Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতীয় মস্তিষ্ক আকারে ছোট: গবেষণা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৯, ৭:২৫ পিএম

বিশ্বে এই প্রথম ভারতীয় মস্তিষ্কের জন্য আলাদা করে তৈরি করা হচ্ছে ব্রেন অ্যাটলাস বা মস্তিষ্ক-মানচিত্র। হায়দরাবাদের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (ট্রিপল আইটি – এইচ) গবেষকদের হাতে কাজ চলছে এই মানচিত্রের।

কিন্তু কী এই ব্রেন অ্যাটলাস?

মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ নির্ণয় করার ক্ষেত্রে কাজে লাগে এই মানচিত্র। মস্তিষ্কের স্ক্যান বা এমআরআই রিপোর্ট খতিয়ে দেখতে এই ব্রেন অ্যাটলাস টেমপ্লেট অনুসরণ করা হয়।

ট্রিপল আইটি-এইচ-এর অন্তর্গত সেন্টার ফর ভিস্যুয়াল ইনফরমেশন টেকনোলজির গবেষক জয়ন্তী শিবস্বামী জানালেন এই নতুন মডেল তৈরির প্রয়োজনীয়তা। তাঁর কথায়, “এতদিন যাবৎ মন্ট্রিয়েল নিউরোলজিকাল ইনস্টিটিউটের (এমএনআই) তৈরি ব্রেন অ্যাটলাসটিকেই টেমপ্লেট হিসেবে ব্যবহার করা হত। কিন্তু ওই টেমপ্লেট বানানো হয়েছিল ককেশীয় মস্তিষ্ককে নির্ণায়ক হিসেবে ধরে। এ দিকে, ককেশীয় মস্তিষ্কের সঙ্গে ভারতীয় মস্তিষ্কের গঠনগত সাদৃশ্য খুবই কম। ভারতীয় মস্তিষ্ক ককেশীয় মস্তিষ্কের তুলনায় আকারে অনেকটাই ছোট। ফলে এমএনআই-এর মডেল অনুসরণ করলে ভারতীয়দের মস্তিষ্কের স্ক্যান বা অন্যান্য রিপোর্ট দেখে ম্যাপিংয়ের ক্ষেত্রে ভুলের আশঙ্কা থেকে যায়। তাই এ কথা গবেষণাতেই স্পষ্ট যে ভারতীয় মস্তিষ্কের জন্য একটি পৃথক ব্রেন অ্যাটলাসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এতে মস্তিষ্কের বহু রোগ অনেক দ্রুত নির্ণয় করা যাবে।“

জয়ন্তী আরও জানান, চিন এবং কোরিয়ার ক্ষেত্রে পৃথক ব্রেন অ্যাটলাস আগেই তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের বিপুল জনসংখ্যার জন্য কোনও পৃথক নির্ণায়ক এতদিন ছিল না। ট্রিপল আইটি-এইচ প্রথম এই গবেষণার জন্য একটি দল গঠন করে। তাঁরা প্রাথমিক ভাবে নারী পুরুষ নির্বিশেষে পঞ্চাশ জনকে বেছে নেন যাঁদের মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে কাজ করা শুরু হয়। দেশের তিনটি হাসপাতালের আলাদা আলাদা স্ক্যান যন্ত্রে এঁদের মস্তিষ্কের স্ক্যান রিপোর্ট তৈরি করা হয় যাতে ভিন্নতার পরিমাণ কমিয়ে আনা যায়।

“এই পাইলট স্টাডির রিপোর্ট আমাদের হাত অনেকটাই শক্ত করে। ফলে দ্বিতীয় ধাপে বেছে নেওয়া হয় আরও ১০০ জনকে। এঁদের আইবিএ ১০০ নামে চিহ্নিত করা হয়। এঁদের মস্তিষ্কের ম্যাপিংয়ের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে নয়া ব্রেন অ্যাটলাস। অন্যান্য জনজাতির ব্রেন অ্যাটলাসের সঙ্গে একটি তুলনামূলক সমীক্ষাও পাশাপাশি চালানো হচ্ছে কারণ ভারতীয় মস্তিষ্কের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, এমনকী হিপ্পোক্যাম্পাসের আয়তন পর্যন্ত একেবারে স্বতন্ত্র। ফলে ককেশীয় মস্তিষ্কের তুলনায় চিনা ও কোরিওয়ান মস্তিষ্কের সঙ্গেই আইবিএ ১০০-র বেশি সাদৃশ্য পাওয়া যাচ্ছে।“ বললেন জয়ন্তী। বর্তমানে এই ব্রেন অ্যাটলাস তৈরির পাশাপাশিই গবেষণা চলছে ভারতীয় মস্তিষ্কের বার্ধক্যজনিত লক্ষণগুলি নিয়ে। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের গঠনে ক্রমশ তারতম্য দেখা যায়। মস্তিষ্কের কোষের পচন (এট্রফি),ক্রম-সংকোচন হতে শুরু করে। তার জেরেই ডিমেনশিয়া, এলঝাইমার্সের মতো রোগ দেখা দেয়। এই নতুন ব্রেন অ্যাটলাস এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে অনেকটাই সাহায্য করবে বলে মত গবেষকদের।

সূত্র : বালালাইভ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গবেষণা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ