ভারত নিজেকে দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান পরাশক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে। অথচ মানবাধিকারসহ নানা সূচকে অনেক পিছিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনগোষ্ঠীর এই দেশটি। অন্তত সেদেশের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর (এনআরসিবি) এক প্রতিবেদন পিছিয়ে থাকা ভারতকেই পরিচিত করছে বিশ্ব দরবারে। এনআরসিবির প্রতিবেদনটির তথ্য, ২০১৮ সালে ভারতে গড়ে প্রতিদিন ৮০টি খুন এবং ৯১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২৮৯টি।
প্রতিবেদনটির এ তথ্য বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) তুলে ধরেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। যদিও পর্যবেক্ষকদের ভাষ্য, জাতীয় রেকর্ড ব্যুরোর উপস্থাপিত সংখ্যার চেয়ে আরও বেশি খুন-ধর্ষণ ঘটে ভারতে।
এনআরসিবি বলছে, ২০১৮ সালে ভারতে বিভিন্ন অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১ লাখ ৩২ হাজার ৯৫৪টি হয়েছে ফৌজদারি আইনে, আর ১৯ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০টি হয়েছে বিশেষ বা স্থানীয় আইনে। আগের বছর সবমিলিয়ে মামলা প্রায় পৌনে এক লাখ কম ছিল। ২০১৭ সালে মামলা হয়েছিল ৫০ লাখ ৭ হাজার ৪৪টি।
২০১৮ সালে হত্যা মামলা হয় ২৯ হাজার ১৭টি, যা ২০১৭ সালে ছিল ২৮ হাজার ৬৫৩টি। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় হত্যা মামলা বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। খুনের মামলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী ছিল ‘বিরোধ’ (৯ হাজার ৬২৩টি)।
২০১৮ সালে অপহরণের অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয় ১ লাখ ৫ হাজার ৭৩৪টি, যা ২০১৭ সালে ছিল ৯৫ হাজার ৮৯৩টি, তার আগের বছর এ সংখ্যা ছিল ৮৮ হাজার ৮টি। অর্থাৎ ক্রমাগতই বাড়ছে অপহরণের ঘটনা।
২০১৮ সালে নারী নির্যাতন আইনে মামলা হয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭টি, যা ২০১৭ সালে ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৯টি এবং ২০১৬ সালে ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯৫৪টি। অর্থাৎ ক্রমে বাড়ছে নারী নির্যাতনের ঘটনাও।
ভারতে ২০১৮ সালে ধর্ষণ মামলা হয় ৩৩ হাজার ৩৫৬টি। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৫৫৯টি। অর্থাৎ ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রচারণা-আন্দোলন সত্ত্বেও ভারতে এই পাশবিক অপরাধ রোধ করা যাচ্ছে না, বরং বেড়েই চলেছে।
এনসিআরবির তথ্যানুসারে, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে অপরাধ বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। যদিও সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তাল ভারতে অপরাধের হার আরও অনেক বেশি বলে মত মানবাধিকারর্মীদের।