গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান নাঈমের গুলি ফুটিয়ে বিয়ের ফুর্তি করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে নিজের বিয়ের সময় শটগানের গুলি ফুটিয়ে বউ বরণ করেন তিনি। সম্প্রতি ফেইসবুকে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তার তীব্র সমালোচনা করেন নেটিজেনরা। এ নিয়ে বুধবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়। কাউন্সিলরের এহেন কাণ্ডে নানা মন্তব্য করেছেন নানাজন।
জানা যায়, লাইসেন্সকরা কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে নাঈমের। কাউন্সিলর হাবার আগ থেকেই লাইসেন্সকৃত অস্ত্র নেন তিনি। প্রয়োজন ছাড়াই করেন সেই অস্ত্রের ব্যবহার। নিজ এলাকায় বিভিন্ন সময় অপ্রয়োজনে গুলি ফোটান তিনি। এ নিয়ে এলাকার মানুষ সব সময় নাঈমের বিষয়ে আতঙ্কে থাকেন। কয়েক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশকোনাস্থ হাজী ক্যাম্পে গেলে এসএসএফ’র হাতে অস্ত্রসহ আটক হয়েছিলেন নাঈম।
নাঈমকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ফেইসবুকে আব্দুর রাজ্জাক লিখেছেন, ‘‘এটা এক নতুন ইতিহাস। একে যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব আইনের আওতায় আনা হোক। এই পারমিশনকে দিয়েছে তাকেও আইনের আওতায় আনা হোক এবং সঠিক বিচারের দাবি জানাই।’’
খান দিনার লিখেছেন, ‘‘স্ত্রীর সামনে বাহাদুরীর একটা ব্যাপার তো আছেই। তবে এটাও ঠিক এই স্ত্রী নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করছেন এরকম বাহাদুর, পাওয়ারফুল জামাই পেয়ে। আজকালকার মেয়েরা এরকম বাহাদুর জামাই চায়।’’
‘‘অনেক বেশি ফুটানি দেখাচ্ছে। এই কাউন্সিলরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক’’ দাবি জানিয়েছেন মো. হাফিজ।
ফেইসবুকে মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন জুয়েল লিখেছেন, ‘‘এদেরকে বাজারের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পিটানোর দরকার। এরা দেশের কালচার বিকৃত করে গোপাল রাজার গোলাম সাজার চেষ্টা করছে। ক্ষেত মার্কা নং ১।’’
ফারুক ঢালির মন্তব্য, ‘‘ওর দাম্পত্য জীবনে সবসময়ই গুলি ফুটতে থাকবে। কারণ তার নতুন জীবনের শুরুটাই গুলি ফুটানো দিয়ে শুরু।’’
‘‘বিয়ে করে গুলি। তাহলে বাচ্চা হলে বোমা ফাটানোর প্লান আছে মনে হচ্ছে’’ মজা করে লিখেছেন শাকিল আহমেদ।
কাউন্সিলরের সমালোচনা করে সোহেল রানা লিখেছেন, ‘‘এটা আইনের আওতায় আনার দরকার নাই, কারণ উনি তো অনেকদিন থেকে প্লান করেছেন, একটু মজা পাবার আশায়। তবে একটা জিনিস বন্দুক চালানো দেখে বোঝা গেল, অনেক পুরাতন দিনের অভ্যাস। তাই বিয়ের উপলক্ষে আবার একটু হাতটা ঝালাই করে নিলেন ধন্যবাদ।’’
ওমর ফারুক লিখেছেন, ‘‘এদের তো গুলির হিসেব দিতে হয় না।গুলির অভাব নাই।নতুন বিয়ে করেছেন মাত্র। বাসরঘরে যাবে বউকে সন্তান উপহার দিবে সেই সন্তানই হবে আগামীর ফেলু মাস্তান। তা না হলে ধারাবাহিকতা থাকবে কি করে।’’
উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিসুর রহমান নাঈম। তিনি দক্ষিণ খান থানা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও ঢাকা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। বিমানবন্দর মোড়ের মসজিদ কমপ্লেক্স, ফুটপাত, পাবলিক টয়লেট, রাস্তা, সাইনবোর্ড, খাসজমি ও সাধারণ মানুষের জমি দখলসহ রয়েছে বিস্তর অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
লাইন্সেকৃত অস্ত্রের বিধি সম্পর্কে জানা যায়, নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে জান মালের নিরাপত্তানিশ্চিতের জন্য অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়া হয়। একজন ব্যক্তি দুইটি অস্ত্রের বেশি লাইসেন্স পাবেন না।
পুলিশের একজন উর্ধ্বতন কর্মকতা বলেন, লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের অপব্যবহার করলে সেই লাইসেন্স বাতিল করা হয়। যেমন- রাস্তা ঘাটে কুকুরকে গুলি করা, বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠানে গুলি ফুটিয়ে আনন্দ করা, এলাকাতে গুলি ফুটিয়ে খেলার উদ্বোধন ইত্যাদি। তবে পিস্তুল টেস্টিং তথা কার্যকরিতা যাচাই করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর পূর্ব অনুমতি সাপেক্ষে এমনটি করা যেতে পারে।
গুলি ফোটানোর বিষয়ে কাউন্সিলর আনিসুর রহমান নাঈম ইনকিলাবকে বলেন, চার-পাঁচ বছর আগে আমি গুলি ফুটিয়েছিলাম কিনা তা মনে নেই। তবে সে সময় শটগান নতুন নিয়েছিলাম, হয়তো প্র্যাকটিস করেছিলাম। গুলি ফোটানোর পর জিডি করেছিলেন বলে জানান নাঈম।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, বিনা কারণে এভাবে গুলি ফোটানোর নিয়ম নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।