বাংলাদেশে খাদ্যে দুর্ভিক্ষ হবে না
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশে যথেষ্ট খাদ্য মজুদ রয়েছে, আজকে যে বৃষ্টি হচ্ছে এই বৃষ্টির কারণেই বাংলাদেশে সোনালী
পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের নকশা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে আরও জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সমস্যা রয়েছে ভূগর্ভস্থ পরিষেবা স্থানান্তর নিয়েও। সব মিলে মূল সেতুর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ। এতে করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন থেকে ট্রেন চলবে কি-না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েই গেছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্য ছিল মোট কাজের ১১ শতাংশ। এর বিপরীতে কাজ হয়েছে ১ দশমিক ৯২ শতাংশ। চলতি অর্থবছর (২০১৯-২০) মোট কাজের ১৫ শতাংশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছে। প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) দশমিক ২২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছে রেলওয়ে। আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ১৭ দশমিক ১৫ শতাংশ।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার ওপর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে দেশের দীর্ঘতম পদ্মা বহুমুখী সেতু। সরকারের সেতু বিভাগ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। মোটরযান ও ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকার সঙ্গে দশের দক্ষিণাঞ্চলের সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২১ সালের জুনে চালু হবে পদ্মা সেতু। অন্যদিকে রেল সংযোগ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ শুরুর এক বছর পার হতে চলেছে। অথচ বিভিন্ন সমস্যায় প্রকল্পের কাজে কাঙ্খিত গতি আসছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ স্থাপনের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে নকশা জটিলতা। সেতুর সঙ্গে রেলপথের সংযোগ ঘটানোর জন্য সেতুর দুই পাড়ে নির্মাণ করতে হবে দীর্ঘ ভায়াডাক্ট (উড়ালপথ)। এ ভায়াডাক্টের পাইল নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ১৫টি ট্রায়াল পাইল করা হয়েছে, যার মধ্যে সন্তোষজনক ছিল মাত্র চারটি।
উড়ালপথটি নির্মাণ করা হবে পিয়ারের ওপর। এই পিয়ারগুলোকে শক্ত কাঠামো দেবে একাধিক পাইল। মূল সেতুর প্রতিটি পিয়ারে ছয়-সাতটি করে পাইল করা হয়েছে। প্রতিটি পাইল নদীর তলদেশে ৩০-৫০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত স্থাপন করা হয়েছে। উড়ালপথের ভায়াডাক্টের জন্যও কমবেশি একই গভীরতায় পিয়ারের পাইল করতে হবে। তবে নদীর তলদেশের মাটির গঠনে ভিন্নতা থাকায় এখনো সেগুলোর নকশা চূড়ান্ত হয়নি।
প্রকল্প সূত্র জানায়, বর্তমানে এ সমস্যাটি সমাধানের জন্য প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞরাও কাজ করছেন। ২ ও ৩ নম্বর ভায়াডাক্টে পাইলের সমস্যা সমাধানের জন্য ইতালির প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান এইকমেরও (এআইসিওএম) শরণাপন্ন হয়েছে রেলওয়ে। প্রতিষ্ঠানটি পদ্মা সেতুর নকশা তৈরি করে দিয়েছিল। রেলওয়ে ভায়াডাক্টের জন্য এইকম পাইলের গভীরতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প কর্মকর্তারা।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগের নির্মাণকাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)। রেলপথটি নির্মাণে তারা যে নকশা তৈরি করেছে, তাতে নতুন করে প্রায় ৩০০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। নতুন করে জমি অধিগ্রহণের জন্য পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন প্রক্রিয়া প্রকল্প বাস্তবায়নকে দীর্ঘায়িত করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আপাতত প্রকল্পের ‘প্রাইস কন্টিনজেন্সি’ খাত থেকে নির্বাহের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫ শতাংশের মধ্যেই নতুন করে জমি অধিগ্রহণে ব্যয় করা হবে। প্রকল্পটিতে বর্তমানে ব্যয় হচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর ৫ শতাংশ হলে নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য দরকার হবে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এ টাকা পরবর্তী সময়ে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশোধন করে সমন্বয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
পর্যাপ্ত জমির অভাবে অভ্যন্তরীণ পরিষেবা স্থানান্তরের কাজ বিঘিœত হচ্ছে বলে জানা গেছে। রেলপথটির ঢাকা-পাগলা অংশে বেশকিছু ডাম্পিং এলাকা রয়েছে, যেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থানান্তর প্রয়োজন। পাশাপাশি আরো কয়েকটি স্থানে পরিষেবা স্থানান্তরের কাজ থমকে আছে প্রয়োজনীয় জমির অভাবে।
নকশা জটিলতার বিষয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ভায়াডাক্টের নকশা নিয়ে কাজ চলছে। এটি চূড়ান্ত করতে খুব বেশিদিন লাগবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।