বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মদদদাতা শিবির বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের কাউন্সিল কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। এই সময় তিনি বলেন, ‘গতকাল মশাল মিছিল চলাকালীন সময়ে আমরা সাদ শরীফ নামের যাকে আটক করেছি তার মোবাইল থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে প্রমাণিত হয়। ভিসির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে তার পিছনে মদদ দিচ্ছে শিবির।’
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে গড়ে উঠা আন্দোলন শুধুমাত্র জাহাঙ্গীরনগরকে অস্থিতিশীল করে তোলা নয়, দেশকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমরা তার স্বরূপ উন্মোচিত করেছি।’
তিনি বলেন, গতকালকের মশাল মিছিলে যোগ দিতে এসে শিবির নেতা ধরা পড়ায় ভিসি বিরোধী ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে যায়।’
এই সময় তিনি আরোও বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা দিনের বেলার কর্মসূচী পালন করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম হলেও রাতের কর্মসূচীতে অংশগ্রহণের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আন্দোলনকারীরা এই কাজে শিবির ও বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে জমায়েত করেন যা শিবির নেতা আটকের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো।’
এদিকে ভিসির অপসারণের দাবিতে গতকাল সন্ধায় মশাল মিছিল করে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মশাল মিছিল চলকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী এলাকা থেকে সাবেক শিক্ষার্থী সাদ শরীফ ও নূরুল আমিনকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের জানান, ‘গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে প্রক্টরিয়াল টিম তাদের আটক করেছে।’
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের পুলিশে সোপর্দ করে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাদ শরীফের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে। আটক হওয়া আরেক সাবেক শিক্ষার্থীর নূরুল আমিনের সাথে শিবির সংশ্লিষ্টতার কোন প্রমাণ না পাওয়ায় এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন কিছুই করা হয়নি।
এই বিষয়ে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক তসলিম উদ্দিন জানান, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪১তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী সাদ শরীফকে আসামি করে বুধাবার দুপুরে এ মামলা করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘সাদ শরীফের ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়টসঅ্যাপ, টেরিগ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর ও ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে এতে নূরুলের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাই তার বিষয়ে এখনো কোন সিন্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
মামলার বাদী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন জানান, ‘কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তিনি মামলাটি দায়ের করেছেন।’
সাদ শরীফের মোবাইল থেকে কি ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে জানতে চাইলে তা বলতে রাজি হননি আশুলিয়া থানার পরিদর্শক তসলিম উদ্দিন। তবে সংবাদ সম্মেলনে সাদ শরীফের সঙ্গে কথাবর্তার কয়েকটি ফোনকলের রেকর্ড শুনান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যেসব ফোন কল থেকে শুনা যায় চলমান আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দেন সাদ শরীফ। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিস্থিতি তাকে জানান অপরপ্রান্ত থেকে। এসব বিষয় নিয়ে তদন্ত হচ্ছে জানিয়ে প্রক্টর বলেন, ‘তদন্ত শেষে জানা যাবে কাদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। তারপর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।