যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
রাতে বেশি দেরি করে খেলে শুধু ওজনই বাড়ে না । একইসঙ্গে ডায়াবেটিস ও হার্ট অ্যাটাকের ঝঁকিও বেড়ে যায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির পেরেলমান স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা দেখেছেন, রাতে দেরিতে খাওয়ার কারণে গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়, এ দুটোই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। তারা দেখেছেন, অসময়ে খাবার গ্রহণ কোলেস্টরালের মাত্রায়ও প্রভাব ফেলে, যা হার্ট অ্যাটাকের জন্য ঝুঁকি বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে কখনও কখনও হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।
নয়জন প্রাপ্তবয়স্ক সঠিক ওজনের মানুষের ওপর গবেষণা করে গবেষকরা এ তথ্য দিয়েছেন। অংশগ্রহনকারীদের আট সপ্তাহ ধরে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে তিনবেলা খাবার এবং দু‘বেলা পানীয় খাবারের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। একই ভাবে পরের আট সপ্তাহেও তাদের দুপুর এবং রাতে ১১টার মধ্যে খাবারের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তবে উভয় সপ্তাহে গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের রাত ১১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘুমাতে বলেছিলেন।
নির্দিষ্ট সময় পর গবেষকরা দেখতে পান, যে-সব অংশগ্রহণকারী বেশি রাত করে খাবার খেয়েছেন তাদের ওজন শুধু বাড়েনি একই সঙ্গে তাদের ইনসুলিন, গ্লুকোজ এবং কোলেস্টরালের মাত্রাও বেড়ে গিয়েছিল।
গবেষকরা আরও দেখেছেন, প্রথম আট সপ্তাহে দিনের বেলা খাবারে অংশগ্রহণকারীদের শরীরে এমন একটি হর্মোন তৈরি হয়েছিল, যেটি তাদের ক্ষুধা দূর করে দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করেছিল। গকেষকদের প্রধান নামনি গোয়েল বলেন, সকালবেলা খাবার খাওয়া ও ঘুম নিয়ন্ত্রণের অনেক সুবিধা আছে। অন্যদিকে, দেরিতে খেলে তা ওজনের প্রভাব ফেলে। একই সঙ্গে শরীরে গ্লুকোজও বেড়ে যায়, যা ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। আবার, কোলেস্টরাল এবং ট্্ারইগ্লিসারিড বেড়ে গেলে হৃদযন্ত্রের সমস্যা ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।
এক্ষেত্রে রাতে দেরিতে খাওয়া এড়াতে গবেষকদের পাঁচটি কারণের কথা তুলে ধরা হলো-
মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে- গবেষকদের মতে, রাতে দেরিতে খাবার খেলে মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, অসময়ে খাবার খেলে তা মস্তিষ্কের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। ইদুরের উপর গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা এর প্রমাণ পান।
দুঃস্বপ্ন দেখা- ২০১৫ সালের এক গবেষণায় কানাডার মনস্তাস্তিকরা দেখেছেন, মানুষের খাদ্যভ্যাস তার ঘুমানোর ধরন ও স্বপ্ন নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ গবেষণায় কমপক্ষে ৪০০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের খাবার, ঘুমানো ও স্বপ্নের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে বলা হয়। এতে গবেষকরা দেখেছেন, যারা দেরি করে খাবার খেয়েছেন তারা দুঃস্বপ্ন বেশি দেখেছেন।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়- গবেষকরা দেখেছেন, রাত ৭টার পর রাতের খাবার খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তুরস্কের ডকুস আইলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৭০০ উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গবেষণার গবেষকরা দেখেন, যারা রাতে দেরি করে খাবার খেয়েছেন, তাদের উচ্চ রক্তচাপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে।
গ্যাসের সমস্যা বাড়ায়- গবেষকরা বলেন রাতে দেরি করে ভারি খাবার খেয়ে ঘুমাতে গেলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যায়। কারণ, পেট খাবার হজম করার জন্য যথেষ্ট সময় পায় না। এতে ভাল ঘুমও হয় না।
ক্ষুধা বাডায়- রাতের খাবার দেরিতে খেলে পরের দিন স্বাভাবিকভাবেই বেশি ক্ষুধা অনুভূত হয়। এর অন্যতম কারণ হলো শরীরের গ্লুকোজ প্রেলিন নামে এমন এক ধরনের হর্মোন সৃষ্টি করে , যা ক্ষুধা বাড়ায় এর ফলে ওজন বাড়ে।
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।