Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সখিপুরের বৃদ্ধা সমেলাসহ ৯ নারীকে খুন করে কুখ্যাত বাবু শেখ

সখিপুর(টাঙ্গাইল)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৯:১৬ পিএম | আপডেট : ৯:১৭ পিএম, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯

টাঙ্গাইলের সখিপুরে বৃদ্ধা সমেলা ভানু (৫৭) হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নওগাঁ জেলার বাসিন্দা বাবু শেখ (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলে গত ২০ নভেম্বর নাটোর আদালতে দেওয়া এক জবানবন্দিতে বাবু শেখ টাঙ্গাইলের সখিপুরের সমেলা হত্যার দায় স্বীকার করে। বাবু শেখের নেতৃত্বে একটি খুনি চক্র টাঙ্গাইলের সখিপুর ও মির্জাপুরে দুজন বৃদ্ধাসহ আরও দুই জেলায় নয়জন নারীকে খুন করে। সিখপুর থানা পুলিশ নাটোর থেকে আসামি বাবু শেখকে তিন দিনের রিমান্ডে এনে বুধবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। বাবু শেখ টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতেও সমেলা ভানুসহ সারা দেশে নয়জন নারীকে খুন করার স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছে। বাবু শেখ ওরফে কালু নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের জাহের আলীর ছেলে। সখিপুর থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) এএইচ এম লুৎফুল কবির বুধবার(২৭নভেম্বর) বিকেলে জানান, গত ৯ জুলাই রাতে উপজেলার হাতীবান্ধা ইউনিয়নের আমড়াতৈল গ্রামের মৃত বাবর আলীর স্ত্রী সমেলা ভানু খুন হন। সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে শ্বাসরোধ করে ওই বৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়। বাবু শেখ ও সহযোগী ডাবু মিলে ওই বৃদ্ধাকে খুন করে একটি স্বর্ণের চেইন ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যায়। ১০ জুলাই সমেলার ছেলে হোসেন আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সখিপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। গত ১১ জুলাই ‘সিঁধকেটে ঘরে ঢুকে বিধবাকে হত্যা’ শিরোনামে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানায়, এর দুই মাস পর ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে মির্জাপুর উপজেলার হরতকীতলা গ্রামের কাঞ্চু খানের স্ত্রী আরেক বৃদ্ধা রুপভানু বেগম (৬০) কেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ওই বাবু শেখ চক্র। সেখান থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মালামাল চুরি করে পালায় তারা। বাবু শেখ পুলিশের কাছে স্বীকার কওে দুই খুনে নওগাঁ এলাকার গোলাম রসুল ওরফে ডাবুকে সে সঙ্গে নিয়েছিল। টাঙ্গাইলের এ দুটি খুনের ঘটনায় ঘরে সিঁধ কেটে ঢোকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক লুৎফুল কবির আরও বলেন, সখিপুরের সমেলা ভানুর গলায় থাকা স্বর্ণের চেইনটি বাবু শেখ গাজীপুর মহানগর এলাকার গাছা থানার স্বর্ণপট্রিতে কামরুল নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে। এ পর্যন্ত আটবার বাবু শেখ কামরুলের নিকট চুরি করা সোনার গহনা বিক্রি করেছে। চুরির মাল ক্রয় করার অপরাধে পুলিশ কামরুলকে গ্রেফতার করে বাবু শেখের সঙ্গে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। গত সোমবার রাতে সখিপুর থানায় বাবু শেখের সঙ্গে এ প্রতিনিধির কথা হয়। বাবু শেখ দাবি করে, রানীনগর থানার এক ইউপি চেয়ারম্যান তাঁকে একটি খুনের মিথ্যা মামলায় আসামি করে। এরপর থেকে নওগাঁ থেকে সে পালিয়ে নাটোর আসে। কাজকর্ম না থাকায় গ্রামে ঘুরে ঘুরে মাছ শিকার ও চুরি করে। চুরি করতে গিয়ে নারী ধর্ষণ ও খুনের নেশায় জড়িয়ে পড়ে সে। বাবু শেখ আরও বলেন, আমি ভুল বুঝতে পেরেছি। আমাকে ভালো হওয়ার সুযোগ দিলে আমি ভালো হয়ে যাবো। সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো.আমির হোসেন বুধবার জানান, বাবু শেখের খুন করাই যেন নেশা। বেশিরভাগ খুনই করেছে রাতের বেলায় ঠান্ডা মাথায়। গত ছয় বছরে সে নয়জন নারীকে খুন করেছে। হত্যা করার আগে ছয়জন নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে সে নাটোর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এদিকে টাঙ্গাইল আদালতেও সমেলা হত্যার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বাবু শেখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ