Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ল ইতিহাসের অপেক্ষা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতের মাটি থেকে জয় নিয়ে ফিরতে পেরেছে এখন পর্যন্ত মোটে তিনটি দল। সেই তালিকায় চতুর্থ নামটি হতে পারতো বাংলাদেশের। কেবল তা-ই নয়, ক্রিকেটের সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণে উপমহাদেশের প্রথম দল হিসেবেও ভারতকে তাদের মাটিতেই সিরিজ হারানোর হাতছানিও ছিল মাহমুদউল্লাহদের সামনে। তবে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে বড় হারে সেই অপেক্ষা বাড়ল। গতকাল রাজকোটে সফরকারীরা হেরে গেছে ৮ উইকেটে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৩ রান তোলে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ। জবাবে দুর্দান্ত রোহিত শর্মার অনবদ্য ৮৩ রানে ভর করে ১৫.৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। তিন ম্যাচ সিরিজে এখন ১-১- সমতা।

নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে এবারই প্রথম ভারতে পূর্ণাঙ্গ সফরে গিয়েছে বাংলাদেশ। তবে মাঠের লড়াই শুরু আগে বিপর্যস্ত ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বেতন বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে ক্রিকেটারদের ধর্মঘট এবং দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার আগেই টালমাটাল ছিল দেশের ক্রিকেট অঙ্গন। দিল্লিতে প্রথম ম্যাচে জিতে অবশ্য সেসব প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার ছাপ রেখেছে সাকিব-তামিম ইকবাল-মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনবিহীন বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ক্রিকেটাররা পেয়েছেন আত্মবিশ্বাসের জোগান। নিজেদের সামর্থ্য ও যোগ্যতার ওপর আস্থা রাখার জ্বালানীও পেয়েছেন তারা।

দিল্লিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে জিতে ভারতের বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েই গতকাল রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ম্যাচে নেমেছিল বাংলাদেশ। জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হবে রাসেল ডোমিঙ্গোর শিষ্যদের। তবে সেই আক্ষেপ বাড়িয়ে স্বস্তি ফিরেছে ভারত শিবিরে। এর আগে ঘরের মাঠে মোট ১৩টি টি-টোয়েন্টি সিরিজ (দুই অথবা তিন ম্যাচের) খেলেছে ভারত। এর মাত্র তিনটিতে হেরেছে তারা। ভারত-জয় করা দলগুলো হলো যথাক্রমে- নিউজিল্যান্ড (২০১২ সাল, দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০), দক্ষিণ আফ্রিকা (২০১৫ সাল, তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০)। কিন্তু শেষ ম্যাচটা বৃষ্টিতে প- হয়ে যাওয়ায় সেই জয়কে রেকর্ডের মধ্যে (তিন ম্যাচের সিরিজ হিসেবে) ধরা হয় না। সবশেষ অস্ট্রেলিয়া (২০১৯ সাল, দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০)। ড্র হয়েছে পাঁচটি সিরিজ। বাকি ছয়টিতে জিতেছে ভারতীয়রা।

উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে ভারত সফরে সর্বোচ্চ তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু কোনোবারই সিরিজ বগলদাবা করার স্বাদ পায়নি তারা। ২০০৯ সালে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছিল লঙ্কানরা। এরপর ২০১৬ সালে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল দ্বীপদেশটি। আর ২০১৭ সালে শেষবার ভারতের কাছে ¯্রফে উড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। স্বাগতিকরা তিন ম্যাচের সিরিজ জিতে নিয়েছিল ৩-০ ব্যবধানে। ভারতের মাটিতে এই সংস্করণের সিরিজ পাকিস্তান খেলেছিল একবারই, ২০১২ সালে। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ৫ উইকেটে জেতার পর দ্বিতীয়টিতে ১১ রানে হেরেছিল দলটি। সিরিজ শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়।

টি-টোয়েন্টি সংস্করণের আবির্ভাবের পর ভারতের মাটিতে ভারতকে কোনো দলই তিন ম্যাচের সিরিজে হারাতে পারেনি। রাজকোটে বাংলাদেশ যদি ভারতকে হারাতে পারতো, তাহলে ভারতের বিপক্ষে প্রথম কোনো দল হিসেবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে এগিয়ে যেত অনেকটাই। সে ক্ষেত্রে ১০ নভেম্বর নাগপুরে তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হলেই রেকর্ডটা হয়ে যেত বাংলাদেশের। তবে গতকাল হেরে যাওয়ায় এই রেকর্ড গড়তে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের মতো নাগপুরে চোখ ১৬ কোটি বাংলাদেশিরও।

দলগত রেকর্ডের দিনে ব্যক্তিগত এক অর্জনের হাতছানিও ছিল মাহমুদউল্লাহর। এরই মধ্যে বাংলাদেশ অধিনায়ক অবশ্য ইতিহাস গড়েছেন ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টির জয়ে নেতৃত্ব দিয়ে। গতকাল তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন ব্যক্তিগত আরেক অর্জনের সামনে। দিল্লিতে ছক্কায় ম্যাচ জেতানো অধিনায়ক আর দুটি ছক্কা মারতে পারলেই টি-টোয়েন্টিতে ছক্কার হাফ সেঞ্চুরি হয়ে যেত তাঁর। যে কীর্তি নেই আর অন্য কোনো বাংলাদেশি তারকার। তবে দলের সঙ্গে অপেক্ষা বড়ল তারও।

এখন ইতিহাস গড়ার অপেক্ষার পালা বাংলাদেশের, অপেক্ষা ভারতকে সিরিজ হারিয়ে নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার পাশে নিজেদের নাম লেখানোর।
স্কোর কার্ড
বাংলাদেশ-ভারত, ২য় টি-২০
টস : ভারত, রাজকোট
বাংলাদেশ ইনিংস রান বল ৪ ৬
লিটন রানআউট ২৯ ২১ ৪ ০
নাঈম ক শ্রেয়াষ ব সুন্দর ৩৬ ৩১ ৫ ০
সৌম্য স্ট্যাম্প. ব চাহাল ৩০ ২০ ২ ১
মুশফিক ক পান্ডিয়া ব চাহাল ৪ ৬ ০ ০
মাহমুদউল্লাহ ব দুবে ব চাহার ৩০ ২১ ৪ ০
আফিফ ক রোহিত ব খলিল ৬ ৮ ০ ০
মোসাদ্দেক অপরাজিত ৭ ৯ ০ ০
আমিনুল অপরাজিত ৫ ৫ ১ ০
অতিরিক্ত (বা ২, নো ১, ও ৩) ৬

মোট (৬ উইকেট, ২০ ওভারে) ১৫৩
উইকেট পতন : ১-৬০ (লিটন), ২-৮৩ (নাঈম), ৩-৯৭ (মুশফিক), ৪-১০৩ (সৌম্য), ৫-১২৮ (আফিফ), ৬-১৪২ (মাহমুদউল্লাহ)।
বোলিং : চাহার ৪-০-২৫-১, খলিল ৪-০-৪৪-১, সুন্দর ৪-০-২৫-১, চাহাল ৪-০-২৮-২, দুবে ২-০-১২-০, পান্ডিয়া ২-০-১৭-০।
ভারত ইনিংস রান বল ৪ ৬
রোহিত ক মিঠুন ব আমিনুল ৮৫ ৪৩ ৬ ৬
ধাওয়ান বোল্ড আমিনুল ৩১ ২৭ ৪ ০
রাহুল অপরাজিত ৮ ১১ ০ ০
শ্রেয়াষ অপরাজিত ২৪ ১৩ ৩ ১
অতিরিক্ত (লেবা ১, ও ৫) ৬
মোট (২ উইকেট, ১৫.৪ ওভারে) ১৫৪
উইকেট পতন : ১-১১৮ (ধাওয়ান), ২-১২৫ (রোহিত)।
বোলিং : মুস্তাফিজ ৩.৪-০-৩৫-০, শফিউল ২-০-২৩-০, আলি-আমিন ৪-০-৩২-০, আমিনুল ৪-০-২৯-২, আফিফ ১-০-১৩-০, মোসাদ্দেক ১-০-২১-০।
ফল : বাংলাদেশ ৮ উইকেটে পরাজিত।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রেহিত শর্মা (ভারত)।
সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাড়ল

১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ