭ এএম

ফ্রান্সে সরকারি অবসর ভাতা কামানোর প্রতিবাদে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৭০ জনকে। কর্মবিরতি পালন করছে পুলিশ, আইনজীবী, হাসপাতাল কর্মী, স্কুল ও পরিবহন কর্মীসহ ৮ লাখেরও বেশি মানুষ। বন্ধ হয়ে পড়েছে রেল ও মেট্রো চলাচল। বাতিল হয় শতাধিক ফ্লাইট। বন্ধ রাখা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ কর্মবিরতিতে বিভিন্ন স্থানে মিছিল হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে পুলিশ।
কিছু ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁর যতক্ষণ না পেনশন সংস্কারের ব্যবস্থাটি বাতিল করছেন ততক্ষণ তাদের আন্দোলন চলবে। একটি মতামত জরিপে দেখা গেছে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সের ৬৯ শতাংশ জনগণ ধর্মঘটের পক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী সমর্থন দিয়েছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর প্রস্তাবিত সার্বজনীন পয়েন্টভিত্তিক পেনশন ব্যবস্থাপনায় নারাজ বিভিন্ন ইউনিয়ন কয়েক বছরের মধ্যে ফ্রান্সজুড়ে সবচেয়ে বড় সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। দেরিতে অবসর কিংবা কম পেনশন নিতে বাধ্য করার প্রতিবাদে পেশাজীবী ও শ্রমিকদের ডাকা এ ধর্মঘটে ফ্রান্সজুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ধর্মঘটে পুলিশ, আইনজীবী, হাসপাতাল ও বিমানবন্দরের কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক এবং পরিবহন শ্রমিকরাও অংশ নিতে যাচ্ছে বলে জানায় বিবিসি।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করলেও তা জনদুর্ভোগ হ্রাসে সেগুলো খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারবে না বলেই অনুমান করা হচ্ছে। শিল্প খাতের শ্রমিকদের ধর্মঘট বৃহস্পতিবারের পরও চলতে পারে বলে বেশকিছু ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা আভাস দিয়েছেন। পেনশন ব্যবস্থাপনার সংস্কার নিয়ে ম্যাক্রো তার প্রস্তাব প্রত্যাহার করা না পর্যন্তও এ ধর্মঘট চলতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা। ধর্মঘটের পক্ষে ৬৯ শতাংশ নাগরিকের সমর্থন আছে বলে এক জনমত জরিপে দেখা গেছে।
১৯৯৫ সালেও পেনশন ব্যবস্থা সংস্কারের এক প্রস্তাবের বিপক্ষে ইউরোপের এ দেশটিতে টানা তিন সপ্তাহের ধর্মঘট হয়। দেশজুড়ে পরিবহন ব্যবস্থা অকেজো করে দেয়া ওই ধর্মঘটে জনগণের বিপুল সমর্থন থাকায় তৎকালীন সরকার তাদের সংস্কার প্রস্তাব থেকে পরে সরে আসে। বৃহস্পতিবারের ধর্মঘট শুরুর আগে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্তেনার বলেন, ধর্মঘট চলাকালে দেশের অন্তত আড়াইশ স্থানে বিক্ষোভ হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। এর মধ্যে কিছু প্রতিবাদ সহিংস হতে পারে বলে আশঙ্কা তার।
অসংখ্য মানুষ এসব প্রতিবাদে অংশ নেবেন এবং আমরা জানি ঝুঁকিগুলো কী। আমি অনুরোধ করেছি, যেসব জায়গায় দাঙ্গা বা সহিংসতার ঘটনা ঘটবে, সেখানে যেন নিয়ম মেনে দাঙ্গাকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধর্মঘটে অংশ নেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান ইয়োলো ভেস্ট আন্দোলনে অংশ নেয়া অনেক বিক্ষোভকারীও। বাসচালক ও ট্রেন কর্মীদের মতো পরিবহন খাতে সক্রিয় সব শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নই বৃহস্পতিবার থেকে বিক্ষোভে অংশ নেবে বলে নিশ্চিত করেছে। আন্তঃনগর ও দ্রæতগতির টিজিভি ট্রেনের মধ্যে কেবল ১০ শতাংশ আজ শুক্রবার চালু ধাকবে বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের এসএনসিএফ। মেট্রো চলাচলেও সারাদিন ধরে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করতে পারে বলে যাত্রীদের সতর্ক করেছে প্যারিসের মেট্রো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান আরএটিপি। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররাও এ ধর্মঘটে অংশ নেবেন। এরই মধ্যে এয়ার ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের ৩০ শতাংশ বাতিল করা হয়েছে। ইজিজেটও তাদের ২০০র বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। নার্স, হাসপাতালের কর্মী, আইনজীবী, পুলিশ কর্মকর্তা, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, জ্বালানি খাতের কর্মী ও ডাক বিভাগে কর্মরতরাও এদিনের ধর্মঘটে অংশ নেবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফ্রান্স


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ