Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নাগরিকত্ব নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে বিজেপি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৯, ৪:২৬ পিএম

ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কখনও বলছেন, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) করলে মানুষের সুবিধা হবে। কখনও আবার বলছেন, এনআরসি কার্যকর করতে গেলে নাগরিকত্বের প্রশ্নে তাকেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে। তার দল বিজেপি বলছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের ঘোষণা মেনে গোটা দেশেই এনআরসি চালু করার পথে এগোনো হবে। মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারের অবস্থানের জেরেই ত্রিপুরায় এখন এনআরসি-প্রশ্নে বিভ্রান্তি প্রবল। আর তার মধ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় পাল্টা চাপ তৈরি করছে বিরোধীরা।

আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করিয়ে তার পরে এনআরসি নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। দলের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে ঘুরে ঘুরে বিজেপি এবং সহযোগী দলগুলির মত যাচাই করছেন। আগরতলায় গিয়েও তিনি বসেছিলেন বিজেপি এবং জোটসঙ্গী আইপিএফটি-র নেতাদের সঙ্গে। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেও নাগরিকত্ব সংশোধনী নিয়ে ক্ষোভের বাতাবরণ তিনি টের পেয়েছেন। একই সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের পরামর্শ, এনআরসি নিয়ে অহেতুক মন্তব্য না করে দলের নেতারা যেন নাগরিকত্বের বিষয়টিই মাথায় রাখেন।

বাংলায় এনআরসি-র বিরোধিতা করে জেলায় জেলায় পথে নেমেছে বামেরা। কিন্তু ত্রিপুরায় তেমন চিত্র এখনও দেখা যাচ্ছে না। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্ব এবং গণ-সংগঠন উপজাতি গণমুক্তি পরিষদের ব্যাখ্যা, আসামের পরে এনআরসি নিয়ে বিপ্লব দেবের সরকার কী করবে, তারই ঠিক নেই! তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের উদ্যোগের বিরুদ্ধেই আগে জনমত গড়ে তোলায় জোর দিচ্ছেন তারা।

সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাশের কথায়, ‘এনআরসি নিয়ে আমাদের অবস্থান তো পরিষ্কার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নানা রকম মন্তব্যে রাজ্য সরকারের অবস্থান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা উত্তর-পূর্বেই নাগরিকত্ব সংশোধনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তীব্র হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে দেশের নাগরিকত্ব স্থির করার প্রস্তাব আমরা মেনে নিচ্ছি না।’

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএবি) বিরোধিতা করছে রাজ্যে জনজাতিদের দুই সংগঠন আইপিএফটি ও আইএনপিটি। আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক মেবার কুমার জামাতিয়া তাদের বিরোধিতার কথা বিজেপি নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। রাম মাধব-সহ বিজেপি নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন, ওই বিল পাশ হলেও জনজাতিদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। তবে সেই আশ্বাসে বিশেষ চিঁড়ে ভেজেনি। বিরোধী দল আইএনপিটি-র সাধারণ সম্পাদক জগদীশ দেববর্মাও জনজাতিদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার অভিযোগে সরব। এ সবের জেরে এনআরসি-র আগে নাগরিকত্ব নিয়েই বিজেপির অস্বস্তি বাড়ছে। পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বলছেন, নিজেদের বাড়ির লোকজনের যাবতীয় তথ্য যেমন কাছে রাখতে হয়, দেশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারও একই চেষ্টা করছে। রাজ্য বিজেপির নেতা রাজীব ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘উত্তর-পূর্বের সব সংগঠনের সঙ্গেই আমরা কথা বলছি। জনজাতি প্রতিনিধিদেরও বলছি, তাদের স্বার্থ মাথায় রাখা হবে।’ সূত্র: এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এনআরসি

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
১৪ জানুয়ারি, ২০২০
২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ