নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
নেপাল সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের কারাতে ডিসিপ্লিনে আগেরদিন তিন সোনা জিতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ কারাতে দল। যেখানে দু’টিই আসে মেয়েদের হাত ধরে। যার একটি জিতেছিলেন মারজান আক্তার প্রিয়া। দিনের দ্বিতীয় সোনা জিতে মঙ্গলবার কাঠমান্ডুর সাদ্দোবাদো স্পোর্টস কমপ্লেক্সে লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়েছিলেন তিনি। স্বর্ণপদক গলায় ঝুলিয়ে হেসেছিলেন সাফল্যের হাসি। কিন্তু বুধবার দুপুরে একই মঞ্চে দেশকে নিজের দ্বিতীয় স্বর্ণ উপহার দেওয়ার লড়াইয়ে নেমে অসুস্থ হয়ে পড়েন মারজান আক্তার প্রিয়া। শেষ পর্যন্ত তাকে হাসপাতালেও যেতে হয়েছে।
এদিন গেমসের কারাতে ডিসিপ্লিনের নারী দলগত কুমির সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রিয়ার সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলেন হুমায়রা আক্তার অন্তরা ও মাউনজেরা বর্ণা। প্রতিপক্ষ লঙ্কান খেলোয়াড়ের আঘাতে ম্যাটে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান প্রিয়া। ফলে তার জায়গায় খেলতে নামেন নাঈমা খাতুন। জ্ঞান হারানো প্রিয়াকে প্রথমে নেওয়া হয় ভেন্যু মেডিকেল সেন্টারে। সেখানে জ্ঞান না ফেরায় পরে ভেন্যুর পাশেই অবস্থিত ব্লু ক্রস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় প্রিয়াকে। সেখানে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন এই স্বর্ণকণ্যা। তবে তাকে ছাড়াই সেমিফাইালে শ্রীলঙ্কাকে ২-১ পয়েন্টে হারিয়ে ফাইনালে গেলেও সোনা জয়ের লড়াইয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আর পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। প্রিয়া না থাকায় নিশ্চিত স্বর্ণ হাতছাড়া হওয়ায় রুপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
নারী দলগত কারাতে ইভেন্টের ফাইনালে প্রথমে ম্যাটে নামেন বর্ণা। তিনি চোট পেলেও ৮-৪ পয়েন্টে ম্যাচ জিতে নেন। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নামেন প্রিয়া। তার প্রতিপক্ষ ছিলেন শ্রীলঙ্কার বান্দারা। তিনি প্রথমইে প্রিয়ার পেটে প্রচন্ড শক্তিতে ঘুষি মারেন। ঘুষির তীব্রতায় ম্যাটে লুটিয়ে পড়েন প্রিয়া। চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। খেলা শুরু হতেই বান্দারা প্রিয়ার মুখে পাঞ্চ করলে রক্তাক্ত হন তিনি। তার ঠোঁট কেটে যায়। ফলে আবারও তাকে চিকিৎসা নিতে হয়। ওই সময় বান্দারা এগিয়ে ছিলেন ১-০ পয়েন্টে। এদিকে প্রথম রাউন্ড শেষ হতে সময বাকি ১ মিনিট ৩২ সেকেন্ড। চিকিৎসা নিয়ে ফের ম্যাটে ফিরে আসেন প্রিয়া। এবার কোন বিপত্তি ছাড়াই অনেকক্ষণ লড়ে যান। এরপরই আবারও ঘটে বিপত্তি। বান্দারার একটি আঘাত তার মাথায় লাগে। ম্যাচ শেষ হতে তখনও ৪৭ সেকেন্ড বাকি। প্রিয়া তখন ঠিকমতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না, রীতিমতো টলছিলেন। রেফারির সংকেত পেয়ে মেডিকেল টিম ফের ম্যাটে আসে। তারা প্রিার প্রেসার মাপার পাশাপাশি তার ঠোঁটে আইস ব্যাগ লাগিয়ে পরিচর্যা করেন। কিন্তু তারপরও বাংললাদেশের স্বর্ণকণ্যা উঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না! তাকে মেডিকেল টিম দাঁড়াতে সাহায্য করে। উঠে দাঁড়িয়েই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন প্রিয়া! তখন বাংলাদেশ শিবিরে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। উপস্থিত ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করেও প্রিয়ার জ্ঞান ফেরাতে পারেননি। ফলে তখন জরুরী ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ভেন্যুর লাগোয়া ব্লুক্রস হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে বর্তমানে টিম হোটেলে আছে প্রিয়া। ব্লু ক্রস হাসপাতালের ডাক্তার, নিউরোসার্জন ডা: অভিষেক চতুর্বেদী জানান, ‘প্রিয়া মাথায়, গাল আর ঘাড়ের মাঝামাঝি, পেটে ও ঠোঁটে আঘাত পেয়েছে। তবে এখন সে আশঙ্কামুক্ত।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।