মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নিরাপত্তা বাহিনীর নিপীড়নের মুখেও মিয়ানমারে থেকে যাওয়া প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা গণহত্যার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রধান মারজুক দারুসম্যান। তিনি বলেছেন, অব্যাহত বৈষম্য ও বিচ্ছিন্নকরণ প্রক্রিয়া, চলাচলের নিষেধাজ্ঞা, নিরাপত্তাহীনতা এবং ভূমি, চাকরি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার অভাবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে দারুসম্যান এ সব কথা জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যা অব্যাহত রাখতে রাষ্ট্রের ইচ্ছার শক্তিশালী আলামত পাওয়া যাচ্ছে। আবারো গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকিতে রয়েছে রাখাইন। আন্তর্জাতিক সনদের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী গণহত্যা প্রতিরোধ, তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে কার্যকর আইন প্রণয়নে মিয়ানমার ব্যর্থ হচ্ছে। খবরে বলা হয়, এ বছর সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা তাদের অনুসন্ধান শেষে জানিয়েছিলেন, এখনও রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা গণহত্যার ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযানে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের দায়ে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাংসহ দেশটির শীর্ষ জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করেছিলেন তারা। এক মাস পরে এসে ওই তদন্তকারীরা বলছেন, সেখানকার পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। মিয়ানমারের সেনা-প্রতিষ্ঠান ও এর কমান্ডারদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তাই অপরিহার্য। পরিস্থিতির উন্নয়নে মিশনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানানো হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দলের সবশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, রাখাইনে এখনও ছয় লাখ রোহিঙ্গা থেকে গেছে। তারা শোচনীয় পরিস্থিতিতে বসবাস করছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও অন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের হাতে হত্যা, ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, নির্যাতন, বাস্তুচ্যুতি ও অন্যান্য মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য যেসব অনুষঙ্গ কাজ করেছিল সেগুলো বহাল থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে নিধনযজ্ঞের দায়ে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) প্রেরণ বা যুগোসøাভিয়া ও রুয়ান্ডার মতো ট্রাইব্যুনাল গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। বিভিন্ন দেশের সরকার ও কোম্পানিগুলোকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক সীমিত করার আহ্বান জানানো হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে। বুধবার মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধে ইয়াংঘি লি জানিয়েছেন, এখনও পরিস্থিতির কোনও বদল ঘটেনি। বরং গতমাসে রাখাইন ত্যাগ করার কারণে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অজুহাতে মামলা করা হয়েছে। লি বলেন, ‘অন্তত আট শিশুকে আটককেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে যার মধ্যে একজনের বয়স মাত্র পাঁচ বছর। দেশের গণতান্ত্রিক পরিসরকে সংকুচিত করার স্বার্থে ব্যবহৃত নিপীড়নমূলক আইনগুলো সংশোধন করার বদলে মিয়ানমার সরকার সমালোচকদের বিরুদ্ধে এগুলো ব্যবহার করছে। বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লি আরও বলেন, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরোধিতা করছেন সেসব আন্দোলনকারী, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিকদের শাস্তি দিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আর এতে গণতন্ত্র বিনষ্ট হচ্ছে। [সে কারণে] মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও এর কমান্ডারদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অপরিহার্য। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সহিংসতা কবলিত রাখাইনের পরিস্থিতি অনুসন্ধানে ওই বছরের মার্চে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। তাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়ানমারে এখনও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা থেকে গেছে, যাদের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে লি বলেন, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পুরো পরিস্থিতি বিবেচনা করে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তোলার আহ্বান জানিয়েছে। এই পরিস্থিতির অবসান প্রয়োজন। তাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। মঙ্গলবার মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার শক্ত আলামাত পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। সে অনুযায়ী গণহত্যার ব্যাপারে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। জাতিসংঘের মিশনের হিসেব অনুযায়ী, রাখাইনে ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত রয়েছে। লি মনে করছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রাখাইনে নিরাপদভাবে ফিরে আসতে পারবে না। এখনও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এএফপি, রয়টার্স, এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।