যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু ও মিজানুর রহমান মিল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য পদে যুক্ত হলেন
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির তিন নেতাকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ প্রাপ্তরা হলেন
শিরকমুক্ত ইমান এবং বিদআতমুক্ত আমলের শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে সমাপ্ত হলো ‘সাইয়্যিদুল মুরসালিন সিরাত সেমিনার’। সুন্নতের অনুসরণকে নবিপ্রেমের প্রথম ও প্রধান মাধ্যম উল্লেখ করে নিউইয়রকের ব্রঙ্কস উলামা সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত সিরাত সেমিনারের আলোচকগণ বলেন, 'জিলাপির ভাঁজে নয়, কথা ও কাজে নবির সুন্নতের প্রতি মুহাব্বাত দেখাতে হবে। নবির প্রতি ভালবাসার প্রদর্শন হতে হবে সাহাবায়ে কেরামের দেখিয়ে দেওয়া তরিকায়। নিজেদের খেয়ালখুশি মতো নয়।
তিন দশক থেকে আমেরিকায় দ্বীনি খিদমাতের সাথে জড়িয়ে থাকা বিশিষ্ট আলেম, বায়তুল আমান জামে মসজিদ ব্রঙ্কস’র ইমাম ও খতিব মাওলানা আজির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সিরাত সেমিনারের সমন্বয়ক মাওলানা হামিদ আশরাফের পরিচালনায় ১৭ নভেম্বর ২০১৯ রবিবার ব্রঙ্কস ইসলামিক সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সিরাত কনফারেন্স ব্রঙ্কসবাসীর মাঝে নতুন এক জাগরণ তৈরি করেছে। দ্বীনের নামে দীনি সুন্নতের ব্যানারে বিদআতের জোয়ারে ভাসতে থাকা নিউইয়র্কের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম অধ্যুষিত এই অঞ্চলের মুসলমানের মাঝে নতুন করে আশার সঞ্চার করেছে। এই অঞ্চলের মুসলমানগণ ভ্রান্তি এবং বিভ্রান্তির ধুম্রজাল থেকে বেরিয়ে আসতে চান। তাঁরা চান এমন প্রোগ্রাম প্রতি মাসে একটি করে আয়োজন হোক। মানুষ বিদআতের অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসুক।
সেমিনারে নবিজীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন মাওলানা এনামুল হক চৌধুরি, মাওলানা রাশেদুল হাসান এবং রশীদ জামীল। সমাপনী বক্তব্য রাখেন মাওলানা আজির উদ্দিন। ব্রঙ্কস’র উলামায়ে কেরামের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হাফিজ মাওলানা মুকাম্মিল, মাওলানা আনাস জামাল উদ্দিন, মাওলানা মনির হোসাইন খান, মাওলানা উবায়েদ আনসারী, মাওলানা মুজিবুর রহমান, হাফিজ তাসলিমুর রহমান, হাফিজ মাওলানা জাহেদুর রহমান, হাফিজ আতিকুর রহমান, মাওলানা আলাউদ্দিন, হাফিজ মাহবুবুর রহমান, মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা শেখ সাজ্জাদ হোসাইন, হাফিজ রুহুল জামীল প্রমুখ।
মাওলানা রাশেদুল হাসান তাঁর আলোচনায় বলেন, ‘হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোটা জীবনটাই উম্মতের জন্য আদর্শ। সাহাবায়ে কেরাম হুজুরের প্রতিটি কথা ও কাজকে আমলে নিতেন। তাঁরা নবিকে নিজের প্রাণের চাইতেও বেশি ভালবাসতেন। বদর ওহুদ খন্দকসহ বিভিন্ন যুদ্ধে নবির দিকে ধেয়ে আসা তীরগুলোকে তাঁরা বুক পেতে নিয়েছেন। নবির জন্য নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন। স্ত্রী সন্তান ছেড়েছেন, বাড়িঘর ছেড়েছেন, এমন কি দেশও ছাড়তে হয়েছে। আমরাও যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের সবকিছুর উপরে নবিকে স্থান দিতে না পারব- ততক্ষণ প্রকৃত মুমিন হতে পারব না’।
মাওলানা এনামুল হক চৌধুরি বলেন, ‘মিলাদুননবি মানে নবির জন্ম। নবির জন্ম সংক্রান্ত আলোচনায় সওয়াব আছে, আমল করার কিছু নেই। নবির সিরাত মানে নবিজির গোটা জীবন। সিরাতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তেইশ বছরের নবুওয়াতকাল, যেখানে রয়েছে উম্মতের জন্য বিধিবিধান’। তিনি বলেন, ‘রবিউল আউয়াল মাস আসলেই মনগড়া তরিকায় রঙ বেরঙ-এর আয়োজন এবং বিদআতি কর্মকা-ের মাধ্যমে মিলাদুননবি পালন করার কোনো সুযোগ ইসলামে নাই। জান্নাতে যাওয়ার একটাই উপায়, শিরকমুক্ত ইমান এবং বিদআতমুক্ত আমল’।
রশীদ জামীল বলেন, ‘বিদআতের সহজ সরল এবং সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা হলো, ‘নবি বা সাহাবিগণ করেননি- এমন কোনো কাজ সওয়াবের নিয়তে করা’। এখন কেউ যদি কোনো কাজ ইবাদত ভেবে করে, আর সেটা নবিজি বা সাহাবা থেকে প্রমাণিত না হয়, তাহলে সেটাই বিদআত। আর বিদআত হলো সরাসরি আল্লাহকে চ্যালেঞ্জ জানানো। আল্লাহপাক বিদায় হজের দিন কোরআনের আয়াত নাজিল করে দ্বীন কমপ্লিট করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন কেউ যদি দ্বীনের মধ্যে নতুন ইবাদত বা সোয়াবের কাজ যুক্ত করে, সেটার একটাই অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহ ভুল বলেছিলেন (নাউজুবিল্লাহ), দ্বীন তখন কমপ্লিট হয়নি। কিছু বিষয় বাকি ছিল- যা এখন করা হচ্ছে’!
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে মাওলানা আজির উদ্দিন বলেন, যারা ঈদে মিলাদুননবি অনুষ্ঠানের নামে বিদআত করে, সেই বিদআতিরা আমাদেরকে বলে ওয়াহাবী। বিদআত করলে মানুষের অন্তর থেকে ইমানের নূর চলে যায়। তখন তারা কী করে আর কী বলে নিজেরাই বুঝতে পারে না। এই যে তারা জাহিলের মতো আমাদেরকে ওয়াহাবি বলে, অথচ তারা তাদের জেহালতের কারণে এটাই জানে না যে, জান্নাতে যেতে হলে ওয়াহাবি হওয়ার বিকল্প নাই। কারণ, ওয়াহাব আল্লাহর নাম। ওয়াহাবি মানে আল্লাহওয়ালা’। তিনি তিরমিজি শরিফ থেকে হাদিস উদ্ধৃত করে বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম নবিজিকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাতেন না। এর কারণ, তাঁরা জানতেন নবিজি তাঁর সম্মানে দাঁড়ানোকে পছন্দ করেন না’।
সেমিনার শেষে ব্রঙ্কস উলামা সোসাইটির পক্ষ থেকে সবাইকে রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়।
প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।