Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএনপি ছাড়লেন মাহবুবুর রহমান আরও পদত্যাগের গুঞ্জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৯ এএম

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের পর এবার পদত্যাগ করলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। প্রায় দেড় থেকে দুই মাস আগে নিজের হাতে লেখা পদত্যাগপত্রটি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে দেন সাবেক এই সেনাপ্রধান। এদিকে দল পরিচালনার বর্তমান পদ্ধতি নিয়ে অসন্তুষ্ট থাকায় বিএনপির আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতা দল ছাড়তে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

পদত্যাগ প্রসঙ্গে লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমি রাজনীতি থেকে সরে এসেছি। আমি রিজাইন করেছি দল থেকে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও প্রাথমিক সদস্যপদ প্রত্যাহার করে নিয়েছি দেড় থেকে দুই মাস আগে। পদত্যাগের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি বয়ষ্ক মানুষ। সামনের ডিসেম্বরে ৮০ বছর পূর্ণ হবে। রাজনীতিতে কনট্রিবিউট করার মতো আমার আর কিছু নেই। তিনি আরও বলেন, তার এখন বয়স হয়েছে। একটা সময় তো অবসরে যেতে হয়। তার জন্য তিনি রাজনীতিকে গুডবাই জানিয়েছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।

অবশ্য মাহবুবুর রহমান পদত্যাগের বিষয়টি স্বীকার করার এক ঘণ্টা পর আবার ফোন দিলে তা রিসিভ করেন তার স্ত্রী নাগিনা মাহবুব। তিনি তখন বলেন, মাহবুবুর রহমান অসুস্থ। এজন্য দীর্ঘদিন থেকে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে নেই। দলীয় কোনো কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তবে তার পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়। এদিকে মাহবুবুর রহমান পদত্যাগের কারণ হিসেবে বয়সের কথা বললেও এর নেপথ্যে অন্য কারণ রয়েছে বলে জানা গেছে। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর দল যেভাবে পরিচালিত হচ্ছিল তার সাথে একমত ছিলেন না তিনি। বিএনপির জোটের রাজনীতিরও সমালোচক মাহবুব। তিনি জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট মেনে নিতে পারছিলেন না। এসব কারণে গত কয়েক মাস ধরে তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় নিয়মিত ছিলেন না। এরই ধারবাহিকতায় দল ছাড়েন মাহবুবুর রহমান। সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন মাহবুবুর রহমান। ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে অবশ্য পরাজিত হন তিনি। বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি মাহবুবুর রহমান।

বিগত কয়েক বছরে বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১৫ সালের অক্টোবরে বিএনপি ছাড়েন দলের তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। পরের বছর ২০১৬ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন বর্তমান নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু। আর মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগে যোগদান করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী। চলতি বছরের ৭ জুলাই তাকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হয়েছে। আর একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়ার বঞ্ছনা, ক্ষোভ ও অভিমানে গত মঙ্গলবার ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপরই মাহবুবুর রহমানের পদত্যাগের খবরটি এলো। মাহবুবুর রহমানের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের কেউ প্রথমবারের মতো দল ছাড়লেন।

এদিকে দলের ভেতরে আলোচনা আছে- খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বর্তমানে যেভাবে দল পরিচালিত হচ্ছে, যেভাবে সিনিয়রদের বিভিন্নভাবে অবজ্ঞা করা হচ্ছেÑ তাতে অনেকেই এখন রাজনীতি করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তারা অনেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তির অপেক্ষায় আছেন। এ অবস্থায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, শাহজাহান ওমরসহ আরও কয়েকজন নেতা দল ছাড়তে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে দলের কোনো দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এ বিষয়টি অবশ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি।###

 

 

 

 



 

Show all comments
  • Shahriar Alom ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৯ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ্
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Feroz Uddin ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 0
    ইনি ওয়ান ইলেভেনের সময় ভুয়া এক বিএনপির জম্মদাতা। ওনার বিদায়ে বিএনপি সস্তির আবহ বিরাজ করছে
    Total Reply(0) Reply
  • Bashir Mahmudi ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 0
    বুড়োদের আর কি চাই। সব কিছু করেছেন। চাকরি, বেবসা, রাজনীতি, এম পি, মন্ত্রী আর কি? এখন অবসরের সময়। সবাই কে মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে। তৈরী হোন না ফেরার দেশের জন্য। আর নুতন প্রজন্ম কে সুযোগ করে দেন। দেশকে নেতৃত্ব শূন্যতা থেকে বাচান। সুন্দর বাংলাদেশ দেখে বিদায় নিতে পারলে শান্তি পাবেন। চোখের সামনে বিদায়ের মিছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • Ali Akbar ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 1
    উনাদের কি কোন সময় জনপ্রিয়তা ছিল । বরং উনাদের খালেদা জিয়া বড় বড় পদ দিয়ে সম্মান দিয়েছিল । তারা কি দলের জন্য কোন ভূমিকা রেখেছে নাকি নিজেদের কিছু একটা ভাবতেন ।তারা হল ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিশিরাম সর্দার ..
    Total Reply(0) Reply
  • Md Mofazzal Khan ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০০ এএম says : 1
    অযোগ্যদের দরকার নাই, দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভাল।
    Total Reply(0) Reply
  • Delwar Hussain Dipu ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 1
    আলহামদুলিল্লাহ, আশাকরি নতুন দিনের যাত্রা নতুনদের দিয়েই শুরু হবে, তবে পদত্যাগীদের সম্মান দিয়েই বলছি, আপনারা সুবিধাবাদী, এবং অবশ্যই অচল মাল।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ রুবেল ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 1
    বয়স্কদেরকে অবসরে গিয়ে তরুনদের সুযোগ করে দেওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়
    Total Reply(0) Reply
  • ahammad ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ২:০১ এএম says : 0
    গত প্রায় কুড়ি দেশনেএী কারাগারে। এই কুড়ি মাষের মধ্যে দলের নিতীনির্ধারক পয্যায়ে থেকে কোন ভূমিকা পালন করেন নাই। তারা পদধরে রেখে লাভকি ?তারা হচ্ছ সুসময়ের পাখি,সুবিধারা জায়গা খালী করলে ত্যাগীরা পদপাবে। দলের জন্য তাহারা আশা করি সঠিক ভূমিকা পালন করবে।
    Total Reply(0) Reply
  • রফিকুল ইসলাম ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ৮:১৮ এএম says : 1
    যারা দলের জন্য কাজ করেনা, সরকারের দোসর তাদের চলে যাওয়াই ভাল।
    Total Reply(0) Reply
  • রফিকুল ইসলাম ৮ নভেম্বর, ২০১৯, ৮:১৮ এএম says : 1
    যারা দলের জন্য কাজ করেনা, সরকারের দোসর তাদের চলে যাওয়াই ভাল।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ