Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যেখানে ৮ মাসে বছর

ইমাম হোসেন, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০১৯, ১:৪৮ এএম

নৌকা তৈরি করেই জীবিকা নির্বাহ তাদের। কখনো নতুন কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি অথবা নৌকা মেরামত করাই তাদের জীবন জীবিকার প্রধান উৎস। বছরের ৮ মাস পুরোদমে কাজ চললেও বাকী চার মাস কাজ কম থাকে। তাতেও কোন দুঃখ নেই তাদের। ৮ মাসের আয় রোজগার দিয়ে চালিয়ে নেন বেকার সময়গুলো। নৌকাতেই যেন তাদের জীবন জীবিকা। হরিলাল জলদাস, শ্রী চরণ দাস, সুমন চন্দ্র জলদাস, বাসু জলদাস, ননাই জলদাস সহ অন্তত ৬ জন মীরসরাই উপজেলার সাহেরখালী উপকূলীয় অঞ্চলে নৌকার কারিগর হিসেবে কাজ করেন।
সরেজমিন সাহেরখালী স্লুইচ গেইট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন স্থানে এক একজন কারিগর তাদের সহযোগীদের নিয়ে নৌকা তৈরীর কাজে ব্যস্ত। পঞ্চাশোর্ধ হরিলাল জলদাস জানান, প্রায় এক যুগ যাবৎ তিনি নৌকা তৈরী ও মেরামতের সাথে জড়িত। ছোট একটি নৌকা তৈরী করতে তিনি ৫ হাজার টাকা মজুরী নেন। ছোট সাইজের একটি নৌকা তৈরী করতে তার সময় লাগে ৬-৮ দিন। প্রতিমাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয় তার।

হরিলাল জলদাস জানান, সমুদ্র থেকে মাছ ধরার জন্য এক সময় স্থানীয় ভাবে তৈরী মেহগনী গাছের তৈরী নৌকা ব্যবহার হতো। এখন স্ক্রাপ জাহাজ থেকে আনীত গাম বোটের কারনে স্থানীয় ভাবে তৈরী নৌকার চাহিদা কমে যাচ্ছে।

আরেক নৌকার কারিগর ননাই জলদাস বলেন, ৫০ ফুট সাইজের একটি নতুন নৌকা তৈরী করতে তিনি ১৫ হাজার টাকা মজুরী নিচ্ছেন। মেহগনী গাছ দিয়ে নৌকাটি তৈরী করতে মোট খরচ হবে ৮০ হাজার টাকা। তাদের তৈরীকৃত নৌকা সাহেরখালী এবং ডোমখালী স্লুইচ গেইট দিয়ে সাগর থেকে মাছ আহরনের কাজে ব্যবহৃত হয়। আবার কোম্পানীগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও নৌকার অর্ডার পান তারা।
সুমন চন্দ্র জলদাস জানান, গাম বোটের কারনে স্থানীয় ভাবে তৈরী নৌকার চাহিদা কমে যাচ্ছে। তাদের পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো তারা নৌকা তৈরীর কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, প্রচার এবং পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মীরসরাইয়ের উপকূলীয় এলাকা সাহেরখালীতে নৌকা তৈরীর এই শিল্পের সুনাম দেশে ছড়িয়ে যাবে।

বাসু জলদাস জানান, আমরা নদী থেকে মাছ আহরনের জন্য মেহগনী গাছের তৈরী নৌকা ব্যবহার করি। এসব নৌকা অনেক টেকসই। সরকার যদি নৌকার কাগিরদের ঋন সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে সহযোগীতা দিয়ে থাকে তাহলে নৌকার কারিগররা আরো তাদের কাজে আরো স্বাচ্ছন্দ পাবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বছর

৫ ডিসেম্বর, ২০২২
২৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ